হনুমান জয়ন্তী - ১ ম পর্ব

in Incredible India4 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে কিছু কথা।

20250412_204048.jpg

হনুমান কে ছিলেন

প্রথমেই বলি হনুমান কে ছিলেন। হিন্দু ধর্মে হনুমান ছিলেন রামের পরম ভক্ত । রামায়ণে হনুমানের এক বিশাল বড় অবদান আমরা দেখতে পাই। তিনি পবন পুত্র অর্থাৎ বায়ু দেবতার পুত্র। তবে বায়ুদেবতা তার আধ্যাত্মিক পিতা। তার মা বাবা হলেন কেশরী আর অঞ্জনা। অঞ্জনার পুত্র তাই তাকে অঞ্জনেয় বলা হয়ে থাকে।

হনুমান নিয়ে আমরা ছোটবেলা থেকে অনেক গল্প শুনেছি। হনুমানকে আমরা মরুতি নামেও চিনে থাকি। মরুত শব্দের অর্থ হলো বায়ু বা পবন, যেহেতু হনুমান আধ্যাত্মিকমতে বায়ু দেবতার পুত্র ,তাই তাকে মরুতি বলা হয়।
আমরা বলি বজরংবলী, অর্থাৎ যে বজ্রের মতো কঠিন। হনুমান হিন্দু ধর্মে শক্তি ,সাহস এর দেবতা হিসেবে পূজিত হয়ে থাকেন। তার নাম গানে মানুষ সকল বিপদ, সংকট এবং ভয় থেকে রক্ষা পায়। তাই আমরা তাকে সংকটমোচন হিসাবেও জেনে থাকি। এছাড়াও তার আরো অনেক নাম আছে যেমন মহাবীর, মহাবলী।

হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় হনুমান চল্লিশা পড়লে ব্যক্তির সকল সংকট কেটে যায়। রামচরিতমানস এর রচয়িতা তুলসী দাস হনুমানকে নিবেদন করে ৪০ টি শ্লোক লিখেছিলেন যা আজ হনুমান চল্লিশা নামে পরিচিত । আমি হনুমান চল্লিশার প্রথম পাঁচটি শ্লোক এখানে তুলে ধরলাম।

জয় হনুমান জ্ঞান গুণ সাগর ।
জয় কপীশ তিহু লোক উজাগর ॥ 1 ॥
রামদূত অতুলিত বলধামা ।
অংজনি পুত্র পবনসুত নামা ॥ 2 ॥
মহাবীর বিক্রম বজরংগী ।
কুমতি নিবার সুমতি কে সংগী ॥3 ॥
কংচন বরণ বিরাজ সুবেশা ।
কানন কুংডল কুংচিত কেশা ॥ 4 ॥
হাথবজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ ।
কাংথে মূংজ জনেবূ সাজৈ ॥ 5॥

সম্পূর্ণ হনুমান চল্লিশা

20250412_192007.jpg

মুহূর্ত

এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার হনুমান জয়ন্তী ছিল। আমি সকালবেলায় টোটো করে যখন স্কুলে যাই এবং ফেরার পথেও হনুমান মন্দিরে প্রচুর ভিড় দেখলাম ।আমাদের কৃষ্ণনগর শহরে অনেকগুলোই হনুমান মন্দির আছে। তবে আমাদের কাছে যে হনুমান মন্দিরটি ,সেটা ষষ্ঠীতলায় রয়েছে।।

ষষ্ঠী তলায় ঢুকতেই রাস্তার মেন রোডের উপর বাঁদিকে হনুমান মন্দির করা হয়েছে, একটা সময় ওখানে কিন্তু মন্দির ছিল না। প্রচুর হনুমান ওখানে কারেন্টের শক খেয়ে মারা যেত। তারপর ঠাকুরের নামে যাতে এই দুর্ঘটনাগুলো বন্ধ হয় ,ওখানে হনুমান মন্দির করা হয়।

হনুমান মন্দির হওয়ার পর থেকেই প্রচন্ড পরিমানে জাকজমকভাবে রীতিমতো পুজো হয়ে আসছে ।প্রতি দিন পুজো হওয়ার সাথে সাথে, মঙ্গল এবং শনিবার খুবই ধুমধাম ভাবে পুজো হয়ে থাকে প্রত্যেক সপ্তাহে।। প্রত্যেক সপ্তাহে এই দুটো দিন মানুষের ভিড়ে মন্দির এর চাতালে দাঁড়ানোর মতন জায়গা থাকে না। আমি এর আগে একবার হনুমান মন্দির নিয়ে পোস্ট করেছিলাম।

20250412_203013.jpg

গত বছর একটা বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। সত্যি বলতে ওই রাস্তা দিয়ে ক্রস করার সময় আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি ,আমি প্রচন্ড অনুরোধ করি যেন আমার বাধা বিপত্তি দূর হয়ে যায়। সেই দিনকেই আমার সমস্যার সমাধান হয়েছিল। আমি এতটাই আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম যে আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না ।

কথায় আছে - বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। আমি সত্যিই ভগবানের বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি শক্তিকে। শুভ শক্তিকে। তাই যখন এরকম ঘটনা ঘটলো আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না ,আমি পরের দিনকেই ভগবানের স্থানে পুজো দিতে গিয়েছিলাম। তবে এর আগে ওই জায়গায় কিন্তু আমি যাইনি, দূর থেকে প্রণাম করেছি যতবার যাতায়াত করেছি। কিন্তু কোনদিনও মন্দিরে ঢোকা হয়নি। অনেকে নানান রকম লজিক দেখাতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে লজিক এটাই যে ভগবান সেদিন আমাকে সত্যিই সাহায্য করেছিলেন, আমার সমস্ত বিপদ থেকে তিনি রক্ষা করেছিলেন।

এবার মাঝে মধ্যেই আমি চেষ্টা করি শনি, মঙ্গলবার নাগাদ যখনই আমার সময় থাকে, পুজো দিয়ে আসার। এই হনুমান জয়ন্তীর দিন সকাল থেকে সময় না পেলেও আমি সন্ধ্যাবেলায় পুজো দিতে গিয়েছিলাম। সেই পুজো নিয়েই পুজোর মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই ।আজকে এই পোস্টে অনেকটাই লিখে ফেললাম, তাই পরের পোস্টে সমস্ত মুহূর্তগুলো শেয়ার করব।

Sort:  
Loading...
Loading...
 4 months ago 

হনুমান জয়ন্তীর দিন আমিও চেয়েছিলাম হনুমান মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার জন্য কিন্তু এ বছরে যেহেতু আমারা পুজো দিতে পারব না। তাই এ বছরে হনুমান মন্দিরে যাওয়া হয়নি। কিন্তু ওই দিনকেই আমার মা আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল তাই মায়ের মুখে শুনছিলাম মন্দিরে নাকি প্রচন্ড ভিড় হয়েছিল পুজো দেওয়ার জন্য। অনেক ভক্তরাই ছুটে গিয়েছিল মন্দিরে পুজো দিতে। হনুমান সম্পর্কে অনেক তথ্য তোমার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম পরবর্তী পোস্টে অপেক্ষায় রইলাম।