রাখি পূর্ণিমা - শেষ পর্ব

in Incredible India2 days ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে ভাল আছেন।রাখি পূর্ণিমা নিয়ে আজকে শেষ পর্ব। আমাদের রাখী পূর্ণিমার সমস্ত কিছু পালন হয়ে যাবার পর, আমার পিসিরা হাতে রাখি পড়ানো শুরু করল। আমার তিন পিসির মধ্যে দুই পিসি আমাদের বাড়িতে সেদিনকে এসে উপস্থিত হয়েছিল। মাকে আগের দিনকেই বলে রেখেছিল ভাইকে রাখি পড়াতে আসবে। তো সেই মতো ওরা চলে এসেছিল।মা ওদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার জোগাড় করছিল।

20250809_105726.jpg

তবে সবথেকে বড় কথা ,আমার ভীষণ খারাপ লাগে মাকে দেখে। কারণ আমার মামার বাড়ি অর্থাৎ মায়ের বাপের বাড়ি আমাদের এখান থেকে বেশ অনেকটা দূর। এ কারণে মা যেতেও পারে না দিনের দিন ।আর রাখিও পড়াতে পারে না ।ভাইফোঁটার দিনও এরকম হয়। মায়ের বড় ভাই অর্থাৎ আমার বড় মামা এখন আর এই জগতে নেই। তবে ছোট মামা আছে।ছোট মামা কে যে একটুখানি আদর ভালোবাসা দেবে এই দিনগুলোতে ,সেটা আমার মায়ের হয়ে ওঠে না। তবে আজ থেকে তিন চার বছর আগে একবার রাখি পূর্ণিমায় মামার বাড়িতে ছিলাম ।ওই সময় মামাকে বেশ ধুমধাম করে রান্না করে রাখি পড়িয়েছিল মা।

20250809_105548.jpg

রাখি পূর্ণিমার দিন সবাই রাখি পড়ছিল ।আমরা ভাই-বোনেরা আনন্দ করছিলাম,কিন্তু মা রান্নাঘরে রান্না করে যাচ্ছিল ।এছাড়া কিছুই না ।বিষয়টা আমার দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই মাঝেমধ্যেই রান্না ঘরে মাকে সাহায্য করতে চলে যাচ্ছিলাম।।

20250809_105452.jpg

যাইহোক আমার দুই পিসি না হয় রাখি পড়াতে এসেছে ,কিন্তু আমার আর এক পিসি পায়ের সমস্যার কারণে সে আসতে পারেনি। তাই এখান থেকে বাবা রাখি পড়ে ,সামান্য কিছু খেয়ে তারপরে বাবা আবার ওই পিসির বাড়িতে যাবে।

20250809_105750.jpg

দুই পিসি আসার সময় হাতে করে মিষ্টি নিয়ে এসেছিল ।অনেকগুলো মিষ্টি একটা প্লেটে সাজিয়ে রাখির থালা রেডি করে আমি ওদের সামনে দিয়ে দিলাম ।ওরা এক এক করে রাখি পরালো ।ওরা ভাইকে নিজের পছন্দমত উপহার দিল ।আর আমার বাবাও তাই করল। তবে সেগুলোর ছবি তোলা হয়নি ।

20250809_105704.jpg

টুইস্ট

যাইহোক সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সবার যখন খাওয়া দাওয়া শেষ হয়ে গেল ,তখন আমি কোন একটা কাজে দোতলার ঘরে অর্থাৎ আমার ঘরে এসেছিলাম ।তখন দেখি আমার চকলেট গুলো ওখানেই পড়ে আছে ।গরমটা বেশ ভালই ছিল, চকলেট গুলো গলে যাচ্ছে দেখে ভাবলাম ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখি।। ঈশানের দেওয়া চকলেটটা কে সাইড করলাম। আর তার সাথে সেলিব্রেশানের প্যাকেটটার চকলেটগুলো ভাবছিলাম বের করে ফ্রিজে রাখব।

তাই সেলিব্রেশানের প্যাকেটটা খুলতে গেলাম। খুলতে গিয়ে দেখি, এ তো আগে থেকেই খোলা ।আমি প্রথমে একটু অবাক হলাম ভাবলাম কি ব্যাপার ।এটা খোলা কেন তারপরে যখনই সেলিব্রেশানের প্যাকেটের মধ্যে থেকে প্লাস্টিকের ট্রে বার করলাম, যার মধ্যে চকলেট গুলো সাজানো থাকে। তখন দেখি ওর মধ্যে থেকে একদম খাপে খাপে ডেয়ারি মিল্ক আর ফাইভ স্টার চকলেট টা যেখানে ছিল ,সেই জায়গাটা খালি ।

20250809_103517.jpg

তখন আমার মাথায় ঢুকলো যে আমার ছোট্ট ভাই আমার সাথে বেশ ভালোভাবেই চালাকি করেছে। ও নিজে আসলে কোন সময় গিয়ে কোন দোকান থেকে কিছু কেনেনি। দাদার দেওয়া চকলেট এর মধ্যে থেকেই দুটো চকলেট আগে থেকে বার করে রেখে ,আমি যখন ওকে রাখি পড়ালাম ,তারপরে আমাকে দিয়েছে। হাহাহা।

আমি ওর এই কান্ড দেখে হাসতে হাসতে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। বাবা-মাকে সাথে সাথে গিয়ে বললাম। বাবা-মাও হাসতে শুরু করে দিল। ছেলের কি বুদ্ধি, কি বুদ্ধি। এ আমাকে একঘাটে কিনে আর এক ঘাটে বেঁচে দেবে আর আমি একটা বোকা।

যাইহোক আমার ছোট্ট ভাইয়ের এই দুষ্টুমিটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। আর ওর এই দুষ্টুমিটা রাখি পূর্ণিমার ওই দিনটাকে আরো আরো স্মৃতিতে ভরিয়ে দিল। বুড়ো বয়সে সবাইকে গল্প শোনাতে পারবো আমার ভাই এই দুষ্টুমি আমার সাথে করেছিল।

রাখির গল্প করতে করতে আপনাদের বলেছিলাম একটা টুইস্ট আছে ,টুইস্টটা এটাই ছিল। আমার রাখি পূর্ণিমার পর্বগুলো যারা পড়েছেন, তারা ব্যাপারটা ভালোভাবেই বুঝতে পারবেন।আজ এখানেই শেষ করছি।ভালো থাকুন সকলে।

Sort:  
Loading...
Loading...