জন্মাষ্টমীতে আয়োজন
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি জন্মাষ্টমীর দিনের কিছু মুহূর্ত।
বেশ কিছুদিন আগে জন্মাষ্টমীর পুজোর জন্য আগের দিন রাতে বাজার করতে যাওয়া নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করেছিলাম। কি কি বাজার করেছিলাম, তা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম ।এমনকি গোপালের জায়গাটা সাজানো নিয়েও অনেক কথা লিখেছি সেদিনকে ।এছাড়াও তারও কিছুদিন আগে গোপালের জামা বানানো নিয়ে একটি পোস্ট লিখেছিলাম। জন্মাষ্টমীর দিন কি কি করলাম সকালবেলা থেকে ,তা পরপর পোষ্টের মাধ্যমে শেয়ার করার চেষ্টা করব। আজকে তার প্রথম পর্ব।
প্রথম পর্ব আর প্রথম কাজ অনেকটাই একে অপরের পরিপূরক। সকালবেলা উঠেই আমাদের প্রথম কাজ ছিল আমাদের ছোট্ট গোপাল ঠাকুরের জন্য ভোগ রান্না করা। তাই আজকে পোষ্টের বিষয় গোপাল ঠাকুরের ভোগের ওপরই আমি রাখছি।
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে শুরু করে দিয়েছিলাম মায়ের সাথে কাজ করা। সমস্ত জোগাড় করে ওপরে নিয়ে এসে চারিদিকটা সুন্দর করে গুছিয়ে প্রথমেই রেখে দিলাম। তারপরে রান্না করা শুরু হলো। রান্না করার আগে কিছু কথা বলি। গোপাল ঠাকুরের জন্য বাবা এক ব্যাগ চকলেট, বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট আরো অনেক কিছু কিনে নিয়ে এসেছিল। বাচ্চাদের আমরা যেমন ভাবে সেবা দিযে থাকি, গোপাল ঠাকুরকেও হিন্দু ধর্মে ঠিক সেভাবেই সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। ও প্রত্যেকের বাড়ির একটা বাচ্চার মতন।
যাদের বাড়িতে গোপাল এর বিগ্রহ আছে। তাকে তিনবেলা খেতে দেওয়া থেকে শুরু করে, তাকে শয়ন দেওয়া এই সমস্ত কিছুই একটা রিচুয়াল এর মধ্যে পড়ে। এবার বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু সেটা আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই এই নিয়ে আমি আর কিছু বেশি বলছি না। ঠাকুরকে ভোগ নিবেদন করেই নিজে ভোগ গ্রহণ করা উচিত ।আর আমাদের কাছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পরম দেবতা। তিনিই সবকিছু। তাই তার জন্মতিথিতে আমাদের এরকম একটা আয়োজন প্রত্যেকবারের মতো আমরা অবশ্যই এবারও করার চেষ্টা করেছি।
যাইহোক বাবা যেমন ওর জন্য এসব নিয়ে এসেছিল, আমি ঠিক তেমনি ওর জন্য লাল দই নিয়ে এসেছিলাম।। মা দিয়েছিল বেদানার জুস করে। এর সাথে এনেছিলাম মিলকেক। আমরা জন্মদিনে কেক খাব! আর গপু খাবেনা!?। সেটা কি হয়!?। তাই ওর জন্য আলাদা করে মিল্ক কেক এর ব্যবস্থা করেছিলাম।।
এবার যদি রান্নার প্রসঙ্গে আসি ,তাহলে প্রথমেই হয়েছিল লুচি। সাথে সুজি। এর সাথে হয়েছিল তালের বড়া। জন্মাষ্টমীতে তালের বড়া যেন একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। এর সাথে ছিল নারকেলের নাড়ু। মা তেলের পিঠে বানিয়ে ছিল। যেটাকে আমি পরে চিনির শিরাতে ডুবিয়ে মালপোয়াতে ট্রান্সফার করেছি। এর সাথে ছিল পাঁচ রকমের মিষ্টি।
আর গোপাল ঠাকুরের সবথেকে পছন্দের খাবার ক্ষীর। ক্ষীর এর মাখন ছাড়া জন্মাষ্টমী কিছুতেই সম্ভব না। এর সাথে মা বিভিন্ন রকমের ফল কেটে দিয়েছিল। আর গোটা ফল নিবেদন করা হয়েছিল।
জন্মাষ্টমীতে মোটামুটি এরকমই ভোগের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে আমি এবারে অন্ন ভোগ রান্না করিনি। অনেকেই বলছিল জন্মাষ্টমীর দিন অন্ন নিবেদন করতে নেই। পরের দিন নাকি নিবেদন করা যায়। এই কারণে জন্মাষ্টমীর দিন প্রত্যেক বছর আমি যেমন পোলাও ,আলুর দম তৈরি করি ,সেটা এ বছর করিনি।
আমাদের ছোট্ট গোপুর জন্য খাবারের আয়োজন আপনাদের কেমন লাগলো, অবশ্যই জানাবেন। পরের পোস্টে বাকি কথা শেয়ার করব।