কলকাতা থেকে ডাইরেক্ট নিমন্ত্রণ বাড়ি

in Incredible India8 days ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গত দুদিন ধরে কলকাতা যাওয়া নিয়ে পোস্ট লিখেছি ।পরপর কলকাতায় কি কারনে গিয়েছিলাম সেটাও আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আমার গানের রেকর্ডিং ছিল সেদিনকে, সাথে আরো কিছু কাজ নিয়েই গিয়েছিলাম ।যাতে একবারে অনেকগুলো কাজ সেরে আসতে পারি সেদিনকেই ।

20250829_211331.jpg

সেদিন আমাদের রাতের দিকে একটা নিমন্ত্রণ ছিল। আমার বাবার বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। বাবার বন্ধু বলা ভুল হবে, বাবার থেকে অনেকটাই জুনিয়ার ,আর ওদের পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের বেশ ভালো সম্পর্ক ।অনেক বছর পরে মেয়ে হয়েছিল ।আর দেখতে দেখতে মেয়েটার বয়স পাঁচ বছর হয়ে গেছে। ওর ভালো নাম আরভি। মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে আসে ওর বাবা মার সাথে। আর মেয়েটা এত মিষ্টি হয়েছে ,যে ওর সাথে কথা বলে পারা যাবে না। একদম পাকা বুড়ি।

20250829_211231.jpg

ভেবেছিলাম কলকাতা থেকে ফিরে বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে, রেডি হয়ে তারপরে নিমন্ত্রণ বাড়িতে যাব ।কিন্তু সেদিনকে ফিরতে ফিরতে প্রায় সাড়ে আটটা -নটা বেজে যাচ্ছিল, এই কারণে রাস্তাতেই বাবা ঠিক করল একেবারে গাড়িটা নিমন্ত্রণ বাড়িতে ঢোকাবে ।আর মাকে আর ঈশানকে বাড়ি থেকে তুলে নেবে আমাদের পরিচিত একটা টোটো কাকু। ঠিকভাবে ঠিক সময় মত ওদেরকে পৌঁছে দেবে ।আর আমরা এদিক থেকে ডাইরেক্ট নিমন্ত্রণ বাড়িতে পৌঁছে যাব।

এই শুনে তো আমার মাথা খারাপ। আসলে সকাল থেকে জার্নি করে আমার চোখ মুখের অবস্থা একেবারেই বাজে হয়ে আছে।। কোনরকম সাজুগুজু করার মতন কিছু নেই কাছে। লিপস্টিকটাই শুধুমাত্র কাছে রেখেছি ।তারপরে যে ঠিকঠাকভাবে অনুষ্ঠান বাড়িতে পড়ার মতন জামা কাপড় পড়ে কলকাতায় গিয়েছিলাম ,তাও নয়। আমি যদি আগে জানতাম বাবা ডাইরেক গাড়ি নিয়ে নিমন্ত্রণ বাড়িতে ঢুকবে।
তাহলে সেই মতোই জামা কাপড় পড়ে যেতাম। এই জন্য বাবার সাথে তো আমার চরম বিবাদ লেগে গেল গাড়ির মধ্যে।

20250829_212348.jpg

আমি কিছুতেই রাজি হচ্ছিলাম না ডাইরেক্ট যাওয়ার জন্য। আর ওদিকে বাবা যাবে। এই বলতে বলতে বাবা হঠাৎ করে বলে উঠলো যে, জামা কাপড় দিয়ে কি হবে! যারা প্রকৃত মানুষ, তারা গুণের বিচার করে। কে কেমন জামা কাপড় পড়লো ,কে কত সুন্দর দেখতে ,কে কতটা সাজলো, সেটার বিবেচনা করতে যায় না। এবার তুই ভাব ,তুই কিসের বিবেচনা করবি।

বাবার এই কথাটা বাবা যে সেদিনকেই প্রথমবার বলল, তা নয়, এর আগেও বাবা অনেকবার বলেছে। কিন্তু তখনকার মতো বাবার এইটুকুনি কথা আমার জন্য যথেষ্ট ছিল। বলার সাথে সাথে আমি চুপ হয়ে গেলাম। অর্থাৎ বাবা সঙ্গ দিল বলে ,নিজের ভিতর যে ইনসিকিউরিটিটা হচ্ছিল ,সেটাও কেটে গেল।

তাই সোজা চলে গেলাম নিমন্ত্রণ বাড়িতে। নিমন্ত্রণ বাড়িতে পৌঁছে দেখি ওদের বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। বাড়িতেই অনুষ্ঠান করছে নিজস্ব মানুষদের নিয়ে ,তবে অনুষ্ঠানটা কিন্তু বেশ জাঁকজমকভাবেই করা হচ্ছে বোঝা গেল।

ঢুকেই দেখি প্রচুর লোকজন আর তখনই কেক কাটা চলছে ।মাইক এ এনাউন্স করা হচ্ছে আরভির নাম আর হ্যাপি বার্থডে উইশ করা হচ্ছে গান গেয়ে। আমি সাথে সাথে হুটোপাটা করে ভেতরে ঢুকে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। ওখানে গিয়ে সবাই এত সাজুগুজু করে আছে ,এত ঠিকঠাক ভাবে হয়ে আছে দেখে আমার নিজের তখনই ইনসিকিউরিটি ফিল হচ্ছিল ।তবে সেটা আস্তে আস্তে কেটেছে। আচ্ছা ,এটা হওয়া কি স্বাভাবিক নয়!?

1000306233.jpg

আমি আসলে মানুষ কি ভাববে,সেটা খুব একটা মনে করি না ।আমার কথা হচ্ছে আমি একটু সেজেগুজে আসতাম ।দু একটা ভালো ছবি তুলতাম নিজের ।কিন্তু সেটার সুযোগ সেদিনকে আর হলো না। যাই হোক মা আর ভাই আগে থেকে পৌঁছে গিয়েছিল । আর ওর জন্মদিনের গিফট ওকে আগেই দিয়ে দিয়েছিল। যেহেতু আমি জানতাম সেদিনকে কলকাতা যাওয়া হবে। তাই ওর জন্মদিনের অনেক দিন আগেই ওর গিফট আমি কিনে রেখে গিয়েছিলাম বাড়িতে।

কেক কাটা হয়ে যাওয়ার পর আমাদের সকলকে কেক দেয়া হলো এবং সাথে ওখানে স্টলে ছিল কফি, কোলড্রিংস ,আইসক্রিম ,ভেজ পকোড়া। আমি এক গ্লাস কোলড্রিংস আর ভেজ পাকোড়া আর কেক প্রথমে খেয়ে নিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পোস্টে বাকি কথা শেয়ার করব।

Sort:  
Loading...
Loading...