অষ্টমীর দিন সকালে

in Incredible India3 days ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমার অষ্টমীর দিনের সকালের মুহূর্তগুলো।

20250930_102210.jpg

আগের দিন অর্থাৎ সপ্তমীর দিন সকাল বেলায় একটু মার্কেটের দিকে বেরিয়েছিলাম ।সেটা নিয়ে আপনাদের সাথে একটা পোস্ট শেয়ার করেছি ।মার্কেট থেকে আসার পর বিকেল বেলার সময়টাও ভালো ছিলাম। সন্ধ্যা বেলার দিকে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার একটা প্ল্যান চলছিল ।হঠাৎ করে সন্ধ্যের পর থেকেই শরীরটা কেমন যেন করতে থাকলো। আস্তে আস্তে শীত করতে লাগলো। চোখ খুলে রাখতে পারছিলাম না। মাথার মধ্যে প্রবল যন্ত্রণা করছিল। এরকম হতে হতে আমি যখন শুয়ে পড়লাম ,তার একটু পরে দেখি আমার জ্বর চলে এসেছে।

20250930_102201.jpg

কি অদ্ভুত ভাবে জ্বরটা আসলো ।আর জ্বর আসার পর থেকে শরীর যেন একেবারেই ছেড়ে দিল। সহজে জ্বর হতে চায় না ।কিন্তু জ্বর হলে সত্যিই অনেক কষ্ট হয়। সকাল থেকেই একটু গলাটা ব্যথা লাগছিল। কদিন ধরেই দুপুরবেলার দিকে মার্কেটে যাওয়া হয়েছে। গরমও পড়েছিল প্রচুর। তারপর মাঝেমধ্যে আবার ঠান্ডা ওয়েদার। আর বেশিরভাগ সময় গরম। সবমিলিয়ে ঠান্ডা গরম লেগে গিয়েছে হয়তো।। এরকম চলতে চলতে অবশেষে তো একদিন জ্বর আসতেই হবে। এছাড়াও ঈশানের জ্বর ছিল বেশ কিছুদিন আগে, তাই তারপরে আমার জ্বর চলে এলো।

20250930_103703.jpg

সপ্তমীর সন্ধ্যেবেলা থেকেই বুঝতে পারলাম ঠাকুর দেখা মাথায় উঠেছে। সেদিনকে তো ঠাকুর দেখতে যেতেই পারলাম না ।আমার কারনে মাও বেরোতে পারল না। তবে ঈশানকে নিয়ে বাবা ঠাকুর দেখে আসলো। সারারাত ধরে জ্বর ছিল ।পরের দিন অষ্টমী ।অষ্টমীর দিন বিশেষ করে দুর্গাপূজার এই অষ্টমীর দিন বাঙ্গালীদের কাছে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। মেয়েরা খুব সুন্দর করে সেজেগুজে মায়ের কাছে অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দিতে যায়। আর আমার এমন বেহাল অবস্থা ছিল যে বিছানা থেকে ওঠা তো দূরের কথা মন্দির অব্দি পৌঁছানো কষ্টসাধ্য।

20250930_103715.jpg

আমি একেবারেই ভেবে রেখেছিলাম অঞ্জলি দিতে পারব না । বাড়ি থেকে বাবাও বারবার বারণ করছিল না যেতে ।কারণ আমার শরীর সত্যিই অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল ।তার ওপর লো প্রেসার ।শরীর খারাপ বলেই লো হয়ে গিয়েছে, সেটাও বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু আমার মা জোর জবরদস্তি করতে লাগলো। বারবার বলল স্নানটা করে একটু চেষ্টা কর ,দেখ পারবি। দুই মিনিটের জন্য গিয়ে অঞ্জলি দিয়ে আসবি।। বছরের একবারই অষ্টমীর অঞ্জলীর পুজো দিতে যাস ,একটু মন শক্ত করে চল, ঠিক হয়ে যাবে।।

20250930_103712.jpg

স্নান সেরে উঠেও শরীর যেন টাল মাতাল । মায়ের কথার ওই জোরে সামান্য পুজোর জামাটুকু পড়ে কোন রকমে চুলটাকে আঁচড়ে নিয়ে বাবার গাড়িতে করেই মণ্ডপে চলে গেলাম। চেয়ারে বসে পড়লাম মন্ডপে গিয়ে। যখন অঞ্জলি হল অর্থাৎ প্রায় ২-৩ মিনিট পরে কোনরকমে অঞ্জলি দিয়ে আবার বাবার গাড়ি করে বাড়ি চলে আসলাম।।

20250930_103710.jpg

ভগবানকে চাওয়ার মত কিছুই ছিল না। শুধুমাত্র শরীরটা যে ঐ অব্দি নিয়ে যেতে পেরেছি, এটাই আনন্দ হচ্ছিল। মন্দিরে মন্ডপে আমার এবং বাবার পরিচিত প্রচুর জন রয়েছে ।পাড়ার সকলে ছিল। আমার অবস্থা চোখ মুখের অবস্থা দেখে সকলেই দুঃখ করছিল।। পুজোর দিনে মেয়েটার কি হাল হলো। এটাই সকলে বলছিল।

20250930_102226.jpg

আসলেই পূজোর সময় বাচ্চা কিংবা বড়দেরও শরীর খারাপ করলে খুবই দুঃখ লাগে। কারণ বছরের এই দিনগুলোর জন্য প্রত্যেক বছর আমরা সবাই অপেক্ষা করে থাকি। বাঙালির আনন্দই তো দুর্গাপুজোতে। আজ এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন।।