ঘরের পর্দার কেনাকাটা
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। , আজকে শেয়ার করছি প্রথম বার নিজে নিজে একটা মাতব্বরি করা। বিষয়টা হল আমার মনে হয়েছিল, আমাদের দোতলার ঘরে পূজো হওয়ার আগে ঘরগুলোতে পর্দা লাগানো ইমিডিয়েট দরকার। গরমকালে জানলা বন্ধ করে রাখা যায় না। যতই দোতলার ঘর হোক ,সবসময় জানলা খুলে রাখা যায় না। তাই পর্দাটা ম্যান্ডেটরি।
এ সমস্ত জিনিস নিয়ে আমি অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম, কিন্তু বাবা এতটা পরিমাণে প্রেসারে ছিল বাড়ির কাজ নিয়ে আর পূজো নিয়ে। যে শুধুমাত্র পর্দা কেনার জন্য বাবাকে নিয়ে বেরোনো একেবারেই একটা বোকামির কাজ ছিল।তাই একদিন নিজেই আমি বিকেল বেলার দিকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম আমাদের মার্কেটে। সত্যি বলতে কোনদিন জীবনে পর্দা কিনিনি ।পর্দার মাপ কতটা কি হয় না হয়, কোনরকম আমার জ্ঞান বা ধারণা নেই।
ভয়ে ভয়ে চলে গেলাম শয্যালয় বলে একটা দোকানে, যে দোকানে বেড কভার থেকে শুরু করে সমস্ত শয্যাদ্রব্য পাওয়া যায় ।সাথে পর্দা ওড়া কাস্টমাইজ করে দেয়, ওরা তৈরি করে দেয়। ওখানে রেডিমেড পর্দাও কিনতে পাওয়া যায় । আবার ছিট থাকে ,সেখান থেকেও পর্দা তৈরি করা যায়। ওই পার্টিকুলার দোকানটাতে যাওয়ার কারণ হচ্ছে, আমি ছোটবেলা থেকে যতবার বাবাকে আমাদের বাড়ির পর্দা তৈরি করতে দেখেছি ,এই দোকান থেকে দেখেছি।
যাওয়ার সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই খুব টেনশনে হচ্ছিল, যে সাইজটা নিয়ে কি হবে। কাকুদেরকে বলার পরে কাকুরা আমাকে সোজা ওদের গোডাউনে নিয়ে গেল । গিয়ে দেখলাম ওদের ওখানে বিভিন্ন ধরনের কাপড় রয়েছে এবং একেকটা কাপড়ের কোয়ালিটি এক এক রকম ।কোনটা মোটা, কোনটা পাতলা ,তার মধ্যে আমাদের ঘরের টাঙানো যে পর্দা গুলো রয়েছে, সেই কাপড় গুলোও আমি দেখতে পারলাম।।
খুব ভেবে চিন্তে আমি দুটো তিনটে কাপড়ের রোল ওদেরকে বার করে আবার দোকানে নিয়ে আসতে বললাম এবং ওখানে বসে ভাবতে বসলাম যে ঘরের কালারের সাথে কিংবা ঘরের সাথে কোন পর্দার কালার টা এডজাস্ট হবে।
আমি চাইলে রেডিমেড কিনতে পারতাম ।কিন্তু সত্যি বলতে রেডিমেড পর্দা আমার ঠিকঠাক পছন্দ হয় না ।এখনো পর্যন্ত আমার চোখে খুব একটা লাগেনি। ফ্লিপকার্ট আর অ্যামাজনে যে পর্দা গুলো দেখছিলাম, আমার মনে হয়েছিল ,বেশি দাম নিচ্ছে ।ওতে আমার দুটো ঘরের পর্দা তৈরি হয়ে যাবে ,আমি যদি পর্দা তৈরি করতে দিই।
যাইহোক অবশেষে চুস করা হলো এবং এর পরে ওরা আমার কাছে মাপ জানতে চাইল। সত্যি বলতে মাপের উপর আমার কোন আইডিয়া ছিল না ।তবে ওরা একটা আন্দাজ মতো মাপ লিখল। সাধারণত জানলার মাপ যা হয়ে থাকে ,ওরা সেরকমই লিখলো।
কপিস করে লাগবে প্রত্যেকটা ঘরের জন্য সেটা আমি কাউন্ট করে ওদের বলে দিলাম। আমি চেয়েছিলাম পর্দাটা যেন দু দিক দিয়ে খোলে অর্থাৎ আমি হাত দিয়ে দুদিকে সরিয়ে দিতে পারি অর্থাৎ এক একটা জানলায় দুটো সেকশন করে পর্দা লাগানোর দরকার ছিল। এই হিসেবে একটা জানলায় দুটো করে পর্দা লাগে। তাই টোটাল আঠারোটা মতো পর্দা ওদেরকে বানিয়ে দিতে বললাম।
এসব হয়ে যাওয়ার পর ওরা আমাকে একটা বিল রেডি করে দিল। একদম এক কালারের যে সবুজ রঙের কাপড়টা আপনারা দেখছেন সেই কাপড় ১০০ টাকা করে মিটার ছিল। আর যেটা আপনারা দেখছেন সবুজ রং হালকা আর তার ওপর হালকা পাতার মতন ডিজাইন করা সেটা ১৮০ টাকা মিটার। সেই মতোই বিল হল।
যেহেতু পূজো ১২ তারিখে ছিল, আর আমি 7 তারিখে পর্দার দোকানে গিয়েছিলাম। তাই আমি ওদেরকে খুব তাড়াতাড়ি ডেলিভারি দিতে বলে দিয়েছিলাম পর্দা গুলো। সাথে বলে এসেছিলাম,যদি ওনাদের ট্রেলারকে আমাদের বাড়িতে পাঠাতে পারে, তাহলে আরো সুবিধা হয় মাপগুলো নিয়ে নেওয়ার ,কারণ আমি সঠিক ভাবে জানলার মাপ নিয়ে যাইনি।।
আর ওরা আমার সাথে কো-অপারেট করেছিল।যাইহোক যখন পর্দা গুলো তৈরি হয়ে বাড়িতে আসলো এবং আমি পর্দা গুলো লাগালাম ঘরে ।তখন সত্যিই মনে হচ্ছিল যে একদম ঠিকঠাক ডিশিশান নিয়েছি। আমার রঙ এর চয়েজ অথবা কালার কম্বিনেশন এর ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে ,সেটা সেদিনকেই বুঝতে পেরেছি ভালোভাবে।
কারণ আসলেই ঘরের কালার অনুযায়ী পর্দা গুলো ভীষণ পরিমাণে ভালো লাগছিল।। কিন্তু জায়গাটা ফটো সুটের ভালো প্লেস হয়ে গেছে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন এখন আমার বেশিরভাগ ছবিই আমি ঠিক ওরকম জায়গা করে ক্যাপচার করি। আর সত্যি বলতে সবুজ রং হচ্ছে আমার পছন্দের রং।
এতকিছু লেখার পিছনে একটাই কারণ ছোট ছোট বিষয়গুলো আমাদের আনন্দ দেয়। একটা জিনিস নিজে নিয়ে নিজের মতন করে করার পর ,সেই জিনিসটা যখন অ্যাকচুয়ালি ভালো হয়, সকলে বলে ভালো, তখন আসলেই ভালো লাগে।
যাইহোক আপনাদের সাথে অনেক ছবি শেয়ার করা উচিত ছিল এই সংক্রান্ত বিষয়ে। দোকানের ছবিটাও শেয়ার করা উচিত ছিল ।কিন্তু বিষয়টা হলো আমি এতটা পরিমাণে চাপে ছিলাম এবং এত ফোন আসছিল। সবকিছু মিলিয়ে আমি বেশি ছবি তুলতে পারিনি। যে কটা ছবি তুলেছি, আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করলাম । সাথে নিজের অনুভূতি মিশিয়ে লেখাটাও শেয়ার করলাম ।আশা করছি আপনাদের ভাল লাগল পোস্ট। আজকে এখানেই শেষ করলাম ।সকলে ভালো থাকবেন।।