লোকনাথ বাবার পূজোর দিনের মুহুর্ত
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি লোকনাথ পুজোর মুহূর্তগুলো।
গত জুন মাসের ৩ তারিখে বাবা লোকনাথের পুজো ছিল। আসলে লোকনাথ বাবা যেদিন তিরোধান করেছিলেন, সেদিনকেই মনে রেখে তার পুজো দেওয়া হয় প্রত্যেক বছর। ১৮ ৯০ সালে তিনি তিরোধান করেছিলেন। বাবা লোকনাথ লোকনাথ ব্রহ্মচারী নামেও পরিচিত। তিনি দেহত্যাগ করেছিলেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে বারদী আশ্রমে।
হিন্দু ধর্মে সিদ্ধাচার্য বাবা লোকনাথ কে ভগবান রুপে পুজো করা হয়। তিনি প্রবল তপস্যা করেছিলেন। তিনি 50 বছর এরও সময় ধরে তপস্যা করেছিলেন এবং তপস্যার সমাধির স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তারপরে ৯০ বছর বয়সে তিনি পরম তত্ত্ব লাভ করেছিলেন।
বাবা লোকনাথ এর একটা উল্লেখযোগ্য বাণী রয়েছে যেটা আমরা প্রায়শই শুনে থাকি। বিশেষ করে আমরা হিন্দুরা এ সম্পর্কে অবগত । সেটা হল, বাবা লোকনাথ বলছেন-
"রণে - বনে - জলে - জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে ,আমাকে স্মরণ করিও, আমিই রক্ষা করিব।"
ছোটবেলা থেকে এই বাণী শুনে আমি কিন্তু বড় হয়েছি। আমার বাড়িতে আমার সেজ পিসি ভীষণ পরিমাণে লোকনাথ বাবার ভক্ত। ছোটবেলায় আমিও বাড়িতেই লোকনাথ পুজোর দিন ছোট্ট করে নিজের হাতের লোকনাথ পুজো করতাম। বাড়িতে যেয়ে তুই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের মূর্তি রয়েছে। বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে, তাই লোকনাথ বাবার মূর্তিও আমাদের বাড়িতে ছিল। দোকানে বিক্রি হওয়ার জন্য প্রচুর মূর্তি থাকতো। আমি আমার পছন্দমত মূর্তি নিয়ে লোকনাথ বাবার পূজা করতাম। এখন সেটা আর হয়ে ওঠেনা।
আসলে আমার পিসতুতো দাদার বাড়িতে লোকনাথ পুজো ধূমধাম করে হয়। সাথে আমার বাবার বন্ধুর বাড়িতেও পুজোটা বেশ বড় করে দেয়া হয়।। কারণে ওদের বাড়িতে যাওয়ার জন্যই নিজের বাড়িতে আর পুজো করি না। এর সাথেই আমাদের ঘূর্ণিতে একদম মেইন রোডের ওপর লোকনাথ মন্দির রয়েছে। সেদিনকে সেখানেও পুজো থাকে।
তাই বাড়িতে না পুজো করে মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে আসি।। আর দাদা আর আমার বাবার বন্ধুর বাড়িতে আমাদের তো নেমন্তন্ন থাকেই। এ কারণে সকাল থেকে ওখানেও বারবার যাওয়া হয়। তাই বাবার পুজোতে প্রত্যেকবার অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করি।
এ বছরেও আমার বাবার বন্ধু আমাদের নিমন্ত্রণ করেছিল লোকনাথ পুজোর দিন। মা-বাবা সকাল থেকেই ওদের বাড়িতে চলে গিয়েছিল ,তবে এবারে আমি সকাল বেলাতে আমাদের বাড়ির কাছে অর্থাৎ ঘূর্ণির মোড়ে যে লোকনাথ বাবার মন্দির আছে সেখানে গিয়ে পুজো দিয়ে এসেছিলাম।। সকাল বেলায় স্নান সেরে পুজো দিতে গিয়ে দেখি বেশ সুন্দর করে প্যান্ডেল করেছে। একে একে সকল শিষ্যরা এবং ভক্তরা এসে পূজো দিয়ে যাচ্ছে। লোকনাথ বাবা র মূর্তি পুরো ফুলের মালাতে ঢেকে গেছে।
সকাল বেলায় পুজো দিয়ে এসে বাড়িতে চলে এসেছিলাম যেহেতু বাড়িতে আর কেউ ছিলনা। আবার রাতের বেলা দিকে বাবার বন্ধুর বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া আর নিমন্ত্রণ ছিল ভোগের প্রসাদ খাওয়ার জন্য। তাই তখন গিয়েছিলাম। প্রত্যেক বছর জেঠুর বাড়িতে লোকনাথ পুজোটা বেশ সুন্দর করে হয়। জেঠুদের বাড়িতে একটা বড় শিবের মূর্তি রয়েছে ফাইবারের। তার সামনেই ছোট একটা লোকনাথ বাবার মূর্তি ওরা পূজা করে। এই মূর্তিটা বহু বছরের পুরনো।
সেদিনকে ওদের বাড়িতে লোকজন খায়। ৪-৫ বছর আগে এই দিনে ওদের বাড়িতে প্রায় ৩০০/৪০০ জনেরও বেশি লোকজন খেত। সকলকে আনলিমিটেড প্রসাদ বিতরণ করা হতো। এখন ওরা আর পেরে ওঠে না বলে, কাছের কিছু মানুষজনদের নিয়ে পুরো পুজোর অনুষ্ঠানটা সম্পূর্ণ করে।
রাতের বেলায় আমার আর ঈশানের পড়াশোনা হয়ে যাওয়ার পর ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখি বাবার অনেক বন্ধুরা এসে হাজির। এর সাথেই দেখি খাওয়া দাওয়ার পর্ব চলছে। বাড়ির সামনেই একটা বড় বারান্দা রয়েছে। সেই জায়গাটাতেই খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। প্রসাদের ভোগে ছিল খিচুড়ি, ছ্যাচড়া, বাসন্তী পোলাও, আলুর দাম, মিষ্টি, চাটনি। গিয়ে প্রথমে প্রণাম করেই খেতে বসে গিয়েছিলাম। কারন আমার বেশ খিদে পেয়ে গিয়েছিল।
খাওয়া দাওয়ার পরে বাবার বন্ধুর মেয়েদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প আড্ডা দিচ্ছিলাম। ঈশানও ওর বন্ধুদের সাথে গল্প করছিল। সকাল থেকে খাটতে খাটতে জেঠিন, আমার মা কাকিমা দের চোখ মুখের অবস্থা পুরো খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমরা যখন গল্প করছিলাম তখন ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃষ্টি একটু থামলেই আবার বাবার গাড়িতে করে আমি আর ঈশান বাড়ি চলে এসেছিলাম। বাবার বন্ধু অর্থাৎ ওই জেঠুর বাড়ি, আমাদের বাড়ি থেকে গাড়িতে মাত্র দু মিনিট।
আপনাদের সকলের সাথে মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো। বাবা লোকনাথ আপনাদের সকলের মঙ্গল করুক। আজকে এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
আজকে তুমি লোকনাথ পুজোর দিনের কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করেছ আমাদের বাড়ির কাছে যে লোকনাথ মন্দিরটি রয়েছে সত্যি এত পরিমাণে ভিড় হয় ওখানে আমি রাতের বেলাতে গিয়েছিলাম দর্শন করার জন্য গিয়ে দেখি ঠাকুরের মূর্তিটা পুরো মালা দিয়ে ঢেকে গেছে ঠাকুরের শুধু মুখ টুকুনি দেখা যাচ্ছে আর বাদবাকি অংশ মালাই ঢাকা রয়েছে। এ বছরে আমারও বেশ কয়েকটা বাড়িতে লোকনাথ পুজোর নেমন্তন্ন ছিল এ বছরে আমারও বেশ কয়েকটা বাড়িতে লোকনাথ পুজোর নেমন্তন্ন ছিল। লোকনাথ পুজোয় কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।