নববর্ষের মুহূর্ত - শেষ পর্ব

in Incredible India3 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।কিছুদিন আগে আপনাদের সাথে নববর্ষের সকালের এবং সন্ধ্যে বেলার মুহূর্ত শেয়ার করছিলাম। সন্ধ্যের মুহূর্ত কিছুটা শেয়ার করেছিলাম আর কিছুটা বাকি আছে, তাই আজকে সেটাই আপনাদের সাথে ভাগ করে নেব।।

20250416_194813.jpg

বাঙালি নববর্ষ মানে হালখাতা ,মিষ্টিমুখ, ঘোরাঘুরি আর বন্ধুদের সাথে এবং আত্মীয়-স্বজনদের সাথে এক জায়গায় হওয়া। সন্ধ্যেবেলার মুহূর্তে আমিও আমার বাবার বন্ধুদের সাথে এক জায়গায় হয়ে অনেক গল্প করেছি, অনেক মজা করেছি। তারপর বেশ কিছু দোকান থেকে হালখাতাও করেছি। সেটা নিয়ে আগের পোস্টে আমি লিখেছিলাম।

20250415_195948.jpg

এসব হয়ে যাওয়ার পর আমার পার্টনারের ফ্যামিলি যখন মার্কেটের দিকে আসে ,তখন স্বাভাবিকভাবে তাদের সাথে আমাকে দেখা করতে হয় ।আমার পার্টনার, তার দাদা ,বৌদি, তার মা, বাবা সকলেই এসছিল। আমার পার্টনারের বাবা আমার বাবার সাথে গল্প করতে থাকে । আর আমি বাকি সবাইকে নিয়ে চলে যাই একটি দোকানে। যে দোকান থেকে আমরা কেনাকাটা করে থাকি। আমাদের দুই ফ্যামিলির ক্ষেত্রেই ওই দোকান থেকেই বেশিরভাগ সময় জামা কাপড় কেনাকাটা করা হয় । তাই আমাদের দুটো ফ্যামিলিরই সেখানে নিমন্ত্রণ ছিল। আমরা সবাই মিলে একসাথে গেলাম।

20250415_200656.jpg

20250415_202104.jpg

দোকানের সামনে গিয়ে দেখি নিচের ফ্লোরে যেখান দিয়ে এন্ট্রান্স সেখানে লাইন পড়েছে। লাইন দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে ।বেশিক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হলো না। লাইনটা চলছিলই। তাই আস্তে আস্তে আমরা উপরে উঠে গেলাম। গিয়ে দেখি বিশাল ভিড় ।এতটা ভিড় ধারণার বাইরে। মার্কেটের সব লোকজন বোধহয় ওই দোকানের মধ্যে এসে হাজির ।

এই দোকানের নাম যশরেশ্বরী বস্ত্রালয় ।কৃষ্ণনগরের মধ্যে আমার মতে এই দোকানে আমাদের শহরের মানুষজন বেশি কেনাকাটা করে থাকে। এই দোকানে এত পরিমাণে স্টক রয়েছে, দেখে শেষ করা যায় না ।এরা বিভিন্ন ধরনের কালেকশন রাখে ।এখানে দামি জামা কাপড়ও যেমন পাওয়া যায় ,আবার কম থেকে মিডিয়াম প্রাইজেরও জামাকাপড় এনারা রাখেন। তাই সকলের পক্ষে কেনাকাটা করতেও এখানে সুবিধা হয়।

এ কারণেই প্রত্যেক পয়লা বৈশাখে যতবারই এখানে আসি দেখি, প্রচন্ড ভিড় থাকে। এইখানে এসে কতজনের সাথে যে দেখা হয়ে যায়, তার নেই ঠিক। এনাদের আবার একটি কেক পেস্ট্রীর দোকানও আছে।

20250415_202107.jpg

20250415_202112.jpg

যাইহোক ,চেনা পরিচিত দোকান বলে ওদের সামনে যেতেই ওরা মোটামুটি চারটে মিষ্টির ব্যাগ ধরিয়ে দিল। ওদের ফ্যামিলিতে তিনটে ব্যাগ গেছে ।আর আমি আমাদের জন্য একটা ব্যাগ নিয়েছি। এর সাথে ওখানে আইসক্রিম দেওয়া হচ্ছিল ।কোনো রকমে আইসক্রিম নিয়ে বেরিয়ে আসতে যাচ্ছিলাম। তখন মনে পড়ল কাকিমার জন্য একটা শাড়ি দেখা যাক। পহেলা বৈশাখের আগে মা আর বাবাকে আমি শাড়ি আর শার্ট কিনে দিয়েছিলাম ।কাকিমা শাড়ি কিনতে এবং পড়তেও বেশ ভালোবাসে।

20250504_135431.jpg

তাই হঠাৎ করেই মনে হলো কাকিমাকে একটা কিছু কিনে দিই। জোর করে টানতে টানতে নিয়ে গেলাম শাড়ির সেকশানে। কাকিমা কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। আমি আমার পছন্দ মতোই একটা হ্যান্ডলুম শাড়ি কাকিমার জন্য পছন্দ করলাম। কিছুতেই আমার কাছ থেকে নেবে না। বলতে লাগলো তুমি আরো বড় হও, চাকরি করো, অবশ্যই নেব ।আমি বললাম ,আমি টাকা রোজগার করি কাকিমা ,আমি এটুকুনি তোমাকে দিতেই পারি। এই সব হতে হতে কাকিমার জন্য একটা শাড়ি কেনা হয়ে গেল।

20250415_204020.jpg

কাকিমাকে কিছু দিতে পেরে আমারও মনটা বেশ ভালো লাগলো। যাই হোক ওখান থেকে সমস্ত কাজ সেরে বেরোনোর সময় আইসক্রিমটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। তারপর দোকানের বাইরে ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ ধরে আইসক্রিম খেলাম। আবার ওখান থেকে চলে গেলাম আর একটা দোকানে।

20250415_205149.jpg

এখান থেকে বেরিয়ে সকলকে টাটা দিয়ে আমি আর আমার পার্টনার আর আমার ভাই মিলে আইসক্রিমের দোকানে চলে গেলাম অর্থাৎ আইসক্রিম পার্লারে ,যেখানে আমরা প্রায়শই বসে গল্প করি আর আইসক্রিম খাই। গিয়ে দেখি আমার পছন্দের ব্ল্যাক কারেন্ট আইসক্রিম সেদিনকে উপস্থিত। তাই সাথে সাথে অর্ডার করে দিলাম ব্ল্যাক কারেন্ট ।যেহেতু অনেক জায়গায় আইসক্রিম খেয়েছি, তাই স্কুপ দেওয়া কুলফি নিলাম।

20250415_210252.jpg

কিন্তু কুলফির ওপর স্কুপ আমি খেতে পারি না ,গলে গলে পড়তে থাকে। তাই আবার একটা বাটি চেয়ে নিলাম ।তারপর নিজেই কেরামতি করে আইসক্রীম এর সাথে কুলফির বিস্কুট মিশিয়ে একটা ডেজার্ট আইটেম তৈরি করে ফেললাম। এসব দেখে আমার ভাই আর আমার পার্টনার খুব হাসাহাসি করছিল ।কিন্তু সত্যি কথা আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, ব্ল্যাক কারেন্ট আইসক্রিমের সাথে কুলফির বিস্কুট টা খেতে দারুন লাগছিল।

1000242208.jpg

ওখানে বেশ কিছুক্ষণ গল্প আড্ডা আর বিভিন্ন ধরনের ছবি তোলা হলো ।তারপর আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বাড়ি এসে এত এত মিষ্টি দেখে আমি অবাক । সত্যি কথা বলতে একসাথে এত এত লাড্ডু দেখে আমার মন ভরতে লাগলো ।আমি যদিও এত বেশি খাই না ।সারাদিনে ঘুরতে ফিরতে লাড্ডু খেতে থাকি ।কিন্তু একবারে কখনোই বেশি লাড্ডু খাই না।।

20250415_210624.jpg

আপনাদের সকলের সাথে আমার নববর্ষের দিনটিকে পুরোপুরি ভাবে শেয়ার করতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে, অনেক ধন্যবাদ আপনাদেরকে।

Sort:  
Loading...
Loading...
 3 months ago 

সত্যি নববর্ষের দিনে রাস্তাতে এত পরিমাণে ভিড় ছিল তা বলার নাই। তবে আমিও যখন যশোশ্বরীতে গিয়েছিলাম তখনও প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় ছিল। নববর্ষের দিন তোমার ভাইদের সকলদের সাথে দেখা হয়েছিল ভালই হয়েছে। ভাই বলতে এখানে তোমার পার্টনারের সাথে। তাহলে মিলে বেশ অনেকক্ষণ সময় কাটিয়েছো। নববর্ষের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার পোস্টটি বাংলা শুভ নববর্ষের উদযাপনে লেখেছেন আসলে হালখাতা মানে মিষ্টি মুখ করা এবং অনেক আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা হওয়া আপনি খুব সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন আপনার আপনজনদের সাথে এবং অনেক কিছু কেনাকাটা করেছেন আইসক্রিম খেয়েছেন আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো এই সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে