আমের গল্প
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমের কথা।
ফলের রাজা আম। আর আমাকে রাজা বলার কারণ আমি হাড়ে হাড়ে টের পাই। আমি এত পরিমাণে আম খেতে ভালবাসি, আপনারা ভাবতেও পারবেন না। আমারও সবথেকে পছন্দের ফল আম। ছোটবেলা থেকেই প্রচুর পরিমাণে আম খায় যখন গরম কাল আসে। গাছে মুকুল হাওয়া থেকে শুরু করে আম ধরা অবধি আমার আর তর সয় না। খালি মনে হতে থাকে ,কবে আমগুলো বড় হবে আর আমি আম খাব।
ছবিতে যে আমগুলো দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো সব আমার বাবার গাছের আম। আমাদের যেখানে মূর্তির কারখানা আছে। বাবা শখ করে সেখানে তিন রকমের আম গাছ লাগিয়েছিল। একটা হিমসাগর, একটা আম্রপালি, আর একটা বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি।
বাবার সখের গাছের চ্যাটার্জি আম
এবার কথা হল ,এই বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি বা চ্যাটার্জি আম ,এ আবার কি রকম আমের নাম!? কিন্তু বাবার কাছ থেকে শুনেছি নার্সারি থেকে কেনার সময় ওরা নাকি আমের নাম এটাই বলেছিল। তাই তবে থেকে বাবা বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি বলেই ডাকে। এ আমের এক হাস্যকর পরিচয়। দেখতে দেখতে গাছগুলো বড় হয়েছে আর প্রত্যেক বছর আমরা এখন আম পাই।
চ্যাটার্জি আমের সাইজগুলো এত বড়। মোটামুটি ১২ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার। বাবা সেদিনকে গাছ থেকে কয়েকটা আম পেড়েছিল। মোটামুটি ৫০টা হবে। সবার বাড়িতে বাড়িতে দুটো করে আম পৌঁছে দিয়েছে। বাবার এই গাছটা নিয়ে খুবই গর্ব। নিজের হাতে যেহেতু গাছটাকে লাগিয়েছে, এই গাছ এত বড় বড় আম দেয়। তাই প্রত্যেক বছর বন্ধুদের এবং কারখানায় যারা কাজ করে সকলকে আমার পিসিদের কে ,বাড়ির আশেপাশের পরিচিতদের বাবা এই আম দেয়।
সেদিন বাড়িতে আনার সাথে সাথে বাবা আমাকে আর ঈশান কে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। আমাদের দেখানোর জন্য বাবা যেন ছটফট করছে।। আমরা ও আমের সাইজ দেখে ভীষণ আনন্দ পেলাম। তারপর যত্ন করে এক জায়গায় সাজিয়ে রাখলাম। আমগুলো পাকার আগেই গাছ থেকে পেড়ে নেয়া হয়েছে। কারণ এর পরে বৃষ্টিতে পোকা ধরে যেতে পারে। সাথে আমার এক মামা ওদের বাড়ির বোম্বাই আমও বেশ কয়েকটা এনে দিয়েছিল।সেগুলোর পাশেই এই আমগুলো সাজিয়ে রাখা হলো। কারখানা থেকে বাবা পাতি লেবুও প্রচুর এনেছিল। সাথে এনেছিল সুপারি।
তার আগেরদিনই আমার পার্টনার তাদের আম গাছের বোম্বাই আম অনেকগুলো দিয়ে গিয়েছিল। ওদের বাড়িতে অনেক ধরনের আম গাছ আছে - বোম্বাই, হিমসাগর,ল্যাংড়া, আম্রপালি।
বিগত কিছু বছরের আমের সিজনে ও যেভাবে আমাদের বাড়িতে আম দিয়ে গেছে, আমাদের বাজার থেকে আম কিনতে হয়নি। সাথে তো আমাদের নিজেদের আমগাছ আছেই। এ কারণেই আরো। গত বছরের একবার ঝড়ে ও তখন বাড়িতে একা, ওর বাবা মা বাকি সবাই কোথায় যেন বেরিয়েছিল। ভীষণ ঝড় হয়েছে। ঝড়ের পরপর বৃষ্টি তখন হালকা হালকা পরছে। ও ওই রাত দুপুরে বস্তা দিয়ে ওদের আম বাগানে ঢুকে , যত আম পড়েছিল, সব কুড়িয়ে আমাদের বাড়িতে বস্তা ধরে দিয়ে গিয়েছিল।
আমার পার্টনারের বাড়ির গাছের বোম্বাই আম
এই যে এত খাটনি করে আম খাওয়াচ্ছে, কি করে একটা মেয়ে ফাসবে নাহ, আপনারাই বলুন। আমি আম খেতে ভালবাসি বলে, আমের সিজনে কতবার যে এসে এসে আম দিয়ে যায়, এবারেও ১৭ কেজির বেশি আম দিয়েছে।
এর সাথে লিচু কাঁঠাল এগুলো তো রয়েছে। ওদের বাড়ির পিছনের দিকে অনেকগুলো আমের গাছ,লিচু গাছ, কাঁঠাল গাছ। মাঝেমধ্যে ,আমি সবাইকে বলি ,এত গাছ দেখেই হয়তো বিয়ে করতে রাজি হয়েছি।
যাইহোক আজকে আমের গল্প অনেকখানি বললাম। পরবর্তীতে আরো কিছু কথা শেয়ার করব। আজকে এখানেই শেষ করছি।
তোমার মত আমি আম খেতে ভীষণ ভালোবাসি। এ বছরের তোমাদের গাছে একটাও আম খেতে পাইনি। বাড়িতে বসে বসে একাই আম খাচ্ছ। তোমার পার্টনার শুধু তোমাকে আমি দিয়ে যাচ্ছি আমাদের তো আর দেবেনা। যাই হোক খেতে না পারলে আমাকে দিয়ে যেও। তোমার আম দেখে আমারই লোভ লাগছে।