জন্মদিনের খাওয়া দাওয়া ( ট্রিট)
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন।। আজকে আমি সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি বাবার বন্ধু বিজয় কাকার জন্মদিনের মুহূর্তগুলো।
কিছুদিন আগে আমি একটা পোস্টে শেয়ার করেছিলাম যে উত্তম বাড়িতে নারায়ণ পূজার প্রসাদ খেতে গিয়ে হঠাৎ করেই বিজয় কাকাকে জন্মদিনের সারপ্রাইজ দেয়া হয়েছিল। যখন আমরা জানতে পেরেছিলাম সেদিনকে বিজয় কাকার জন্মদিন। তাই বিজয় কাকা সেদিনকেই বলে রেখেছিল কোন এক রবিবার দেখে বিজয় কথা আমাদের সকলকে ট্রিট দেবে।
সেই মতোই এপ্রিল এর ২৭ তারিখ , রবিবার বিজয় কাকা আমাদের সকলকে নিমন্ত্রণ করে। বিজয় কাকার গ্রামের বাড়িটা বেশ ভেতরে। কাকা শহরের মধ্যে একটা বাড়িতে ভাড়া থাকে শুধুমাত্র কাকার মেয়ের পড়াশোনার জন্য।। আয়োজনটা গ্রামের মধ্যেই করেছিল । তাই আমাদের সবাইকে গাড়ি করে যেতে হয়েছিল। মোটামুটি ওদের বাড়ি পৌঁছাতে আধা ঘন্টার ওপর লেগে গিয়েছিল। যেহেতু আমরা প্রথমবার যাচ্ছিলাম। আমরা সকলেই ওর শহরের ভাড়া বাড়িতে গিয়েছি কিন্তু গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়নি।।
কাকার বাড়ি যাওয়ার সময় আমরা যে রাস্তাটা ধরে গিয়েছি সে রাস্তাটা পুরোপুরি নির্জন ছিল। চারিদিকে বাঁশ বাগান আর বাঁশ বাগানের বাঁশের ডালগুলো রাস্তার সাথে লুটিয়ে পড়ছে। একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার। যাবার সময় যেমন ভয় লাগছিল তেমন একটা এডভেঞ্চারাস মনে হচ্ছিল। গাড়ির মধ্যে বসেই ভয় লাগছিল তাহলে বুঝতেই পারছেন জায়গাটা কেমন ভয়ানক ছিল। বাবার মুখ থেকে শুনছিলাম দু তিন বছর আগেও ওই জায়গায় ডাকাতি হত। ডাকাতের গল্প শুনতে শুনতে জায়গাটা পাশ করছিলাম।
আসলে কাকার বাড়িতে যাবার তিনটে রাস্তা আছে কিন্তু আমাদের যে রাস্তাটা একটু বড় মনে হয়েছে সেই রাস্তা দিয়েই আমরা ঢুকেছি আমরা বুঝতে পারিনি এই জায়গাটা এতটা নিঝুম হবে না হলে আমরা অন্য রোড ধরতাম। কিছুটা দূর এগিয়ে আস্তে আস্তে লোকালয় দেখা দিতে লাগলো আর সেই মুহূর্তে আমরা হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। সবাইকে জিজ্ঞেস করে করে আমরা পৌঁছে গেলাম কাকার বাড়িতে।
পৌঁছে গিয়েই গ্রামের ভেতরে কাকার এত বড় বাড়ি দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো খুব সুন্দর করে গুছিয়ে বাড়িটা তৈরি করা। বাড়ির পাশেই আর একটা বাড়িতে কাগজ ফুল থোকা থোকা হয়ে ধরেছিল। আমি সাথে সাথে একটা ছবি তুলে নিলাম। গেটের পাশে এরকম কাগজ ফুলের গাছ লাগালে দরজার মাধুর্যতা আরো বেড়ে যায়।
আমি উপরে উঠে গিয়ে দেখি আমার বাবার আরো বন্ধুরা এবং তাদের ছেলে মেয়েরা চলে এসেছে। গিয়ে দেখি পূজা স্বস্তিকা সকলে মিলে বসে গল্প করছে। পূজা আমার প্রায় সমবয়সী। আর স্বস্তিকা ছোট বোনের মত।। যাওয়ার সাথে সাথে বিজয় কাকার বউ অর্থাৎ কাকিমা আমাদের কোলড্রিংস আর পনির পকোড়া দিয়ে গেল ।
আর আমরা জানতে পারলাম সেদিন কে আরো একটা কেক আনা হয়েছে। সাথে বেলুনও আছে। আমি পূজা স্বস্তিকা মিলে বেলুন ফুলিয়ে ঘর সাজানোর প্ল্যান করলাম। সেদিনকে প্রচন্ড গরম ছিল। আমরা বসে বসে কিছুক্ষণ ধরে ওই কাজই করলাম। তারপর সুন্দর করে বেলুন দিয়ে জায়গাটা সাজিয়ে ফেললাম।
কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা ছাদে এসে দেখি বাবা মায়েরা সকলের গল্প করছে। সবাই বড়রা ছাদে বসে রয়েছে আরামে। ঘরের মধ্যে গরম কিন্তু ছাদে খোলামেলা আর বেশ হাওয়া দিচ্ছে।। তাই আমরা সকলে মিলে ছাদেই বসলাম ।সবার মত অনুযায়ী কেক ছাদে নিয়ে আসা হলো।
আমি আর পূজা একে অপরের সাথে বলতে লাগলাম যে ফালতু ফালতু আমরা ঘরটা সাজাতে গেলাম। যাইহোক কি আর করা যাবে বড়রা যা বলছে তাই শুনতে হবে। সত্যি বলতে ওই ঘরের মধ্যে অত গরমে সবাই হাফসে যেত। ছাদে কেক কেটে বরঞ্চ ভালো হয়েছে।
আমরা সকলে মিলে আমাদের সকলের বাবাদের অর্থাৎ বিজয় কাকার সকল বন্ধুদের এক জায়গায় দাঁড় করালাম।। আর সাথে বাচ্চারা ছিল। মা কাকিমারা সকলে সাইড হয়ে গেল আর আমরা মেয়েরাও সাইড হয়ে ছবি তুলতে লাগলাম।।
কাকাকে বাবারা মজা করে জন্মদিনের টুপি পরিয়ে দিল। সবাই মিলে মজা করে কেক কাটলাম। কেক কাটার পরে কেক খাওয়া দাওয়া হল। বাবা জেঠুদের অনেক অনেক ছবি তুলে দিলাম। তারপর সমস্ত কিছু সাইট করে রেখে ওরা খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত শুরু করল। কাকা রাধুনী রেখে দিয়েছিল এত জনা মানুষের রান্না করার জন্য। রাধুনী সমস্ত রকম রান্না কমপ্লিট করে চলে গেছে।।
চেয়ার টেবিল পেতে দেওয়া হল। আমরা বাচ্চারা সবাই বসে পড়লাম আগে। সেদিনকে বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া হল। আমার বাবা যাওয়ার সময় আবার বাটর স্কচ ফ্লেভারের আর কোকোনাট ফ্লেভারের আইসক্রিম এর বার নিয়ে গিয়েছিল। খাবার পরে সকলে সেখান থেকে আইসক্রিম খেয়েছে।
আমরা জন্মদিন উপলক্ষে বিজয় কাকাকে একটা সুন্দর পাঞ্জাবি গিফট করেছি। পাঞ্জাবিটা দেখতে অসাধারণ ছিল। তাড়াহুড়ার মধ্যে আমি সেটা ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছি। তাহলে যাবার দশ মিনিট আগেই কার সাথে বেরিয়ে মার্কেট থেকে পাঞ্জাবি টা কিনেছিলাম। ছবি তোলার কথা তাই অত মাথায় নেই।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা সকলে মিলে নাচানাচি করছিলাম। আমার বাবার দুই বন্ধু জলের বোতল মাথায় নিয়ে ' জামাল কুদু ' গানে নাচ করছিল। আর আমরা সবাই খুব হাসাহাসি করছিলাম। সেদিন যে সবাই মিলে অনেক নাচানাচি হয়েছে আর অনেক হাসাহাসি করেছি আমরা। সময়টা কিভাবে পেরিয়ে গিয়েছে আমরা টের পাইনি। তারপর প্রায় যখন বাজে দেড়টা। তখন আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের তিনটে গাড়ি গিয়েছিল। তিনটে গাড়ি একসাথে আমরা যাত্রা শুরু করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
কাকার বাড়িতে খাওয়া দাওয়া আর মজার মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে বেশ ভালো লাগলো।।
जन्मदिन की बधाई
এ বছরে তোমাদের তো জন্মদিন বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠান লেগেই রয়েছে। কিছুদিন আগেই শুনেছিলাম তুমি উত্তম জেঠুর বাড়িতে গিয়ে বিজয় কাকার জন্মদিনের সেলিব্রেট করেছিলে। সমস্ত ঘটনায় পোষ্টের মাধ্যমে পড়েছি। বিজয় কাকার বাড়ি গ্রামের অনেকটা ভিতরে এটাও শুনেছিলাম। তোমাদের সুত্রেই এই সব কিছু জানা। আমার পোস্ট করে আরো অনেক কিছুই জানতে পারলাম। সেদিন সকলে মিলে গিয়ে খুব আনন্দ মজা করে কাটিয়েছো। জীবনে এইসব আনন্দ মজা করা গুলো ই স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। বিজয় কাকার জন্মদিনে সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।