কেনাকাটা উইথ হবু সাসুমা
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আবারো কেনাকাটার গল্প।কেনাকাটার গল্প শুনতে শুনতে আপনারা বোর ফিল করতে পারেন, কিন্তু আমিই বা কি করি, পূজোর আগে কেনাকাটা করতে করতে আমিও পাগল হয়ে যাচ্ছি ।তবে হ্যাঁ বোর হচ্ছি না। কারণ কেনাকাটা করতে আমার ভালই লাগে।
আজকের কেনাকাটার কিন্তু স্পেশাল ব্যাপার আছে। কারণ আজকে যার সাথে আমি কেনাকাটার গল্প শেয়ার করতে চলেছি ,তিনি হলেন আমার পার্টনারের মা ।যাকে নিয়ে গতদিন পোস্ট করেছিলাম।
যাইহোক অনেকদিন ধরেই কাকিমা বারবার বলছে আমার সাথে একটু শপিং করতে বেরোবে। আসলে গত বছরগুলির মধ্যে ২-৩ বার আমার সাথে শপিংয়ে বেরিয়ে কাকিমা বুঝতে পেরেছে আমার চয়েজ টা বেশ ভালো। আর কেনাকাটার দিকে আমি একদম পাকাপোক্ত। তাই এবারে পূজোর কেনাকাটা করতে কাকিমা আমাকে বারবার যেতে বলছিল কাকিমার সাথে ।
কেনাকাটা বলতে কাকিমার পরিবারের সকলের জন্য। আর তার ওপর আমার আর ভাইয়েরও জিনিসপত্র কিনবে ঠিক করেছিল, তাই আমাকে তো সেখানে লাগবেই।
প্রথমে আমি আর কাকীমা মিলে চলে গিয়েছিলাম কৃষ্ণনগরে মার্কেটে একটা নতুন দোকান হয়েছে সেই দোকানে। দোকানটার নাম আগমনী বাসন্তী। ১৫ ই আগস্ট দোকানটা ওপেন হয়েছে, শুনেছি এদের মেন ব্রাঞ্চ রয়েছে কাঁচরাপাড়াতে।
আমারও ইচ্ছা করছিল ওই দোকানে কি কি আছে না আছে ,একটু ঘুরে দেখার ।মায়ের সাথে তিন চারদিন আগেই একবার ঘুরে গিয়েছিলাম ,আর বাড়ি গিয়ে কাকিমাকে বলেছিলাম যে সত্যিই ওদের শাড়ির কালেকশনটা ভালো। তাই প্রথমেই কাকিমার ইচ্ছায় ওই দোকানেই প্রথম ঢুকলাম, যেহেতু আমাদের অনেকগুলো শাড়ি কিনতে হবে।
ওখান থেকে কাকিমা প্রায় চারটি শাড়ি কিনলো। আর আমি একটা কাকিমাকে শাড়ি গিফট করেছি। তারপরে ওদের তিন তলা জুড়ে কি কি আছে, সেগুলো আমি দেখছিলাম। কাকিমা ওখানে বাচ্চাদের সেকশনে গিয়ে ঈশানের এবং কাকিমার ভাইয়ের ছেলের জামা কাপড় দেখছিল। তারপর লেডিস সেকশনে গিয়ে আমার চুড়িদারও দেখছিল। কিন্তু সে সবকিছু আমার পছন্দ হয়নি ,কাকিমারও পছন্দ হয়নি। আমাদের দুজনেরই মনে হয়েছে এই দোকানটাতে শাড়ির কালেকশন সবথেকে ভালো।
এইজন্য ওখান থেকে বেরিয়ে আমরা চলে গেলাম আরও কেনাকাটাতে ,কিন্তু অন্য দোকানে। অন্য দোকানে যাওয়ার আগে একটু পেট পুজো করে নিলাম। কাকিমা আমাকে ভেজ প্যাটিস ,আইসক্রিম আর কোল্ড ড্রিংকস খাওয়াল। বারবার পেস্ট্রি খাওয়ার জন্য বলছিল ,কাকিমা ভালো করেই জানে আমি পেস্ট্রি খেতে ভালবাসি, কিন্তু আমি ভাত খেয়ে গিয়েছি বলে, পেটটা ভরা ছিল, তাই কিছু খেতে পারিনি এর বেশি।
বেরিয়েছিলাম দুটোর সময়, আর ফেরার টাইমিংটা লাস্টে বলছি। এখন বললে আপনারা মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন।
খাওয়া দাওয়া পেট পুজো হয়ে যাওয়ার পর চলে গেলাম পাঞ্জাবির দোকানে, কাকিমা শ্বশুরের জন্য ধুতি পাঞ্জাবি কিনলো। তারপর চলে গেলাম আমাদের চির পরিচিত ঠিকানা অর্থাৎ যশোরেস্বরী বস্ত্রালয়,যেখান থেকে আমরা সব সময় জামা কাপড় কিনে থাকি।। তার মাঝে একবার আমার জামাকাপড় দেখতে ঢাকেশ্বরীতেও গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানেও কালেকশন ঠিকমত পছন্দ হয়নি।
যশোরেস্বরী তে গিয়ে প্রথমেই ঈশানের জন্য কাকিমা জিনিস কিনে নিল । হলুদ রঙের শার্ট আর একটা জিন্সের প্যান্ট কিনলো। আর সাথে কাকিমার ভাইয়ের ছেলের জন্য জিনিস কিনলো। তারপর লেডিস সেকশনে এসে আমার চুড়িদার দেখতে থাকলো।। আমার যেটা পছন্দ হয় , কাকিমার সেটা পছন্দ হয় না। আসলে আমি ভীষণ হালকা জিনিস পছন্দ করি, হালকা রঙের জিনিসও পড়তে ভালো লাগে। কিন্তু কাকিমা বারবার বলতে লাগলো, একটু ডিপ কালারের নিতে, পুজোতে দিচ্ছি, এত হালকা কালার কেন দেখছ।
সে তো একেবারে পছন্দ হয় না। বারে বারে এটা ওটা ধরে আমার গায়ে দেখতে থাকে কাকিমা। কিন্তু অবশেষে একটা সময় পর একটা চুড়িদারে এসে দুজনেরই মতের মিল খেলো। এবং অবশেষে ওই চুরিদার টাই নেয়া হয়েছে আমার জন্য। সত্যিই অসাধারণ লেগেছে চুড়িদারটা ,আমার নিজের যেমন পছন্দ হয়েছে, কাকিমারও তেমন পছন্দ হয়েছে। কালারটা হালকা যেমন আমি চাইছিলাম আর কাজটাও বেশ সুন্দর যেমন কাকিমা চাইছিল, একটু অন্য ধরনের ,একেবারে অন্যরকমের।
এসব করতে করতে বেজে গিয়েছিল সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা যখন আমরা বাড়ি ফিরেছি। মাঝে বাবা দুই বার ফোন করে বলেছে, তোরা কি পুরো মার্কেট কিনে নিয়ে চলে আসছিস।!!!
যখন তিনটে ব্যাগ বড় বড় হাতে নিয়ে বাড়ি ঢুকলাম, বাবা নিজেও অবাক হয়ে গেছে যে আমরা এত এত মার্কেট করেছি।সেদিন প্রায় ষোলো হাজার টাকার কাছাকাছি মার্কেট হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জিনিসই আমার আজকের লেখাতে বাদ পড়ে গেল । ওই যে বললাম, এত জিনিস কিনেছি ছবি তোলার মতন অবস্থায় ছিলাম না।।
মেয়েরা মার্কেটে বেরোলে দিন থেকে রাত হয়ে যায় কখন, বোঝা যায় না । আর সত্যি কথা বলতে মেয়েরা এসবে এক্সপার্ট ।মেয়েদের কখনোই শপিং করতে বোর ফিল হয় না বা বিরক্ত লাগে না। আমার ক্ষেত্রে তো আমি অতিরিক্ত জিনিস দেখি, তারপর বেছে বেছে জিনিস কিনি। যতক্ষণ না পছন্দ হচ্ছে কোথাও থেকে জিনিস নিই না ।
বাড়ি আসার পর আমার পার্টনারের বাবা আমাদের বাড়ি থেকেই কাকিমাকে নিয়ে চলে গেল। আর যখন আমাদের বাড়ি এসেছিল ,আমি মিষ্টি খেতে ভালবাসি বলে আমার জন্য ইয়া বড় বড় ছানার জিলিপি নিয়ে এসেছিল। সাইজটা কিন্তু অনেকটাই মজার দেখতে।। অনেক খুশি হয়ে গিয়েছিলাম।যাইহোক আজকে এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকবেন।