আমার ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত থাকার প্রধান কারণ।
Photo edited by canva
আসসালামু আলাইকুম,
আজ আর জানতে চাইবো না,আপনারা সবাই কেমন আছেন কারণ, প্রতিদিনই এক কথা লিখতে ইচ্ছা করে না, অন্য এক দিন জেনে নিবো,আমি কেমন আছি সেটাও না বলি তবে, ২৪ টা ঘন্টা যে আমার কেমন ভাবে কাটছে তার বিশ্লেষণ আজ আমি করবো এই।
বেশ কিছুদিন আগে দ্বিতীয় বারের মতো ছেলের মা হয়েছি দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে,আর দেখতে দেখতে ছেলের বয়সও পাঁচ মাস হতে চলেছে মনে হচ্ছে এই তো দুইদিন আগে হসপিটাল থেকে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, সারারাত টেনশন এ ঘুমাতে পারি নি এত ছোটবাবু নিয়ে আমি কি করবো,,। কিভাবে সবকিছু ম্যানেজ করবো আর দেখতে দেখতে কত বড় হয়ে গেলো মাশাআল্লাহ।
সময় যে আমার কিভাবে কাটছে ছোট বাবু নিয়ে তা একটু হলেও আন্দাজ করতে পারছেন, ভাইরে ভাই কি বলবো সারাক্ষণ ছেলের পিছনেই আমার লেগে থাকতে হয়, গত তিন মাস একটু বিশ্রাম নিতে পারতাম তবে, এখন আবার আরেক জালা ডানে বামে ঘুরতে শিখেছে, তাই সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হয় শুধু কি এই কাজ,, না,,
সেই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে, শুরু হয় নিয়ম করে প্রত্যেক টা দিন, ২ ঘন্টা পর পর খাবার খাওয়ান, ঢেকুর তলা, বেশ সময় নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া, ওঠা মাত্রই কোলে নেওয়া, এখন চারদিকে দেখতে শিখেছে, সে কোলে উঠতেই বেশি পছন্দ করে এবং কোলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করো তাহলেই ভালো, শুধু কি হাটা একটু ঘুরাও বেশ পছন্দ করে একদমই কান্নাকাটি করেনা,,কিন্তুু একটা নিয়োজিত গৃহিনীর পক্ষে কি এটা সম্ভব।
এরপরে ঠিকমতো শরীরের যত্ন নেওয়া তেল দেওয়া, ব্যায়াম করানো, গোসল করানো,তাছাড়া প্রসাব, টয়লেট এগুলো তো আছেই বলা যায় না কখন হবে, সব সময় নিজেকে রেডি রাখতে হয় বাবুর জন্য। একটা মা একটা সন্তানকে বড় করার জন্য কত কিছু করে তাই না তার সবকিছুই বিসর্জন দিয়ে দেয় শুধু তার বাচ্চার দিকে তাকিয়ে।
মাঝে মাঝে তো আমার এমনও বেলা যায় ঠিকমতো খাবারটাও খেতে পারি না। দেখা যায় খেতে বসেছি অর্ধেক শেষ হওয়ার আগেই কান্নাকাটি শুরু, সে কারো কাছেই থাকবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি কোলে না নিবো, সেই খাবার দেখে বাবুকে ধরতে হয়,আর যখন থেমে যায়, পরে দেখা যায় ওই খাবার খাওয়ার আর আগ্রহ থাকে না,শুধু আমি না প্রত্যেক টা মায়ের তার সন্তানের ক্ষেত্রে এমনটাই করে।মা না হলে মনে হয়, মা হওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারতাম না। আর মায়ের ভালোবাসা ও বুঝতে পারতাম না। তাইতো মা শব্দ অনেক ছোট হলেও এর মূল্য বিশাল।
আমি অনেক সন্তানদের বলতে শুনেছি বড় হওয়ার পরে তার মা-বাবার দিকে আঙুল তুলে বলে তুমি আমার জন্য কি করেছো,তখন একটা মা কে সে যে কতটা আঘাত করে তা বোঝার ক্ষমতা সে রাখে না,,তাই প্রত্যেকটা সন্তানের উচিত তার বাবা-মার দিকে খেয়াল রাখা ভালোবাসা কখনো বাবা মায়ের মনে আঘাত দিয়ে কথা না বলা। কারণ, আমি আমার এই ২৪ বছর বয়সের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি,
এই পৃথিবীতে আপনার সবচেয়ে আপন মানুষটি যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে আপনার মা, আপনার যত বড় খারাপ পরিস্থিতি আসুক যত বড় সমস্যায় আপনি পড়ুন না কেন, পাশে শুধু একমাত্র মা কে এই পাবেন, তার ভালোবাসায় কোন স্বার্থ থাকে না মায়ের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
যাই হোক কথা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে,, এইতো হয়তো খুবই ছোটো ভাবে বর্ণনা দিয়েছি তবে ২৪টা ঘণ্টার মধ্যে নিজের জন্য এক ঘন্টা তো ভালো কথা ১০ মিনিট মনে হয় খুঁজে বের করতে পারিনা, যখন একটু ফ্রি সময় পাই তখনই আবার ফোনটা নিয়ে বসে লেখার জন্য,,
হয়তো আপনারা বুঝতেই পারছেন, ছোট বাবু ঘরে থাকা মানে একটা মাকে কতটা ব্যস্ত করে রাখতে পারে। আর এর মাঝেও চেষ্টা করছি অক্লান্ত পরিশ্রম করার। আচ্ছা আমি যে এত কত কষ্ট করছি এই কষ্টের ফল কি হবে আমি জানিনা তবে, আমার জন্য কি সফলতা আছে তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ভুগছি ,,,। এত এত কিছুর পরে নিজে দিয়ে কিছু করার ইচ্ছা নিজেকে কোথাও নিয়ে দাঁড় করানো এটা নিয়ে একটা চিন্তার বিষয়,,,।
তবে আজ একটা সত্যি কথা বলি দিনশেষে আমি নিজেকে অনেক সুখী একটি ব্যক্তি মনে করি কারণ, এই বয়সে সৃষ্টিকর্তা আমাকে সব দিয়েছে বাবা মা শ্বশুর শাশুড়ি, আর আমার পার্টনার সে তো অসম্ভব ভালো মনের একটা মানুষ, আর তারপরে আমার এই কলিজা দুই টা ছেলে মেয়ে দিন শেষে এই দুই টা মুখের দিকে তাকালেই আমার শান্তি। একটা কথা কি জানেন আমি কিছু পারি আর না পারি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে বেশ ভালই পারি। তবে সবশেষে অবশ্যই আলহামদুলিল্লাহ,,।
যাইহোক সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর দোয়া করবেন,, এত এত ব্যস্ততার মাঝে যেন আমি আপনাদের মাঝে একটু দেখা দিতে পারি।
Your content has been successfully curated by our team via @ ngoenyi.
Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.