মেজ মামীর বাড়ি যাওয়ার মূহুর্ত
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।
গতকালকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম কিছু কেনাকাটার মুহূর্ত। কেনাকাটা করেছিলাম মেজো মামার শশুর বাড়িতে নিমন্তন্ন খেতে যাব বলে। আমাদের বাড়ি থেকে শ্বশুর , শাশুড়ি,বর কেউ যায়নি। তাই শুধু আমাকে যেতে হয়েছিল। এছাড়া মামার বাড়িতে থেকে দুই মামা, দিদা আর মামার মেয়ে এই কজন মিলে যাবার কথা হয়েছিল। মা আসবার কথা ছিল। কিন্তু মায়ের গতকালকে চাপরা ষষ্ঠী নামে ব্রত ছিল। মা কিছু খেতে পারবে না অতদূর থেকে জার্নি করে এসে আবারো বাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল। তাই আমরাই মাকে আসতে বারণ করেছিলাম। গতকালকে সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গিয়েছিল ।কারণ কোথাও যাবার কথা শুনলেই আমার একদমই ভালো লাগেনা। মনে হয় কিভাবে যাব হয়তো শরীর খারাপ করবে। এই সবই চিন্তাভাবনা হয়। তাই গতকাল রাতে ঠিকমতো ঘুমও হয়নি। দূরে কোথাও যেতে আমার ভীষণ ভয় লাগে।
গতকালকে খুব সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। খুব তাড়াতাড়ি স্নান সেরে যাবার জন্য তৈরী হয়ে নিয়েছিলাম । মামীর বাড়ি রানাঘাট থেকে অনেকটাই ভিতরে যাতায়াতের ভীষণ অসুবিধা। রাস্তা ভীষণ খারাপ।তাই মেজো মামা গাড়ি ঠিক করে দিয়েছিল আমাদের যাবার জন্য। আমরা সকলে মিলে রেডি হয়ে বেরিয়ে ছিলাম বেলা 11:30 টা নাগাদ কৃষ্ণনগর থেকে রানাঘাটের রাস্তা খুবই ভালো যেতে কোনরকম অসুবিধা হয় না। তবে বাড়ি থেকে বেরোনো মাত্রই শুরু হয়েছিল ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। কিছু জায়গায় ঝম ঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। আবার খানিকটা গিয়ে কোথাও রোদ। আবার কোথাও আকাশে কালো মেঘ জমে রয়েছে। বৃষ্টি দেখতে দেখতে বেশ খানিকটা রাস্তা পৌঁছে গিয়েছিলাম। আবহাওয়াটা ও বেশ ভালো ছিল। গরম একটু কম ছিল।
কারণ রোদ উঠলে কোথাও যেতে ভীষণ কষ্ট হয়। তবে মেন রোড হলে ও আশেপাশের কিছু গ্ৰাম্য মানুষ গরু,ভেড়া, ছাগল এই সব পোষেন। দুপুরের দিকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। ওরা পশু যখন তখন রাস্তায় ছুটে আসে।আর এই পশু দের বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। আমাদের সাথে ও এইরকম কিছু হয়েছিল। ফাঁকা রাস্তা গাড়ি খুব দ্রুত গতিতে চলছিল।তারই মধ্যে আমাদের গাড়ির সামনে একটি ছাগল চলে আসে। যখন ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি দ্রুতগতিতে চলে ।ঠিক তখনই গাড়ির সামনে যদি কোন মানুষ কিংবা পশু চলে আসে তাহলে এমনি দুর্ঘটনা ঘটবে। কারণ সেই মুহূর্তে গাড়ি কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। তবুও আমাদের যে ড্রাইভার ছিল উনি ছাগলটিকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল ।ইতিমধ্যেই এমন জোরে ব্রেক কষে ছিল যে গাড়ির মধ্যেই আমার দিদা হঠাৎ করে পড়ে গিয়েছিল ।কারন আমরা বুঝতে পারিনি। হঠাৎ করে কি হলো ভেবে চমকে আঁতকে উঠেছিলাম। দিদা এমনিতেই অসুস্থ মানুষ। আমরা কোথাও নিয়ে যেতে চাই না ।যেহেতু গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল ।তাই দিদাকে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলাম । গতকালকে বড়ো একটা দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি।
সমস্ত বাঁধা কাটিয়ে যখনই মামীর বাড়ি পথে প্রবেশ করব ।সেই রাস্তাটা ভীষণই খারাপ ।তাতে আবার বৃষ্টি হয়েছে, গর্তগুলো জলে ভরে রয়েছে। কখন জানি না গাড়ির চাকা পড়ে গাড়ি উল্টে যেতে পারে। এটা ভেবেই ভয় করছিল। কিন্তু এবারের ড্রাইভারটা ভীষণই ভালো। উনি অনেক রাস্তা চেনেন ।তাই আমাদের খুব ভালো একটা রাস্তা দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। যেতে গিয়ে প্রায় তিন থেকে চারটে রেলগেট পড়ে। সমস্ত রেলগেট পার করে এসে একটা রেলগেট পড়ে গিয়েছিল। সেখানে খানিকক্ষণ আটকে গিয়েছিলাম। এরপর আবারো গাড়ি দ্রুত গতিতে চলে গিয়েছিলাম সেই গ্রামে। যাইহোক গাড়িতে বসে মনে হয়েছিল রাস্তা যেন শেষ হচ্ছে না ।এরপর শেষমেশ যেই ঢুকলাম মামির বাড়িতে সেই শুরু হলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি।
আমরা ঢোকা মাত্রই যেহেতু বৃষ্টি শুরু হয়েছিল ।তাই ওখানকার সকলে বলছিল কৃষ্ণনগরের লোক বৃষ্টি নিয়ে আসলো। কারণ আমরা যাওয়ার আগে পর্যন্ত রৌদ্র ছিল। ওনারাও ভয় পাচ্ছিল যাতে বৃষ্টি না আসে। কিন্তু শেষে বৃষ্টি হয়ে সেটাই হল ।এই হল আমাদের যাবার মুহূর্ত । এর পরের মুহূর্তটা পরের পোস্টে আপনাদের মাঝে শেয়ার করে নেব।
সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আবারও নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হব আগামীকাল।
Thank you 🙏