বরের সাথে শপিং করার মূহুর্ত
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারও নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে।
দুর্গাপুজোর মানেই প্রচুর কেনাকাটা। কেনাকাটার শেষ নেই। গতকাল ছিল দুর্গাপূজার শুভ ষষ্ঠী। বেশ কয়েকদিন ধরে শরীরটা একদমই ঠিক নেই। তবুও সন্ধ্যের পর শাশুড়ি মা বারবার করে রিকোয়েস্ট করছিল বরের সাথে শপিং করার জন্য। আমি একদমই যেতে রাজি হচ্ছিলাম না।এ বছরে আমি তেমন কেনাকাটা করিনি। আমার বর সবকিছু সবার শেষে করে। কেনাকাটা থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিস আমার বরের দেরি হয়। গতকাল শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গিয়েছিলাম বরের সাথে কেনাকাটা করতে। আসলে এত পরিমাণে ঠান্ডা লেগেছে বাইরে বেরোলে কারো সাথে কথা বললেই কাশি শুরু হয়ে যাচ্ছে। শপিংমলে গিয়ে যদি কোন অসুবিধায় পড়তে হয় ।তাই বারবার যেতে বারণ করছিলাম। কিন্তু পুজো শুরু হয়ে গেছে । আমাকে ছাড়া উনি আবার একদমই কেনাকাটা করতে যেতে চান না।
যাই হোক বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা টোটো ধরে নিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে যাব বলে। এই শপিং মলটি আমাদের বাড়ি থেকে পাঁচ থেকে সাত মিনিটের হাঁটা পথ। টোটোতে যেতে এক থেকে দেড় মিনিট সময় লাগে। বাড়ির কাছে শপিংমল কিন্তু কখনো সেভাবে যাওয়া হয় না ।গত বছরেই এই শপিং মলটি উদ্বোধন হয়েছে। শপিং মলটির নাম বাজার কলকাতা। শপিং মল টি ভালোই বড় ।কালেকশন ও প্রচুর রকমের থাকে ।তবুও সেভাবে আমাদের ঢোকা হয় না। আমার বরের তো আবার এই বাজারটি ভীষণ পছন্দ। আমার বর ভীষণ অলস।তাই সোজাসুজি চলে গিয়েছিলাম বাজার কলকাতাতে। পুজো উপলক্ষে প্রত্যেকটা শপিং মলের মত এই শপিং মলটা সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে।শুধুমাত্র ছেলেদের জামা -প্যান্ট নেওয়া হবে বলে তাই সরাসরি ছেলেদের কালেকশন দেখতে উপরে চলে গিয়েছিলাম । নিচে শুধুমাত্র মেয়েদের কালেকশন ছিল।সেখানে গিয়ে দেখলাম একটা ননদের ছেলে এই শপিংমলে কাজ করছে।
ওকে দেখা মাত্রই আমার বর তার পছন্দমত কালেকশন গুলো খুঁজে দিতে বলল । নিজের জামা প্যান্ট নিজের খুঁজে নিতেও অলসতা।কিন্তু পুজোর কেনাকাটা সকলের প্রায় শেষের মুখে। তবুও শপিংমলে প্রচন্ড ভিড়। হয়তো সকলেই আমার বরের মত। তাই শেষে কেনাকাটা করছে।এখন কি আর সমস্ত কালেকশন পাওয়া যায়। না ভালো কালেকশন পাওয়া যাবে। না ঠিকঠাক সাইজে আসবে। হয়তো যেটা পছন্দ হচ্ছে তার ঠিকঠাক সাইজ পাওয়া যাচ্ছে না। নয়তো কালার পছন্দ হচ্ছে না। এই করতে করতে প্রায়ই আধা ঘন্টা কেটে গিয়েছিল ।বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় মামার সাথে একটা লজেন্স মুখে দিয়ে গিয়েছিলাম যাতে কাশি না হয়। এদিকে বরের কোন জিনিস পছন্দই হচ্ছিল না। আর আমার মুখের ভিতর লজেন্স প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল ।লজেন্স শেষ হয়ে গেলেই কাশি শুরু হয়ে যাবে। আমি তো ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। তাই বরকে আরো তাড়াতাড়ি নেওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করলাম।
যাই হোক অনেক খোঁজাখুঁজির পর পছন্দমত দুটো প্যান্ট সাইজে মিলেছিল ।এরপর ওই দুটো প্যান্ট নিয়েছিল। এদিকে এদিকে ওনার আবার ব্লেজার ভীষণ পছন্দের। এদিকে কোন সময় তাকে পড়তে দেখা যায় না। শুধুমাত্র কেনে আর একে ওকে দিয়ে দেয়। এটাই হলো উনার স্বভাব। এর আগে তিনটে ব্লেজার কিনেছিল ।তিনজন পড়তে দিয়েছিল। সেগুলো দেওয়া হয়েছিল আর তারা ফেরত দেয়নি। যাইহোক দেখে হয়তো কালেকশন পছন্দ হয়নি। তাই ব্লেজার আর নেওয়া হয়নি। এদিকে জিন্সের প্যান্টের কাউন্টারে সমস্ত পছন্দ অনুযায়ী প্যান্ট বিক্রি হয়ে গেছে। যেগুলো ছিল সেগুলো দেখে পছন্দ হলো না। তাই বলল কালীপুজো অথবা জগদ্ধাত্রী পুজোতে এসে কিনে নিয়ে যাবে।
কেনাকাটা হয়ে গেলে দুজনে মিলেই বেরিয়ে পড়েছিলাম বাড়ি ফেরার জন্য ।আমি বায়রা করলাম অনেকদিন হাঁটা হয় না ।চলো একটু হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরি। আমার বর আবার একদমই হাঁটতে চায়না । তবুও দুজনে মিলে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম ।এই ছিল দুর্গাপুজোর শেষ মুহূর্তে কেনাকাটার গল্প।
আজ এইখানে শেষ করছি। আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির আগামীকাল ।সকলে ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন।