মিরিক ভ্রমণ
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরো নতুন একটি ব্লগ শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
যারা আগেও আমার পোস্ট পড়েছেন তারা জানেন যে আমাদের কলেজ থেকে গত বছর এক্সকারশনে নিয়ে গিয়েছিল দার্জিলিংয়ে। সেই দার্জিলিং ভ্রমণের বেশ কিছু স্মৃতি মধুর মুহূর্ত আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করেছি। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে সেই ভ্রমণেরই শেষ স্পট অর্থাৎ মিরিক ভ্রমণের কিছু স্মৃতি শেয়ার করার জন্য। মিরিক, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত একটি পর্যটন কেন্দ্র। সমতল থেকে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রটি বহু পর্যটকের মন কাড়ে। তাই প্রতিবছর হাজারে হাজারে পর্যটক এখানে এসে ভিড় জমায়।
দার্জিলিং ভ্রমণের শেষ দিনে আমরা খুব সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়েছিলাম আরো কিছু স্পট ঘুরে দেখার জন্য। হোটেল থেকে বেরিয়ে চা বাগান, নেপাল বর্ডার, পাইন বন ও আরো কিছু জায়গা পরিদর্শন করার পর দুপুর নাগাদ আমরা গিয়ে পৌঁছই মিরিক। উল্লেখিত জায়গাগুলির অভিজ্ঞতা আমি আগেই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। তাই আজ আর সেই জায়গা গুলো সম্পর্কে কিছু লিখলাম না। যেহেতু একসঙ্গে সমস্ত গাড়িগুলো হোটেল থেকে ছাড়েনি অর্থাৎ যারা আগে নিজেদের টিম নিয়ে গাড়ির কাছে এসেছিল তাদেরকে নিয়ে তাদের গাড়ি আগে বেরিয়ে পড়েছিল। এইভাবে প্রত্যেকটা গাড়ি একেক সময় মিরিক পৌঁছেছিল। অর্থাৎ আমাদের কোন বন্ধু আগে পৌঁছেছিল আবার কোন বন্ধু পরে পৌঁছেছিল। তাই প্রথমেই বলে রাখি আমি আজকে আপনাদের সাথে যে ছবিগুলো শেয়ার করব সেগুলো কিন্তু আমার ফোন ক্যামেরায় তোলা নয়। আমাদের এক বন্ধু ও তার টিম অনেক আগেই মিরিক পৌঁছে গিয়েছিল। তখনও হালকা কুয়াশা ছিল। আজকের ছবিগুলো তার ক্যামেরায় তোলা। ছবিগুলোর মত জায়গাটাও কিন্তু খুবই সুন্দর।
আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই তখন দুপুর বারোটা হবে। রোদের তাপ ছিল প্রচন্ড। প্রথমে সেখানে প্রবেশ করেই একটা লেক দেখতে পাওয়া যাবে। আমরা সেখানে বেশ কিছু ফটো তুলেছিলাম। তবে মিরিক পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রচন্ড গরম লাগতে শুরু করেছিল। যেহেতু সকাল বেলায় বেরিয়ে গিয়েছিলাম আর সকালে দার্জিলিংয়ের টেম্পারেচার অনেক কম ছিল যার ফলে প্রচন্ড শীত করছিল, তাই আমরা সকলেই বেশ কয়েকটা শীতের পোশাক পরে নিয়েছিলাম। তবে আস্তে আস্তে যত নিচে নামছিলাম ততই যেন গরম লাগতে শুরু করছিল। তবে সব জামার নিচে যেহেতু থার্মাল পরা ছিল তাই আরো অনেক বেশি অস্বস্তি হচ্ছিল। থার্মাল শীতের সময় শরীরকে অনেক গরম রাখে তবে মিরিকে আসার পর প্রচন্ড গরম লাগছিল। তাই আমার অত রোদের মধ্যে ঘুরতে একদমই ইচ্ছে করছিল না। তার ওপর সেখানে ভিতরে প্রবেশ করলে কোন গাছের ছায়াও ছিল না। সামনে একটা বড় মাঠ ছিল।
উপরের ছবিতে যে লেকটি দেখতে পাচ্ছেন, সেটা কিন্তু প্রধান লেকটি নয়। এটা একটা ছোটো জলাশয় মতো। তবে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলে সোজা গিয়ে একটা ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো একটা সুন্দর স্ট্যাচু দেখতে পাবেন। তারপর আরেকটু হেঁটে সামনের দিকে গেলে চোখে পড়বে সেই সুন্দর লেকটি। বেশ খানিকটা পায়ে হেঁটে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন, লেকের ওপরে থাকা একটা সুন্দর ব্রিজ। সেই ব্রিজ ধরে আরো সামনে কিছুতে এগিয়ে গেলে দেখতে পাবেন লেকের ওপারের ঘন পাইনবন। তবে আমাদেরকে যেহেতু সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তাই আমরা ব্রিজ পেরিয়ে ওপারের পাইন বনে যেতে পারিনি। যদিও যেতে বড্ড ইচ্ছে করছিল। তবুও প্রচন্ড রোদের জন্য শরীরও চলছিল না। অনেকেই হয়তো সেই সময়ের মধ্যেই দৌড়ে ওই দূরের পাইন বন থেকে একবার ঘুরে এসেছিল। তবে আমাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়নি।
আমার যে বন্ধুটি এই ছবিগুলো দিয়েছে তাদের গাড়ি যেহেতু অনেক সকাল সকাল পৌঁছে গিয়েছিল তাই ওরা এই জায়গাটা বেশ উপভোগ করেছে। সেই সাথে ওরা নাকি দূরের ওই ফাইন বলে গিয়ে ঘোড়াতে সাফারি করেছে। যদিও ওদের এত তাড়াতাড়ি মিরিক পৌঁছানোর কারণ হলো ওদের গাড়ির বেশিরভাগ জনই আগে দার্জিলিং ঘুরেছে। তাই অন্য স্পটগুলোতে ওরা খুব বেশি সময় অপচয় করেনি। সেই সাথে ওদের গাড়িটি সবার আগে ছেড়েছিল। তাই ওরা খুব ভালোভাবে মিরিক ভ্রমণ করেছে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
SPOT-LIGHT TEAM: Your post has been voted on from the steemcurator07 account.
Thank you so much.