মায়ের জন্মদিন উদযাপন
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন আরো একটি গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
গত পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আমার শ্বশুর মশায়ের জন্মদিনের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছিলাম। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আমার মায়ের এই বছরের জন্মদিনের কিছু বিশেষ মুহূর্ত নিয়ে। ২রা আগস্ট ছিল আমার মায়ের জন্মদিন। আমি আপনজনদের ছাড়াই মায়ের জন্মদিন কিভাবে সেলিব্রেট হল সেই গল্পই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
যারা নিয়মিত আমার পোস্ট করেন তারা জানেন, আমার মা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকে। তাই চাইলেই সব সময় মাকে কাছে পাই না। জীবন তো অনেক জটিল তাই ইচ্ছে থাকলেও সব সময় উপায় হয়ে ওঠে না। গত সাত-আট বছর ধরে মা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকে। আগে বছরে দুইবার এলেও এখন বছরে একবারই আসে। বছরে ওই একবারই মাকে যা কাছে পাই। তাছাড়া সারা বছর চাইলেও মাকে ছুঁয়ে দেখার কোনো উপায় থাকে না। মাঝে মাঝে মাকে খুব মিস করি। কোনো একটা বিষয় যেটা হয়তো মা ছাড়া আর কাউকে বলে স্বস্তি পাওয়া যাবে না, সেটা যখন সরাসরি সামনে থেকে বলতে পারিনা তখন বড্ড কষ্ট হয়।মাও সে সব বোঝে তবে পরিস্থিতি উভয় পক্ষকেই খুব কঠিন করে দিয়েছে।
প্রতিবছরই রাত বারোটার সময় মাকে কল করে উইশ করি। তবে এই বছর বিভিন্ন কারণে অত্যাধিক চাপের মধ্যে দিয়েই দিন কাটছে। তাই মায়ের জন্মদিনের দিনটা মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গিয়েছিল। প্রতিবছর যেহেতু রাত বারোটার সময়তেই মাকে উইশ করি তাই না হয়তো, রাতে অপেক্ষা করেছিল। তবে আমার দিক থেকে কোনো কল না যাওয়াই, মা ভেবেছিল আমি হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছি তাই মাও আর আমাকে কল করেনি। সকালে মা নিজেই ফোন করে বলেছিল, "আজকের দিনটা ভুলে গেলি? আজকে আমার জন্মদিন, উইশ করলি না তো?" বিশ্বাস করুন এটা শুনে খুব খারাপ লেগেছিল। কারণ এত সবকিছুর মাঝে মায়ের জন্মদিনের দিনটাই ভুলে গেলাম! যাইহোক মায়েরা এইসব ছোটোখাটো বিষয় মনের মধ্যে পুষে রাখে না। আর তাছাড়া পরীক্ষার কারণে আমি যে একটু চাপের মধ্যে আছি তা মা নিজেও জানে। তাই মা বিশেষ কিছু মনে করেনি।
আমরা ফোনের এপার থেকে সরাসরি মায়ের জন্মদিন উদযাপন করতে না পারলেও, মা যেখানে থাকে, তারা মাকে এই একটা দিনে খুব স্পেশাল ফিল করাই। সেটা দেখে আমাদের খুব ভালো লাগে। এই বছরও মনে করে মায়ের জন্মদিন সেলিব্রেট করার জন্য একটা কেক কিনে এনেছিল। সেই সাথে মায়ের জন্য একটা শাড়ি ও কিনেছিল গিফ্ট করার জন্য।
তারপর মা আমাদের ভিডিও কল করেছিল। ফোনের এপার থেকেই আমরা ভিডিও কলে মাকে উইশ করছিলাম। তারপর মা কেক কাটছিল। আর আমাদের বাড়ির ছোট্ট সদস্য, মানে আমার ভাইপো তো ঠাম্মিকে খুব ভালোবাসে। তাই ঠাম্মির জন্মদিন শোনা মাত্রই, ঠাম্মি কখন কেক কাটবে সেই নিয়ে ভীষণ উত্তেজিত ছিল। তারপর মা কেক কাটল। আর আমার ভাইপো কেক খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিল। সৌভাগ্যবশত আমার শ্বশুর মশায়ের জন্মদিনের কেক খানিকটা বাড়িতে এনেছিলাম। তাই ভাইপো কে বুঝিয়েছিলাম যে ঠাম্মি আমাকে ওর জন্য কেক পাঠিয়ে দিয়েছে। শ্বশুর মশায়ের জন্মদিনের কেক খেয়েই ও শান্ত হয়েছিল। মায়েরও নিশ্চয়ই আমাদেরকে ছেড়ে একা একা জন্মদিন পালন করতে মোটেও ভালো লাগছিল না। মায়েরও হয়তো ইচ্ছে করছিল এক ছুটে আমাদের কাছে চলে আসুক। তবুও হাসিমুখে সবটা মেনে নিয়েছে মানুষটা।
এইভাবেই আপনজনদের ছেড়ে মায়ের এই বছরের জন্মদিনটা কাটলো। বেশ কয়েক বছর আগে একটা জন্মদিনে মাকে আমরা কাছে পেয়েছিলাম। সেইবার আমরা মায়ের জন্মদিন পালন করেছিলাম। পরে অন্য কোনদিন আপনাদের সাথে সেই দিনের কিছু স্মৃতি শেয়ার করব। প্রতিবছর যেন তোমার জন্মদিন পালন করতে পারি মা। তুমি খুব ভালো থেকো, সুস্থ থেকো। তোমাকে ছাড়া দিন কেটে যায় ঠিকই কিন্তু তুমি কাছে থাকলে সবটা যতটা সহজ হয়, তোমাকে ছাড়া সবটা ততটাই কঠিন মনে হয়।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Muy linda tu publicación. Es hermoso celebrar los cumpleaños de nuestros seres queridos.
0.00 SBD,
0.03 STEEM,
0.03 SP
muchas gracias