এই বছর শিক্ষক দিবসে আমার পাওয়া কিছু গিফ্ট

in Incredible India5 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরো অন্য একটি গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

গত ৫ই সেপ্টেম্বর ছিল ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর জন্মদিন। সেই দিনটি জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। যদিও ৫ই অক্টোবর আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে আমাদের দেশে আমরা ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটিকেই শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করে থাকি। প্রতিবছরই শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে বাচ্চারা আমাকে তাদের পছন্দমত উপহার দেয়। আমিও আমার সাধ্যমতো তাদেরকে কিছু খাওয়ানোর ব্যবস্থা করি। আজকে আমি আপনাদের সাথে এই বছর আমার বাচ্চা গুলোর দেওয়া কিছু উপহার শেয়ার করব। প্রত্যেকের উপহারই আমার কাছে অনেক মূল্যবান। এই উপহার গুলোর সাথে কত আদর, ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে।

1000303726.jpg

1672344690977_010726.jpg

আজকে আমি আমার কিছু স্টুডেন্টদের দেওয়া গিফ্ট শেয়ার করব। সবার প্রথমে শেয়ার করি ঈশানের দেওয়া গিফ্ট। ঈশানকে আমি এই বছর থেকে পড়ানো শুরু করি। যদিও আপনারা অনেকেই জানেন ওর দিদি মানে @isha.ish এর বাড়িতে আমার অনেক বছর ধরেই যাতায়াত রয়েছে। আগে ঈশাকে আমি পড়াতাম। সেই সূত্রেই ওদের বাড়ি যাওয়া। তারপর মাঝে প্রায় সাত বছরের গ্যাপ। ২০১৮ সালে ঈশা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে। তারপর থেকে আমার আর ওদের বাড়ি যাওয়া হয়নি। তবে এতগুলো বছর পর আবার ঈশানকে পড়াতে যাওয়ার ফলে পুনরায় ওদের বাড়িতে যাতায়াত শুরু হয়েছে।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে ঈশান আমাকে একটা সুন্দর ডায়েরি আর পেন উপহার দিয়েছে। শিক্ষক দিবসে এই দুটি উপহারের কোনো বিকল্প হয় না। আমরা সবাই জানি, " Pen is mightier than sword" মানে পেন হলো তরবারির থেকেও শক্তিশালী। এছাড়া আরো একটি কথা প্রচলিত আছে ,সেটি হল -- "Paper is more patience than man" এই কথার অর্থ হলো পেপার মানুষের থেকেও বেশি ধৈর্য শীল। তাই এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে এই দুটি উপহার সত্যিই খুব পছন্দ হয়েছিল।

1000303728.jpg

1672344690977_010726.jpg

এরপরে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার সর্বকনিষ্ঠ স্টুডেন্টের দেওয়া একটি গিফ্ট । ওর নাম বেদান্তিকা। নামটাই কি ইউনিক তাই না! ওকে আমি গত তিন বছর ধরে পড়াচ্ছি। এই তিন বছরে ও আমার পছন্দ-অপছন্দ এত সুন্দর ভাবে বোঝা গেছে, তাই ভাবনার বাইরে। ছেলে বাচ্চাদের তুলনায় মেয়ে বাচ্চাদের পড়াতে গেলে একটু বেশিই কথা বলা হয়ে যায়। তাই হয়তো পড়াতে পড়াতে বিভিন্ন রকম গল্প করতে করতে ও আমার পছন্দ ও অপছন্দ অনেকটাই বুঝতে পারে।

তাই টিচার্স ডে গিফ্ট কিনতে গিয়ে ও ওর মাকে বলেই রেখেছিল মিসের জন্য ব্যাগ কিনতে, কারণ আমি ব্যাগ খুব পছন্দ করি। তাই ওর মা ওর ওপরেই দায়িত্ব দিয়েছিল আমার জন্য একটা ব্যাগ পছন্দ করার। ব্যাগ কিনতে গিয়ে ওর মাথাতে এটাও ছিল, যে আমি সুতোর কাজ একটু বেশি পছন্দ করি। তাই ব্যাগ দেখতে দেখতে একটা সুতোর কাজ করা ব্যাগ চোখে করতেই ও ঠিক করে ওই ব্যাগটাই আমার জন্য কিনবে। এই সকল গল্প আমি পরে ওর মায়ের কাছ থেকে শুনেছিলাম। সত্যি কথা বলতে গেলে ব্যাগ সত্যিই আমি খুব পছন্দ করি। যে কোন জায়গায় গেলে আমি আর কিছু কিনি কিংবা না কিনি একটা ব্যাগ অবশ্যই কিনি। আর সেটা যদি হয় সুতোর কাজ করা তাহলে তো সেটা পছন্দ না হয়ে উপায় নেই। তাই ওর দেওয়া এই গিফ্ট টা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। নৈহাটি যাওয়ার দিন এই ব্যাগটাই আমি ব্যবহার করেছিলাম।

1000303730.jpg

1672344690977_010726.jpg

এরপর আমি আপনাদের সাথে আমার আরো দুটো স্টুডেন্টদের পরিচয় করাবো। এরা দুই বোন। দুজনের নাম হলো, সমর্পিতা আর বিদিশা। দুজনে পড়াশোনায় খুব ভালো। এরা অনেক ছোটো থেকে আমার কাছে পড়ছে। দেখতে দেখতে ছটা বছর হয়ে গেল ওদের বাড়ি পড়াতে যাচ্ছি। ওদের বাড়ি থেকে আমি অনেক ভালোবাসা ও সম্মান পাই। কাকিমা ও কাকু আমাকে খুব ভালোবাসে।

ওরা প্রতিবছরই কোনো ওয়াল হ্যাঙ্গিং গিফ্ট করে। তবে প্রতিবছরই আলাদা আলাদা রকমের হয়। আমি এই ওয়াল হ্যাংগিং গুলো অনেক পছন্দ করি। সমস্ত গিফট গুলোই আমি গুছিয়ে রেখে দিয়েছি, শ্বশুর বাড়ি গিয়ে ঘর সাজাবো বলে। এতগুলো বছরে অনেকগুলো গিফ্ট জমে গিয়েছে। এই বছরে ওরা আমাকে একটা রাধা কৃষ্ণের ওয়াল হ্যাংগিং গিফ্ট করেছে। আমি ঠাকুর-দেবতা পছন্দ করি তাই এটাও আমার খুব ভালো লেগেছে।

1000303734.jpg
1672344690977_010726.jpg

এতগুলো বাচ্চার ভালোবাসা আমি একটি পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করতে অক্ষম। তাই আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার বাকি লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...