আবেগ ও বিবেকের দ্বন্দ্ব
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভাল আছেন। আজকে আবারও চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরো একটি নতুন বিষয় শেয়ার করার জন্য। আশা করছি অন্যান্য পোস্টের মত এই পোস্টটি ও আপনাদের ভালো লাগবে।
আমরা মানুষরা প্রকৃতির সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ। এক কথায় বলতে গেলে ভগবানের সৃষ্টি সবচেয়ে উন্নত প্রাণী হল মানুষ। তাই মানুষের যেমন বিবেক আছে, ঠিক তেমনি আবেগও আছে। এই দুইয়ের সমন্বয়েই মানবদেহ তৈরি হয়। এই আবেগ ও বিবেক আমাদের জীবনকে পরিচালনা করে। তারা একে অপরের পরিপূরক হলেও কখনো কখনো তারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আমাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে।
এই আবেগ ও বিবেক সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে আবেগ কী? সেই প্রশ্নের উত্তরে খুব সহজভাবে আমরা বলতে পারি, আবেগ হলো মনের এক স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আমরা আমাদের বিভিন্ন অনুভূতি যেমন আনন্দ,রাগ, অভিমান, দুঃখ ইত্যাদি সহজেই প্রকাশ করতে পারি। এই আবেগ অনেক সময় এতটাই দৃঢ় ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে সেই মুহূর্তে কোন যুক্তিই কাজ করে না। প্রচন্ড ভাবাবেগে গিয়ে আমরা যুক্তিতর্কের বাইরে গিয়ে অনেক সময় অনেক ভুল কাজ করে থাকি। উদাহরণস্বরূপ আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি, যেমন কম বয়সে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়লে, তাদের বাবা-মা কিংবা গুভজনেরা তাদেরকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করুক না কেন, সেই বয়সে তাদের আবেগ এতটাই প্রবল থাকে যে কারোর কোন যুক্তিতর্ক তারা বোঝার চেষ্টা করে না। আবার অন্য একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানো যেতে পারে, যেমন কারোর কোন প্রিয়জন কোন দোষ করলে তখন ভাবাবেগের ফলে মানুষ অনেক সময় নিজের প্রিয়জনদের দোষ দেখতে পান না। এইভাবেই আবেগ আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে আবেগ ক্ষণস্থায়ী। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে কার জন্য প্রয়োজন মানসিক স্থিরতা। নিজের মনকে স্থির করার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। নইলে এই আবেগ আমাদেরকে অনেক ভুল কাজের সাথে যুক্ত করতে পারে।
Link
এবার আসা যাক বিবেক এর ব্যাপারে। বিবেক হলো, মনের এমন এক দৃঢ়শক্তি যা আমাদেরকে ঠিক, ভুল বিচার করতে শেখায়। এটি আমাদের মনে ন্যায়-অন্যায় বোধ জাগ্রত করে নৈতিক মূল্যবোধ শেখায়। যখন কেউ কোন অন্যায় কাজ করে তখন আমাদের বিবেক আমাদেরকে সংকেত পাঠায় যে সেই কাজটা ভুল।
অনেক সময় আমরা এই আবেগ আর বিবেকের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ি। তবে আবেগ আর বিবেক যদি নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু করে সেক্ষেত্রে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। তখন আমরা ঠিক করতে পারি না যে আমাদের কোনটা করা উচিত। যেমন উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে আমরা বলতে পারি, দেখা গেল ক্লাসে পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমাদের কোন এক বন্ধু চিটিং করে লিখছে। তখন আপনার মধ্যে আবেগ এবং বিবেকের দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যাবে। একদিকে আপনার আবেগ আপনাকে বলবে, "সে তো আমার বন্ধু, তাই তার সম্পর্কে টিচারের কাছে অভিযোগ করা ঠিক হবে না, তাতে আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হতে পারে।" আবার অন্যদিকে আপনার বিবেক আপনাকে বলবে যে, "না, পরীক্ষায় চিটিং করা একেবারেই উচিত নয়। এইভাবে চিটিং করে সে তো বেশি নাম্বার পেয়ে যাবে।" এই ভাবেই অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে।
সবশেষে বলবো আবেগ ও বিবেক দুইই আমাদের জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। তাই এই দুটো জিনিসকেই ভারসাম্যের মধ্যে রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে আবেগ না থাকলে আমরা তো যন্ত্রের মত আচরণ করব। আবার যদি বিবেক না থাকে তাহলে আমরা হয়তো পশুর মত আচরণ করব। তাই উন্নততর প্রাণী হিসেবে আমাদের উচিত আবেগ ও বিবেককে নিয়ন্ত্রণ করা। এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষার এবং সঠিক ভাবনা চিন্তার।
Link
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
The TEAM FORESIGHT has supported your post. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags
Thank you so much.