কলেজে আমাদের Farewell Day
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
বেশ কয়েকদিন ধরে কলেজের বিভিন্ন প্রোজেক্ট লেখা ও পরীক্ষা নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলাম তাই নিয়মিত পোস্ট শেয়ার করতে পারছিলাম না। তবে এবার থেকে আশা করি প্রতিদিন আপনাদের সাথে আমার জীবনের ছোটো ছোটো গল্প শেয়ার করতে পারব।
গতকাল ছিল আমাদের d.el.ed কলেজে annual function । সেই সাথে আরো কতগুলো অনুষ্ঠান একইসাথে সেরে ফেলা হয়েছে। যেহেতু আর কিছুদিন পরেই আমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজো আসতে চলেছে তাই সেই উপলক্ষ্যে আমাদের কলেজে 'আগমনি' উৎসবও গতকালকেই পালিত হয়েছিল। এবং তার পাশাপাশি একই সাথে ছিল নবীন বরণ এবং ফাইনাল ইয়ার এর স্টুডেন্টদের ফেয়ারওয়েল এর অনুষ্ঠান। আমরা এই বছর ফাইনাল ইয়ার দিলাম। তাই আমাদের গতকাল ফেয়ারওয়েল দেওয়া হয়েছিল। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার গতকালের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করব।
গতকাল আমার অনেকগুলো পড়ানো ছিল। যেহেতু পরীক্ষার কারণে বেশ কয়েকদিন ছুটি নিয়ে নিয়েছি তাই গতকালকে আমাকে পড়াতে যেতেই হত। আবার কলেজেও যেতে হতো কারণ বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানোর এই মুহূর্ত গুলো হয়তো আর জীবনে কখনো ফিরে পাবোনা। কাল সকাল বেলায় পড়াতে চলে গিয়েছিলাম। সকাল সাতটা থেকে পৌনে নয়টা পর্যন্ত প্রথম বাড়িতে পড়ানোর পর আবার চলে গিয়েছিলাম দ্বিতীয় বাড়িতে পড়াতে। প্রথম বাড়ি থেকে দ্বিতীয় বাড়ি যেতে সময় লেগেছিল ১৫ মিনিট মতো।সেখানে নটা থেকে পৌনে এগারোটা পর্যন্ত পড়িয়ে ছিলাম। যেহেতু আমার পরীক্ষার পরে গতকালকেই আমি প্রথম এই দুটো বাড়িতে পড়াতে গিয়েছিলাম তাই দুটো বাড়ি থেকেই শিক্ষক দিবসের উপহার আমাকে দিয়েছিল।
তারপর ১১ টার মধ্যে আমি বাড়ি চলে এসেছিলাম। আগের দিন রাতেই আমি ঠিক করে রেখেছিলাম কোন শাড়ি পরবো। প্রতিবার শাড়ি পরে কোথাও যাওয়ার হলে বৌদিই আমাকে শাড়ি পরিয়ে দেয়। আমি একা একা এর আগে কখনো শাড়ি পরিনি। তবে আমার একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল যে আমি আগে থেকে বৌদিকে বলে রাখিনি যে পরের দিন আমার কলেজের শাড়ি পরে যাওয়ার কথা আছে। যেহেতু প্রত্যেকদিন বৌদি ওই টাইমটাই বাড়িতেই থাকে তাই আমি আর আগে থেকে বলার প্রয়োজন বোধ করিনি। তবে বাড়িতে এসে দেখলাম বৌদি সেই সময়ে দাদার সাথে এক জায়গায় যাচ্ছে। আর আমার তখনও স্নান করতে হতো, তাই বৌদি আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিতে পারেনি।
প্রথমে বেজায় রাগ হচ্ছিল নিজের ওপরেই যে আগে থেকে কেন বৌদিকে বলে রাখলাম না। তবে পরে নিজের রাগ সংবরণ করে ভাবলাম আমি তো জানি কিভাবে শাড়ি পরতে হয়, তাহলে একবার চেষ্টা করেই দেখা যাক। অগত্যা একা একাই শাড়ি পরার চেষ্টা করলাম। যেহেতু শাড়িটা খুব সফট ছিল তাই পরতে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি। প্রথমবার একা একা শাড়ি পরেছিলাম। তাই খুব ভালো হয়নি, তবুও আমি স্যাটিসফাই ছিলাম। আর গতকাল খুব গরম পড়েছিল, তাই সাজতে একেবারেই ভালো লাগছিল না। কোনরকম শাড়ি পরে, একটা কানের দুল, টিপ আর লিপস্টিক দিয়ে চলে গিয়েছিলাম কলেজের উদ্দেশ্যে।
বাসস্টপে গিয়ে ১০ মিনিট দাঁড়াতে হয়েছিল। তারপর বাস পেয়ে গিয়েছিলাম। বাসে করে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে কলেজে পৌঁছতে। বাসে খুব বেশি ভিড় ছিল না। তবে সিট পাইনি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছিল। যেহেতু শাড়ি পরে খুব একটা বেশি বেরোনো হয় না, তাই বেশিক্ষণ শাড়ি পরে থাকতে খুব অসুবিধা হয়। যাইহোক, সেই দিন সৌভাগ্যবশত কলেজের সামনেই বাসটা দাঁড়িয়ে ছিল। তাই শাড়ি পরে আর হাঁটতে হয়নি। অন্য দিনগুলোতে, কলেজের আগে যে বাস স্টপ আছে সেখানেই নামিয়ে দেয়, কারণ আরো অনেক প্যাসেঞ্জার থাকে যারা সেখানে নামে। আর যদি সেখানে নামার মত কোন প্যাসেঞ্জার না থাকে তাহলে পুরো কলেজে সামনেই নামিয়ে দেয়। গতকাল আগের বাসস্টপে নামার মত কেউ ছিলনা।
আমি বারোটা নাগাদ কলেজে পৌছাই। কলেজে পৌঁছেই চলে গিয়েছিলাম কলেজের হল ঘরে, যেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে দেখি ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে।
আজ এখানেই শেষ করছি। গতকালের বাকি গল্প আমি পরবর্তী পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Thank you so much 🙏