গ্রীষ্মকালীন একটি দুপুরের চিত্র।

in Incredible India5 months ago
1000001486.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,
ইদানিং গরম পড়তে শুরু করেছে, তাই বাইরে বেরোনো বড্ড মুশকিল। তবে হঠাৎ মনে হলো আজ একটু বাইরে বেরোনো। প্রায় দুপুর বারোটায় বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলাম তখন দেখলাম আমার ছোট্ট ভাইয়েরা গাছের ছায়ায় বলে খেলছে।

1000001473.jpg

দিনকে দিন ছোট থেকে বড় সকলেই যেন সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। একটা অদৃশ্য গণ্ডি যেন আমাদের শিশুদেরকে ও আবদ্ধ করে রেখেছে। এই বয়সে আমরা দলবেঁধে মাঠে খেলতে যেতাম। এখন খেলার জায়গা হয়তো আগের মতো ফাঁকা নেই তবে নেই বললে ভুল হবে। এই আমার ছোট ভাইয়েরা দলবেঁধে বাইরে না গিয়ে ঘরের সামনের রাস্তাতেই খেলছে।

কিছুক্ষণ যেন শৈশবের সময়ে ফিরে গিয়েছিলাম। ওহ! আর ফিরে পাবো না ঐ সময়টা। আমাদের হৈ হুল্লোড়ে মায়েরা ও ঘরে থাকতে পারতো না। এমনকি দলীয় বন্ধুর ঘাতটি থাকলে টেনে নিয়ে আসতাম সেই দলে। মানুষ কেমন যেন রোবট হয়ে যাচ্ছে। সেই চাঞ্চল্যকর আনন্দঘন পরিবেশ এখন বিরল। বিশেষ করে আমাদের পাড়ায় তো দেখাই যায় না।

1000001474.jpg
1000001475.jpg

এই সজনে ডাটা গাছটি আমাদের সার্বজনীন পূজা মন্দিরের সামনেই। যে গাছে এবার মোটামুটি বেশ সজনে ডাটা দেখা যাচ্ছে। আমি মন্দিরের মাঠে হাঁটা হাঁটি করার সময় এটা দেখেই এগিয়ে এসেছিলাম ছবি তোলার জন্য। আমাদের পাড়ায় প্রায় প্রতি বাড়িতেই সজনে ডাটা গাছ রয়েছে।

এমনকি আমাদের ও আছে। আমাদের একটি গাছের সজনে ডাটা প্রতি বছর বিক্রি করে বেশ ভালোই একটা অর্থ আমাদের ঘরে আসে। যদিও অন্য বছরের তুলনায় কম হয়েছিল তবে বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় সেইটা বুঝতেই পারি নি।

আপনারা কি সজনে ডাটা খেতে পছন্দ করেন?

আমার খুব বেশি পছন্দ এমনটা না তবে অপছন্দ ও করি না। পাশাপাশি এই সজনে ডাটা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

আপনাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ অর্থ দিই। আমার এক বড় মা যিনি দীর্ঘ দুই বছর ধরে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি ভারতের বিখ্যাত ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রায় ছয় মাসের মতো। এমনি আমি নিজেও সেখানকার এক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দাদার সাথে কথা বলে জানতে পারি যে এই সজনে ডাটার পাতা কেউ নিয়মিত খেলে ঐ ব্যক্তির ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি আমার বড় মা ডাক্তারের দেওয়া খাবারের তালিকা ও অনুসরণ করেন। যে তালিকায় প্রথম নাম্বারেই রয়েছে এই সজনে ডাটার পাতা।

1000001476.jpg

এগুলো কি গাছ আমার জানা নেই তবে আমাদের পাড়ার রাস্তার পূর্ব পাশে বিস্তর জায়গা জুড়ে এটার অবস্থান। এটার ও কোনো না কোনো ভালো দিক তো রয়েছেই। তবে সে থাকুক বা না থাকুক আড্ডা দেওয়ার জন্য মাদুর বা পাটির প্রয়োজন হয় না। এই গাছ গুলো মাটির ওপরে একটা প্রলেপ সৃষ্টি করে। যে কারণে এগুলোর ওপরে বসে বিকেলে আমরা প্রায়ই আড্ডা দিই।

1000001478.jpg

পার্কে যেমন গাছের পাতা ও ডগা কেটে একটা সুন্দর আকৃতি দেওয়া হয়, এটাকে দেখে খানিকটা এরকমই মনে হচ্ছিল। তবে এই দেশী খেজুরের ডগা একটু বেশি পরিমাণেই ছাঁটা হয়েছে। কারণ সাথেই রাস্তা, মানুষের চলাচলে অসুবিধা হতে পারে এটা চিন্তা করেই ছাঁটা হয়েছে।

খেজুর গাছ একদমই নেই বললে চলে। কারণ আমার শৈশবে দেখেছি গাছিরা শুধুমাত্র এই খেজুরের রস নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। এতো পরিমাণে গাছ ছিল ও খেজুরের রস হতো যে কারণে ঐ গাছি অন্য কোনো কাজ করার সময়ই পেতো না। শীত ঋতুতে গাছিদের জীবন জীবিকা ঐ খেজুরের রসের সাথেই সম্পৃক্ত ছিল। এখন খেজুর গাছ ও নেই আর সেই গাছি ও নেই।

পাশাপাশি আমরা পেতাম সুস্বাদু খেজুরের রস ও গুড়। কনকনে শীতে খেজুর রসের পায়েস, আহ! কি স্বাদ! এখন আর পাওয়া যায় না।

1000001479.jpg

আমাদের পাড়ার সব থেকে বড় আকৃতির গাছটি এখন মাটিতে পড়ে রয়েছে। এটা আমার পুরনো বাড়ির এক ঠাকুরদার গাছ যেটার এক সময়ে বাজার মূল্য হয়েছিল ৩৫০০০ টাকা তবে সম্প্রতি ১৭০০০ টাকায় এটাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

এই গাছের যে উপকারী দিক ছিল সেইটা পূরণ করতে হয়তো এখন ১০/১২ টা গাছ লাগাতে হবে কিন্তু ঐ সম মানের হবে না। বৃক্ষ নিধন যেটা আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

1000001480.jpg
1000001483.jpg

এই যে গ্রীষ্মের শুরু, এখন ছোট থেকে বড় সকলেই জলকে যেন অন্য সময়ের থেকে একটু বেশিই গুরুত্ব দিবে। আমার ছোট্ট ভাই যে জল নিয়ে খেলা করতেছিল।

Sort:  
Loading...
 5 months ago 

গ্রীষ্মকাল মানেই হচ্ছে গরমকাল আর এই সময় চারপাশে প্রচুর পরিমাণে গরম এবং পানি একেবারে শুকিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালে শিশু নয় প্রতিটা মানুষের কাছে জল অনেক বেশি প্রিয় হয়ে থাকে অসংখ্য ধন্যবাদ গ্রীষ্মকালের দুপুরের কিছু ফটোগ্রাফি এবং তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য ভালো থাকবেন।