ব্যবহারিক খাতার ড্রইং
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে শেয়ার করতে আসলাম স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি। যেগুলো স্কুল জীবনে আমরা সবাই করেছি। বিশেষ করে নবম-দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় এই কাজগুলো আমাদের সবারই করা লাগত। হয়ত অনেকেই অনুমান করতে পেরেছেন আমি কিসের কথা বলতে যাচ্ছি। সেটা হলো ব্যবহারিক খাতা লিখা। অন্য ভাবে যেটাকে আমরা প্যাক্টিক্যাল খাতাও বলি। কোন ধরনের অনুশীলনের বাস্তব কোন কাজ করে সেটার রিপোর্ট প্রদান করাই এর কাজ। সাবজেক্ট ভেদে আলাদা আলাদা বিষয়ে প্যাক্টিক্যাল করে জমা দিতে হতো। যাদের টপিক্সও আলাদা হতো। প্রতিটা ব্যবহারিক চিত্র সহ উপস্থাপন করা লাগত। যার উপস্থাপন এবং চিত্র যত ভালো হতো তার নাম্বার তত বেশি দিত স্যাররা।
আমি ডিপ্লোমা শেষ করার পর থেকে আর কোন ব্যবহারিক করা বা লিখা হয় না। গত কয়েক দিন আগে আমার একজন ছাত্র নবম শ্রেণিতে পরে। যাকে আমি বর্তমানে টিউশন পড়াই। পড়াতে যাওয়ার পর বললো স্যার আমার একটা কাজ করে দিবেন৷ বললাম বলো কি কাজ। সে বলে আমি চিত্র ভালো অংকন করতে পারি না, আমার ব্যবহারিক খাতায় কয়েকটা চিত্র অংকন করে দিবেন। আমি যেহেতু ছোট বেলাতে ড্রইং কিছুটা শিখছিলাম এজন্য মোটামুটি ড্রইং করতে পারি। আর ছবি আকা আমার একটা পছন্দের কাজ৷ নেশাও বলতে পারেন৷ কিন্তু বর্তমানে সময়ের অভাবে শখের কাজটা করতে পারি না।
আমি বললাম ঠিক আছে, আমাকে দিও আমি সময় করে অংকন করে দিব। সাবজেক্টা ছিল কৃষিশিক্ষা। দুইটা ব্যবহারিকের চিত্র অংকন করা লাগবে। একদিন রাতে সেটা আমার রুমে নিয়ে আসি৷ এরপর পেন্সিল আর খাতা নিয়ে বসি ছবিগুলো অংকন করতে। দীর্ঘ দিন হলো এভাবে প্যাক্টিক্যাল খাতা লিখি না। সেই স্কুল জীবনের কথা মনে পরে গেল। কত বন্ধুর ব্যবহারিক খাতা লিখে দিলাম ছবি অংকন করে দিলাম। আমি ড্রইং করতে পারার জন্য সবাই আমাকে দিয়ে ছবিগুলো অংকন করে নিত। আমিও আনন্দের সাথে সেটা করতাম। এখন সেই দিনগুলো খুব মিস করি৷
ব্যবহারিকের বিষয় ছিল হাতের সাহায্যে মাটির মুট তৈরি করা বা পরিক্ষা। আর একটা ছিল মাটির পাত্র বীজ সংরক্ষণ। এই দুইটা বিষয়ের ছবি অংকন করতে হবে। যদিও ব্যবহারিক খাতার সাথে একটা নোট দেওয়া থাকে। সেখানে চিত্র দেওয়া থাকে। শুধু সেটা দেখে দেখে অনুরূপ অংকন করতে হয়। আমিও ঠিক সেরকমটাই করলাম। নোট দেখে ব্যবহারিক খাতায় সুন্দর ভাবে অংকন করার চেষ্টটা করলাম। যদিও খুব একটা ভালো হবে না জানি দীর্ঘ দিন ড্রইং করা থেকে বিরত আছি। তবুও চেষ্টটা করেছি ভালো করে অংকন করার৷
অংকনের প্রতিটা ধাপ আপনাদের সাথে শেয়ার করার কথা ভেবে ছিলাম কিন্তু ছবি তুলতে ভুলে যাওয়ার কারণে শুধু শেষ মানে অংকনের পর ছবিগুলো তুলেছি। অনেক ছাত্র আছে যারা এগুলো নিজে কখনও করে না সব সময় অন্যদের দিয়ে করায়ে নেয়। বর্তমানে আপনে এমন অনেককেই পাবেন যারা টাকার বিনিময়ে আপনার খাতাগুলো লিখে এবং ড্রইং করে দিবে। আর আগে আমরা এগুলো আনন্দের সাথে অংকন করতাম।
আসলেই স্কুল এবং কলেজ জীবনে ফেলে আসা দিনগুলো সব সময় মিস করি। কতই না সুন্দর ছিল দিনগুলো। খেলাধুলা পড়াশুনা আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা। আর দেওয়া হয় না বন্ধুদের সাথে সেই আড্ডা। সবাই এখন নিজ নিজ জীবন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করে। কেউ কাউকে কখনও খোজও নেয় না। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রযুক্তির অগ্রগতি তে সবাই যেন প্রযুক্তির মধ্যে আমরা বন্দি। সব সময় হাতে ফোন আর নেট দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত। এর বাইরেও যে সুন্দর জীবন যাপন করা যায় সেটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি।
যাই হোক কথা সেদিকে না। আমরাও কারা এভাবে প্যাক্টিক্যাল খাতা নিজে নিজে লিখেছেন৷ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমার অংকন করস ছবিগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি, আশা করি আপনাদের পছন্দ হয়েছে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোন পোষ্ট নিয়ে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.