"কন্যার বিদায় বেলা......................!"

in Incredible India14 days ago

IMG_20250723_195516_359.jpg

IMG_20250723_195516_013.jpg

IMG_20250723_195515_764.jpg

IMG_20250723_195516_512.jpg

IMG_20250723_195516_558.jpg

সময়টা আমাদের জীবন থেকে কত দ্রুত পার হয়ে যায়। দেখতে না দেখতেই শুক্রবার চলে আসে দেখতে না দেখতেই মাস শেষ হয়ে যায়। আবার ঠিক দেখতে না দেখতেই বছর শেষ হয়ে যায়। আমার কাছে মনে হয় এই তো কিছুদিন আগেই জানুয়ারি মাসে এসেছে, কিন্তু কখন যে এই বছরের সাত মাস আমরা প্রায় শেষ করে ফেলেছি। সেটা ভেবেই খুব খারাপ লাগে, কারণ সময়টা তো পার করে ফেলেছি, আমাদের বয়স বাড়ছে মৃত্যুর দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে কিয়ামত অনেক বেশি সন্নিকটে। কারণ আমাদের চারপাশে যা ঘটে যাচ্ছে তার জন্য আমরা কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু তারপরেও সবকিছু প্রকৃতির নিয়মে ঘটে যাচ্ছে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের আল্লাহ তাআলার উপর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। তিনি আমাদের যেমন রেখেছেন আমরা আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

ছোট্ট মেয়েটাকে একটু একটু করে বড় করে পরের ঘরে পাঠানো টা একজন মায়ের জন্য কতটা কষ্টকর। সেটা হয়তো বা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারছি। কারণ আমার মা যখন আমাকে পরের ঘরে পাঠিয়ে ছিলেন। তখন আমার মা সারারাত ঘুমাতে পারেনি একটু পর পর কল করে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন। আমি কেমন আছি কি করছি। আসলে এ পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার পরে যদি কেউ আমাদেরকে ভালোবেসে থাকে, তাহলে হয়তোবা সেটা একমাত্র তিনি যিনি আমাদেরকে জন্ম দিয়েছে। এ পৃথিবীতে সবচাইতে শান্তির জায়গা হচ্ছে মায়ের কোল, যেখানে আপনি না খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারবেন। আপনার কোন সমস্যা হবে না। আপনার সব সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনার মা সবসময় আপনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে।

নিজের ঘরে দীর্ঘ ১৭ থেকে ১৮ বছর বড় হওয়া বাবা মায়ের সবচাইতে প্রিয় কন্যা সন্তান, যখন নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে যায়। সেখানে থাকাটাও কতটা কষ্টকর সেটা হয়তোবা একজন মেয়ে না হলে কখনোই বোঝা যায় না। আসলে সব কিছু যখন আমাদের ধরাছোঁয়ায় থাকে না। তখন আমাদের কিছুই করার থাকে না। এটা নিয়তি আমরা চাইলেও এটাকে কখনোই দূরে ঠেলে দিতে পারব না। মেয়ে বড় হলে তাকে বিয়ে দিতে হবে। সকাল থেকেই মনটা অনেক খারাপ ছিল কারণ যাকে একটু একটু করে বড় করেছে, তাকে এখন অন্যের ঘরে পাঠাতে হচ্ছে। রাত্রে যতটা খুশি ছিলাম সকাল হওয়ার পর থেকে তার চাইতেও বেশি খারাপ লাগছিল। তবে মেয়ের সামনে কোন কিছুই করতে পারছিলাম না।

IMG_20250723_195529_027.jpg

IMG_20250723_195528_239.jpg

IMG_20250723_195528_188.jpg

যখন আমাদের চোখের সামনে থেকে সে একটু দূরে যাচ্ছে, তখন আমি এবং আমার ঘরের অন্যান্য সদস্যের চোখে পানি চলে আসছে। বারবার পানি লুকানোর চেষ্টা করছি কিন্তু জানিনা কেন ভেতর থেকে একটা হাহাকার অনুভব করছি। এরপর দুপুরের পর থেকে আরও বেশি খারাপ লাগা শুরু হয়ে গেল। ছোট ননদ কয়েকবার আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছে। আসলে তার মেয়েটাকে অনেক বকাবকি করেছে ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছে। ভুল ত্রুটি হলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। সবকিছু আজকে যখন তার মনে পড়ছে তখন তার কষ্ট হচ্ছে। তার কান্না দেখে আসলে নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি। তার সাথে আমি নিজেও কিছুক্ষণ কান্না করলাম। আমি নিজেও তাকে অনেক শাসন করেছি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।

IMG_20250723_162032.jpg

কিন্তু মেয়েটা যখন সামনে আসছে তখন সবকিছু ভুলে গিয়ে তাকে আবারও জড়িয়ে ধরছি। আবারো তাকে বলছি পরের ঘরে কিভাবে চলতে হবে সবকিছু কিভাবে সামলে নিতে হবে। দেখতে দেখতে দুপুর পার হয়ে গেল বিয়ে হয়ে গেল সব কিছু একেবারেই কমপ্লিট, এখন হচ্ছে কন্যা বিদায় দেওয়ার পালা যেই সময়টা হয়তোবা কন্যার ফ্যামিলির জন্য অনেক কষ্টকর, সবকিছু লুকিয়ে রাখলেও এই সময়টাতে আসলে চোখের জল কখনোই লুকানো সম্ভব হয় না। তারপর সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম, আমরা সবাই যদি এতটা ভেঙ্গে পড়ি তাহলে ও তো আমাদের কাছ থেকে অনেকটা দূরে চলে যাচ্ছে। ও ভেতর থেকে থেকে আরো বেশি ভেঙে পড়বে। এরপর ওকে বিদায় দিয়ে ঘরে এসে অনেকক্ষণ কান্না করলাম। আসলে মেয়ে হলেও বাবা-মায়ের কাছে থাকে না, ছেলে হলেও বাবা-মায়ের কাছে থাকে না এটা একেবারেই বাস্তব।