হঠাৎ মামাশ্বশুরের বাড়িতে রওনা
আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই আমার ছোট্ট কিন্তু চমৎকার একটি সফরের গল্প। এই সফরটা ছিল অপ্রত্যাশিত তবে মন ভরে দেওয়া মুহূর্তে ভরা। শ্বশুরবাড়ির কাছেই আমার মামাশ্বশুরের বাড়ি। মামাশ্বশুর বললেন বউমা আজ আমাদের বাড়িতে একটু এসো তো কাল তো বাবা চলে যাবে চাকরিতে। তোমরা একটু ঘুরে যাইও। তার ডাকে যেন একরাশ আন্তরিকতা আর ভালোবাসা ছিল।
আমিও আর দেরি না করে রাজি হয়ে গেলাম। আমি আমার হাজব্যান্ড আমার বড় ননাসের ছেলে মিলে তিনজনে প্রস্তুত হলাম,সাথে ছিল আমার মেয়ে মীরা। ছোট্ট একটা ব্যাগে মেয়ের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিলাম। আমরা পায়ে হেঁটেই রওনা দিলাম। খুব বেশি দূর নয় মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা। যতটুকু রাস্তা ছিল মনে হচ্ছিল কতই না সুন্দর। প্রকৃতির এক মায়াবী উপহার। রাস্তার দুই পাশে ছিল খোলা মাঠ আর ঘরের ছায়ায় সাজানো খড়ির গাদা।
সেই খরি যেটা গ্রামের রান্নার জন্য এখনো ব্যবহার করা হয়।আগুন জ্বালানোর জন্য এই খড়ি খুবই দরকারি। এমন নিখুঁতভাবে সাজানো ছিল যেন কেউ যেন শিল্পীর মতো করে গুছিয়ে রেখেছে বিক্রির উদ্দেশ্যে। দেখে মনে হচ্ছিল গ্রামের সাধারণ জিনিসও কতটা সৌন্দর্য ধারণ করতে পারে। আমি আমার হাজবেন্ডকে বললাম দেখেছো কিভাবে এই খরিগুলো পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে। গ্রামের সৌন্দর্য একেকটা কোনায় লুকিয়ে আছে।আমার হাজব্যান্ড তখন হেসে বলল তুমি তো এসব দেখলেই মুগ্ধ হয়ে যাও।
আমার ছোট্ট মেয়েটা সেই মুহূর্তে ছিল একদম খেলাধুলার মোটে। ওর বাবার কোল থেকে নামতে ছিল না। ওর বাবা ও মেয়েকে খুব আদরের সহিত কোলে করে জড়িয়ে ধরেছিল।হঠাৎ পথের ধারে ছোট্ট একটা মাঠ দেখেছে আর সামলাতে পারল না দৌড়ে গেল সেদিকে। আমিও পেছনে পেছনে দৌড়ে গেলাম। শুরু হলো আমাদের মা মেয়ে দুষ্টামি। আমাকে টান দেয় কখনো আবার মাটি থেকে একটা ছোট্ট পাথর কুড়িয়ে এনে বলে আম্মু এটা তোমার জন্য। আমি হেসে বলি আচ্ছা মা এটা আমার গহনা।
আমাদের এই আনন্দের মুহূর্ত গুলো স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে আমি মোবাইল বের করে কিছু সুন্দর ছবি তুলে নিলাম। মেয়ের হাসি দুষ্টামি আর সেই পেছনের খোলা প্রকৃতি সব মিলিয়ে যেন একটা জীবন্ত ছবি ফ্রেম। অবশেষে মামা শ্বশুরের বাড়িতে পৌঁছাতেই উনি খুশিতে বললেন আহা তোমরা আসলা তাতেই তো ঘরটা যেন একেবারে আলোকিত হয়ে উঠলো। উনার কথায় আমাদের মনের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। ঘরে বসে চা আর পিঠা খেলাম নাস্তা হিসেবে। সবকিছু রেডি করে আমাদের সামনে দিল মামি। আপ্যায়ন পেয়ে মনটা ভরে গেল।
এই হঠাৎ ছোট্ট ভ্রমন হয়তো বড় কোনো ভ্রমণ নয় কিন্তু গ্রামের এক টুকরো সৌন্দর্য। প্রকৃতির এবং প্রিয়জনদের সাথে কিছু মুহূর্তে আনন্দ এসব মিলিয়েই তৈরি হয়েছে এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। জীবনটা আসলে এমন ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি রঙিন হয়ে ওঠে। আজকের দিনটা আমার জীবনে স্মৃতির পাতায় রঙ্গিন অক্ষরে লেখা থাকবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র যাত্রার মাঝেই লুকিয়ে থাকে ভালোবাসা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মমতার বন্ধন। এই সফরটা মনে করিয়ে দিল ছোট্ট একটা রাস্তা কতটা আনন্দ দিতে পারে যদি সঙ্গে থাকে প্রিয়জন আর প্রকৃতির ছোয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেকদিন পরে কেমন আছেন?
পোস্টটা পরিবেশ ভালো লাগলো, একদম ঠিক গ্রামের এরকম দৃশ্য সত্যি ভালই লাগে, আর এই লাকড়িগুলো সাজানো দৃশ্যটা কিন্তু বেশ চমৎকার খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে, মিরা তো বাবাকে পেয়ে বড্ড খুশি,, আপনাদের বেড়াতে যাওয়ার এই আনন্দের মুহূর্ত পড়ে আমার বেশ ভালো লাগলো। খুব মিস করি আপনাকে। ভালো থাকবেন পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম।