"কিছু কিছু দিন হঠাৎ করেই আনন্দময় হয়ে ওঠে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে"

in Incredible India9 days ago
IMG_20250912_203305.jpg

Hello,

Hello,

গতকালকের পোস্ট আমি ট্রেনে বসে লিখতে শুরু করেছিলাম এবং আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম পরবর্তী পর্বে জানাবো আমি কোথায় এবং কি প্রয়োজনে গিয়েছিলাম। প্রথমেই বলি আমি গতকাল আমার ওষুধ আনতে গিয়েছিলাম।

অনেকদিন যাবৎই আমি হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাচ্ছি। সেই ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বেশ কিছুদিন ইতিমধ্যেই কেটে গেছে। তবে গরমের কারণে আর বাড়ি থেকে বেরোতে ইচ্ছে করেনি।

গতকাল গিয়ে ওষুধ আনার পাশাপাশি আরও কিছু কাজ করতে পারবো, এমনটা ভেবেই বেরিয়েছিলাম। একটা সময় ছিলো, যখন সপ্তাহের মধ্যে একদিন বাড়ি থেকে না বেরোতে পারলে ছটফট করতাম। তবে আজকাল যদি বাড়ি থেকে বের হতে হয় তাহলে বেশ অলসতা কাজ করে।

IMG_20250913_203702.jpg

যাইহোক সকলের রুটিন মাফিক কাজগুলো শেষ করে, ঠাকুর পূজা দিয়ে, বাড়ি থেকে রওনা হলাম। বাইরে তখন বেশ রোদ্দুর। স্টেশনে গিয়ে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় নি, সাথে সাথে ট্রেন পেয়ে গিয়েছিলাম। মছলন্দপুরে গিয়ে যখন নামলাম, তখনও বেশ রোদ্দুর ছিলো।

IMG_20250912_203717.jpg

টোটো ধরে ডাক্তারের কাছে পৌঁছে দেখি মানুষের বিশাল লাইন। যেহেতু আমার শুধু ওষুধ নেওয়ার ছিলো, ডাক্তার দেখানোর কোনো বিষয় ছিল না, তাই ভেবেছিলাম কাজটা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তবে সেখানে গিয়ে জানতে পারি গত দুদিন ডাক্তার বাবু বসেননি বলে আজ ওষুধ নেওয়ার লাইনটাও অনেক বেশি বড়। একবার ভাবছিলাম নেবোই না, পরে ভাবলাম এতোদূর এসে ফিরে যাওয়াটা ঠিক হবে না। তাই ছাতা মেলে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম।

মোটামুটি ঘন্টা দুই সময় লাগলো আমার ওষুধ পেতে। তারপর সেখান থেকে আমার বান্ধবীকে ফোন করলাম। কারন আমাদের প্ল্যান হয়েছিলো আমি ডাক্তার দেখিয়ে মছলন্দপুর আসবো এবং ও বাড়ি থেকে আসবে কিছু কেনাকাটি করতে। কিছুটা সময় কাটাবো দুজনে। এমনটাই প্ল্যান ছিলো। পিয়ালীকে আসার জন্য বলেছিলাম, তবে ওর ব্যক্তিগত কিছু কাজের কারণে ও আসতে পারবে না তেমনটাই জানিয়ে ছিলো।

IMG_20250912_203730.jpg

যাইহোক আমাদের মছলন্দপুরে নতুন শপিংমল বাজার কলকাতা র সামনে আমি দাঁড়িয়ে রাখির জন্য অপেক্ষা করলাম। ওর আসতে আরও মিনিট দশক সময় লাগলো। তারপর দুজনে মিলে ঢুকে পড়লাম বাজার কলকাতায়। বেশ ভালো কালেকশন ছিলো সেখানে। চুড়িদার, কুর্তি, জিন্স, টপ থেকে শুরু করে ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের শার্ট, টি-শার্ট, জিন্স সব কিছুই ছিলো। তবে বাচ্চাদের সেকশনটা বরাবর আমাকে বেশি আকর্ষিত করে।

IMG_20250912_142106.jpg

IMG_20250912_142100.jpg

IMG_20250912_144152.jpg

IMG_20250912_144138.jpg

IMG_20250912_144013.jpg

IMG_20250912_143829.jpg

সেখানে গিয়েও বেশ কিছুটা সময় কাটালাম। সেখানেই একটা পরিচিত মেয়ের সাথে দেখা হলো। বয়সে ও আমাদের থেকে বেশ ছোটো। ও ওখানেই কাজ করে। তাই ওকে পেয়ে যাওয়াতে অনেকটা হেল্প হলো। আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ও জিনিসগুলো দেখাচ্ছিলো। ওখান থেকে আমি আমার দিদির ছেলে মেয়ের জন্য কয়েকটা গেঞ্জি, প্যান্ট ও টপ নিলাম। আসলে সব সময় পড়ার জন্য আরামদায়ক পোশাকই আমি ওদের জন্য কিনেছিলাম। পুজোর জন্য আলাদা করে কিছু কিনি নি।

IMG_20250912_151745.jpg

যাইহোক এরপর রাখির মুদিখানা দোকান থেকেও বেশ কিছু কেনাকাটা করার ছিলো। তবে তার আগে বেশ খিদে পেয়ে গিয়েছিলো। মছলন্দপুরে যদিও তেমন ভালো কোনো রেস্টুরেন্ট নেই। তবে ছোট্ট একটা দোকান আছে, সেখানে গিয়েই আমরা খাবার অর্ডার করলাম। বিরিয়ানি রাখির ভীষণ প্রিয়। আমার ইচ্ছেই ছিলো ওকে গতকাল বিরিয়ানি খাওয়াবো।

IMG_20250912_153429.jpg
IMG_20250912_152649.jpg

তাই ওর জন্য এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানি, এক প্লেট চাউমিন এবং তার সাথে একটা চিলি চিকেন নিয়েছিলাম। দোকানের বিরিয়ানি আমি পছন্দ করি না। তবে ওকে একপ্রকার জোড় করেই কিছুটা চাউমিন এবং চিলি চিকেন খাইয়েছিলাম। তারপর দুজনে মিলে বহু গল্প করতে করতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করি।

IMG_20250912_152906.jpg
IMG_20250912_152656.jpg

ছোটবেলা থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের জীবন যাপনের কত গল্প যে গতকাল করেছি, তার হিসেব নেই। আসলে পিয়ালী থাকলে আলোচনার বিষয়বস্তু অন্যরকম হয়। তবে যখন আমি শুধুমাত্র রাখির সাথে থাকি, তখন অনেক ব্যক্তিগত কথাও শেয়ার করা হয়। যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর দুজনে মিলে চলে গেলাম মুদিখানা দোকানে।

রাখির কিছু জিনিস কেনা হয়ে যাওয়ার পর, ও ওর বাড়ির জন্য কিছু ফল কিনলো। ততক্ষণে বেলাও প্রায় পড়ে এসেছে। আমাকেও ফিরতে হবে। তাই আবার দুজনে মিলে স্টেশনে এলাম। ও বরাবরই আমাকে ট্রেনে তুলে দেওয়ার পর, নিজে ফিরে যায়। ওকে আগে চলে যেতে বললাম, কিন্তু কথা শুনল না। আমার ট্রেন ছাড়ার পর, ও অটো ধরার জন্য অটো স্ট্যান্ডে গেলো।

IMG_20250912_175401.jpg

আমি যখন দত্তপুকুর নেমে ওকে ফোন করলাম, শুনলাম তখনও পর্যন্ত ওর অটো ছাড়েনি। প্রায় ৪০ মিনিট মতন ও অটোতেই বসে আছে। আসলে প্যাসেঞ্জার না হলে অটো ছাড়তে চায় না, আমাদের ওখানের এটা একটা বড় সমস্যা।

যাইহোক এরপর বাড়িতে এলাম। শপিং করার সময় কিছু ছবি তুলেছিলাম, তবে কি কি জিনিস ফাইনালি আমি কিনেছি, সেগুলো বাড়িতে এসে শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখালাম। আর তার সাথে আপনাদের জন্য ছবিও তুলে রাখলাম।

IMG_20250912_190327.jpg

IMG_20250912_190307.jpg

IMG_20250912_190244.jpg

যাইহোক পূজা শপিং বলে আমার জন্য আলাদা কিছুই নেই, কারণ পূজোর দিনগুলো আমার আর পাঁচটা দিনের মতনই কাটে। আলাদা করে ঠাকুর দেখা, ঘোরার তেমন কোনো প্ল্যান খুব বেশি হয়ে ওঠে না। জানিনা এবার কি হবে, হয়তো বান্ধবীদের সাথে একদিন প্ল্যান হলেও হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। সঠিক জানি না, কারণ সে উত্তর তো ভবিষ্যতের কাছে।

আপাতত কালকের দিনটা আমি বেশ ভালোভাবে কাটিয়েছি, এটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি। জীবন কখন, কোথায়, কিভাবে, থেমে যাবে সেটা আমরা কেউই জানিনা। তাই প্রতিটা দিনকে ভালোভাবে বাঁচার চেষ্টা বোধহয় করা উচিত। গতকালও বসে বসে আমি আর রাখি এ কথাটাই বলছিলাম। মাঝেমধ্যে এমন করে বেরিয়ে পড়লে মন্দ হয় না।

যাইহোক গতকাল ওষুধ নেওয়ার পাশাপাশি কিছু সুন্দর মুহূর্ত কাটালাম বান্ধবীর সাথে, কিছু জিনিস কেনাকাটি হলো। আর জমিয়ে গল্প করার পাশাপাশি পছন্দের খাবারও খেলাম। এইভাবে কাটিয়েছি দিনটা। আপনাদের আজকের দিনটা কেমন কাটলো মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন।
শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...

The picture is so beautiful, the flower photo looks so beautiful♥️🥰

TEAM 8

Congratulations! Your post has been upvoted through @steemcurator08. Good post here should be..

image.png

Curated by : @jyoti-thelight
 4 days ago 

Thank you for your support @jyoti-thelight. 🙏