"বহুদিন বাদে নিজের গ্রামে যাওয়ার অনুভূতি"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা বেশ ভালো কেটেছে।
গতকাল গিয়েছিলাম গ্রামে অর্থাৎ আমার বাপের বাড়িতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাজ নিয়েই। সন্ধ্যার পর থেকে মুষলধারায় বৃষ্টির শুরু হওয়াতে নেটওয়ার্কের ভীষণ সমস্যা ছিলো, যার কারণে গতকাল রাতে আর আমি কোনো পোস্ট শেয়ার করতে পারিনি।
আজও সারাদিন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সারতে হয়েছিলো। বিকেলের দিকে আবার শুরু হয়েছিলো বৃষ্টি, তবে আজ আর থাকার উপায় ছিল না বলে, বৃষ্টির মধ্যেই বাড়ি থেকে রওনা করেছি শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে। তবে দত্তপুকুর প্লাটফর্মে নেমে দেখলাম সেই মুহূর্তে কোনো বৃষ্টি নেই।
![]() |
---|
যাইহোক গতকাল সকাল বেলায় উঠে সকালের দিকে কিছু কাজকর্ম সেরে, বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিয়েছিলাম। রবিবার দিন বেশকিছু ট্রেন ক্যান্সেল থাকে, তাই বেরোনোর আগে একবার অ্যাপে দেখে নিয়েছিলাম কোন ট্রেন আছে। দেখলাম যে ট্রেনটি টার্গেট করে আমি বাড়ি থেকে বেরোনোর চিন্তাভাবনা করেছিলাম, সেই ট্রেনটি এবং তারপরের ট্রেনটি ক্যান্সেল আছে। তাই একটু অপেক্ষা করে তবেই বেরোলাম।
![]() |
---|
স্টেশনে পৌঁছে টিকিট কেটে প্লাটফর্মে পৌছালাম, যেখানে আমার ট্রেন আসবে। সেখানে বসেই হঠাৎ করে চোখ পড়ল উল্টো দিকে লাগানো একটা পেঁপে গাছের দিকে। বিনা যত্নে কি সুন্দর বেড়ে উঠেছে গাছগুলো এবং একটা নয়, দেখলাম বেশ কয়েকটা গাছ রয়েছে সেখানে। গাছগুলোতে বেশ ভালো পেঁপে ধরেছে, অথচ অনেক যত্ন করে লাগালেও কখনো কখনো গাছে ফল হতে চায় না।
আমি যেখানে বসেছিলাম তার সামনে অনেকগুলো দুধের ক্যান রাখা ছিলো। সেগুলোকে দেখতে হালকা মনে হলেও যখন দুধ ভর্তি থাকে, অনেক বেশি ভারী হয়। এই ক্যান গুলোকে বহন করার জন্য ট্রেনের একটা নির্দিষ্ট কামরাও রয়েছে, যেটাকে আমাদের এখানে ভ্যান্ডার বলা হয়।
![]() |
---|
ভেন্ডারের ঠিক পিছনের কামরাটি মহিলাদের কামরা। আমি একা চলাফেরা করার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মহিলা কামরাই ব্যবহার করি। দুধের ক্যান গুলো রাখা দেখলেই খুব সহজেই আন্দাজ করা যায় যে ট্রেনটি আসতে চলেছে সেখানের মহিলা কামরা কোথায় পড়বে। এছাড়াও প্লাটফর্মের ওপরে সাইনবোর্ডও টানানো থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেন চলে আসলে আমিও ট্রেনে উঠে পড়লাম। রবিবার দিন মোটামুটি বেশ ফাঁকাই ছিল ট্রেন। সিটও পেয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বসেই আমার সামনে বসে থাকা একজন মহিলার কার্যক্রমের দিকে হঠাৎ চোখ পরলো। বুঝতে পারলাম তিনি পরীক্ষার খাতা চেক করছেন, যেটা দেখে নিশ্চিত হলাম যে তিনি একজন শিক্ষিকা।
তবে কোন ক্লাসের খাতা তিনি দেখছিলেন ঠিক ভাবে বুঝতে পারিনি। আমরা হয়তো অনেকেই ভাবি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা খুব মনোযোগ সহকারে আমাদের পরীক্ষার খাতা গুলো চেক করেন। তবে সেই ভুলটা গতকাল ভাঙলো। তিনি অদ্ভুতভাবে এদিক ওদিক তাকিয়ে পরীক্ষার খাতা চেক করছেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নম্বর দিচ্ছেন।
![]() |
---|
আমি সত্যিই জানিনা আদৌ কতখানি মনোযোগ সহকারে তিনি তাদের লেখা প্রশ্নের উত্তর গুলো পড়ে তার সঠিক মান নির্ণয় করতে পারছিলেন। কারণ আমি যতক্ষণ ওনাকে দেখেছি, ওনার মনোযোগ খাতা দেখার থেকেও ট্রেনে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন জিনিসের উপরে এবং ট্রেনে ওঠা নামা করা বিভিন্ন যাত্রীদের দিকে ছিল।
পরবর্তীতে ওনার ফোন আসাতে ওনার কথোপকথন শুনে বুঝলাম কোনো একটা জায়গাতে ওনার নিমন্ত্রণ রয়েছে, সেখানে যাওয়ার সময় যে কয়েকটি খাতা বাকি রয়েছে সেগুলোকেই কোনোরকম ভাবে দেখে নম্বর বসিয়ে চলেছেন। একটু খারাপই লাগলো, হয়তো অনেক ছাত্রছাত্রী অনেক পড়াশুনা করে সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
এই চলতি ট্রেনে যেতে যেতে আদেও তার কতখানি মূল্যায়ন তিনি করতে পারলেন আমি জানিনা। এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভাবলাম এবং ততক্ষণে আমার স্টেশন চলে আসায় আমি নেমে যেতে বাধ্য হলাম। এরপর সোজা অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছালাম। সেখানে জায়গাও পেয়ে গেলাম।
যাইহোক অটো কিছুক্ষণের মধ্যে ছেড়ে দিলো তবে সকাল থেকে রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় থাকার কারণে বেশ গরম লাগছিলো অটোর মধ্যে বসে। অটোতে প্যাসেঞ্জার না হলে ওরা ছাড়তেও চায়না। তাই বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। আমি এদিন সোজা আমার বড় দিদিদের বাড়িতে নেমেছিলাম।
![]() |
---|
বাড়ির সামনে নামিনি, কারণ যত কাগজপত্র বিষয়ক কাজ ছিলো সেগুলো দিদির বাড়িতে গিয়েই করতে হতো। সেখানে পৌঁছে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আগে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম। ব্রেকফাস্ট এদিন লুচি এবং ছোলার ডাল হয়েছিলো, যেহেতু শ্রাবণ মাসে দিদিরা নিরামিষ খাবার খায়।
সেখানে গিয়ে কিভাবে কাগজের কাজগুলো মিটিয়েছিলাম, সেটা পরের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এবং বাপের বাড়িতে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথাও। আজকের পোস্ট আমি এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
Thank you for your support @miftahulrizky. 🙏