"দার্জিলিংয়ের রক গার্ডেন এ ঘোরার অভিজ্ঞতা"
Hello,
Everyone,
আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি খুব সুন্দর ভাবে শুরু হয়েছে। আপনাদের সকলের আজকের দিন এবং আগামী দিনগুলো খুব ভালো কাটুক, সেই প্রার্থনা করে আজকের পোস্ট শুরু করছি।
অনেকদিন হয়ে গেছে আপনাদের সাথে দার্জিলিংয়ে ঘোরার গল্প শেয়ার করা হয় না। তাই ভাবলাম আজ আমাদের পরবর্তী ডেস্টিনেশনে ঘোরার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। এর পূর্বে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম বুদ্ধ মন্দির অর্থাৎ পিস পাগোডা ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা।
আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে ঘুরে দেখাবো দার্জিলিংয়ের আরও একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান রক গার্ডেন। এই জায়গাটির নামের সাথে জায়গাটি যাওয়ার যে রাস্তা, তার বেশ মিল রয়েছে। পিস পাগোডা থেকে যখন আমরা গাড়িতে করে রওনা দিয়েছিলাম, তখন আমাদের ড্রাইভার দাদাই বলেছিলেন এইবারের রাস্তাটা অনেকটাই খারাপ হবে।
তবে গাড়িতে যাওয়ার সময় বুঝতে পারলাম যতটা আন্দাজ করেছিলাম, তার থেকেও অনেকটাই বেশি খারাপ। রাস্তা গুলো খাড়াই আছে সেটা তো ঠিকই, কিন্তু খাড়াই থাকলেও যদি রাস্তা ঠিক থাকে, তাহলেও হয়তো অতটা অসুবিধা হয় না। যাইহোক যেহেতু এটা একটা বিখ্যাত জায়গা তাই প্রচুর মানুষের ভিড় ছিলো। তাই গাড়িও ছিল প্রচুর।
তবে পাহাড়ি রাস্তায় ড্রাইভাররা গাড়ি চালানোয় এতটাই দক্ষ হয় যে, তারা খুবই সুন্দর ভাবে তাদের প্যাসেঞ্জারদেরকে জায়গা মতন পৌঁছে দেন। আমার আমরা যে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলাম, তিনি অসম্ভব ভালো ছিলেন। তাই খানিক নিশ্চিন্তে বসেই আমরা যাত্রাটা এনজয় করছিলাম।
বেশ কিছুটা সময়ের ব্যবধানে আমরা পৌঁছে গেলাম রক গার্ডেন। এখানে মূলত একটা ঝর্ণা আছে, আর আশেপাশটা সুন্দর ফুলগাছ, সবুজ গাছে ও পাহাড়ি দৃশ্যে ভরা। সেখানে কিছুটা ওপরে ওঠার পরে সুন্দর একটা বসার জায়গাও করা আছে, যেখানেই মূলত মানুষের ভিড় সব থেকে বেশি।
ছবি তোলা, গল্প করা, সময় কাটানো সমস্ত কিছুর জন্য এটা একটা ভালো জায়গা। আমরা যখন সেখানে টিকিট কেটে প্রবেশ করলাম, তখন এক ফোটা দু ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছিলো। তবে সেটাও কিছুক্ষণের জন্য। তার কিছুক্ষণ বাদে আকাশ আবার পরিষ্কার হয়ে গেলো এবং আমরা সকলে মিলে জায়গাটা ঘুরে দেখলাম।
রক গার্ডেনেও বিভিন্ন ধরনের পোশাক রয়েছে, যেখানে পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে আপনারা চাইলে পাহাড়ি পোশাক পড়ে ছবি তুলতে পারেন। কিন্তু অন্যান্য জায়গার মতন এখানেও আমরা শুধুমাত্র ঘুরে দেখেছি, কিন্তু পাহাড়ি পোশাক পড়ে ছবি তোলা হয়নি কারোরই।
পাহাড়ের গা বেয়ে একদম উপরে ওঠার জন্য সুন্দর রাস্তাও তৈরি করা আছে। তবে আমার পক্ষে অত উপরে ওঠা সম্ভব ছিল না। যদিও আমি সবাইকে বলেছিলাম চাইলে ওরা যেতে পারে, আমি নিচে অপেক্ষা করবো। কিন্তু আমাদের মধ্যে থেকে কেউই যায়নি। অবশ্য রাখির দাদা একেবারে শেষ পর্যন্ত গিয়েছিলেন, পরে ওনার কাছে শুনেছিলাম উপর থেকে ভিউটা অসাধারণ ছিলো।
মূলত সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ, তার সাথে ঝর্ণা বিভিন্ন ধরনের ফুল, সবকিছু মিলেমিশে একটা অপূর্ব দৃশ্য ছিলো, যা দেখে মনটা শান্ত হচ্ছিলো। ঝর্ণার জল দেখতে তো খুবই ভালো লাগে, তবে একটা জিনিস আমার বেশ খারাপই লেগেছে।
আমরা নিজেরাই যেখানে ঘুরতে যাই, সেই জায়গাগুলো অপরিষ্কার করি। তাই অন্যের দোষ দিতে সত্যিই ইচ্ছা করে না। বেশ কয়েকজন মানুষ যারা সেখানে আমাদের মতনই পর্যটক হিসেবে এসেছিলেন, রীতিমতো জলের বোতল, খাবারের প্যাকেট, সেই ঝর্ণার জলে ছুঁড়ে মারছিলেন।
অথচ বসার জায়গার পাশেই কিন্তু নোংরা ফেলার জন্য পাত্র রাখা হয়েছে। আসলে এই জিনিসগুলো নিজের ব্যাপার। আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই, তাহলে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা করে সচেতন করা সত্যিই কঠিন কাজ।
যাইহোক সেখানে ছোট ছোট দু তিনটে বাচ্চা ছিলো, যারা একই ফ্যামিলির নয়, প্রত্যেকে বাবা মায়েদের সাথে বেড়াতে এসেছিলো। তবে অদ্ভুতভাবে তারা খুব সুন্দর ভাবে মিশে গিয়ে খেলা করছিলো।
একদল ছেলেরা এসেছিল সেখানে ঘুরতে, তারা এত ছবি এবং ভিডিও করছিল যে, আমরা অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলাম তারা সরে গেলে আমরাও কয়েকটা ছবি তুলবো। কারণ রক গার্ডেন এর মাঝখানে যে গোলাকার একটা জায়গা তৈরি করা আছে, সেখান থেকে মূলত সম্পূর্ণ ভিউটা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করা যাচ্ছিলো।
যাইহোক এইরকম ভাবে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। বেশ ভালো ছিল মুহুর্তগুলো। আশা করছি ছবি দেখার মাধ্যমে আপনারাও সেটা উপভোগ করতে পারবেন।
যাইহোক চলুন আজকের গল্প এখানেই শেষ করি। পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে গল্প করবো আমাদের পরবর্তী ডেস্টিনেশন নিয়ে। সকলে খুব ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
