"শশুর মশাইয়ের কোলোনোস্কপির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
সময়ের সাথে চলতে চলতে আমাদের এমন অভিজ্ঞতা হয়, যেগুলো সম্পর্কে আমরা কখনো কখনো কল্পনাও করি না। একটা সময় ছিলো যখন হসপিটালের নাম শুনলে ভয়ে আমার সারা শরীর কাঁপতো। সেই আমি কিনা এখন হসপিটালের এদিক থেকে এদিক ছুটে বেড়াতে পারি।
এ কথা মাঝেমধ্যে নিজেরই বিশ্বাস হয় না। আসলে পরিস্থিতি মানুষকে সবটা কখন, কিভাবে শিখিয়ে নেয় সেটা আমরা বুঝতেও পারি না। এটাকেই হয়তো বলে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, যেটা বয়সের সাথে সাথে আমরা সকলেই কমবেশি অর্জন করি।
আমার পূর্বের একটা পোস্টে আপনাদের জানিয়েছিলাম শশুর মশাইয়ের কোলোনোস্কপি করতে হবে, যার কারণে গতকাল ওনাকে হসপিটালে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে, খুব সকালে আমাদেরকে বাড়ি থেকে রওনা হতে হয়েছে, যদিও তার প্রস্তুতি অবশ্য আগের দিন রাত থেকেই শুরু হয়েছিলো।
কারণ এই টেস্টটা করতে গেলে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়, তবেই গিয়ে টেস্টটা করা সম্ভব। আগের দিন রাতে আটটার মধ্যে ওনাকে খাবার দিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। কারণ পরশুদিন রাতে খাওয়ার পরে আর কোনো সলিড খাবার ওনাকে গতকাল সারাদিন রাত দেওয়া হয়নি।
রাতের দিকে আমি ওনার ফাইল গুছিয়ে রেখেছিলাম এবং সেই ফাঁকে কোলোনোস্কপি করার জন্য প্রয়োজনীয় যে সকল অত্যাবশ্যকীয় জিনিস নিয়ে যাওয়ার কথা লিখে দিয়েছিলো, সেই পেপারগুলো গুছিয়ে ওনার ফাইলে নিয়ে নিয়েছিলাম। কারণ পরদিন সকাল বেলায় উঠে এগুলো করার মত সময় পাবো না।
সমস্ত কিছু গুছিয়ে, কমিউনিটির কাজ করে রাতে শুতে অনেক লেট হয়েছিলো। তবে সকাল ৬:৪৫ এ অ্যালার্ম দেওয়া ছিলো। তাই যথাসময়ে আমি উঠে পড়লাম, তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে আমার আর শুভর জন্য দু কাপ চা করে নিলাম। ততক্ষণে শশুর মশাই ঘুম থেকে উঠে ওনার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
ওনাকে চা দিইনি যেহেতু ওনার কোনো কিছুই খাওয়া বারণ ছিলো। শুধু সকালের দিকে যে ট্যাবলেটটা উনি খান, সামান্য জল দিয়ে সেটা খেতে দিয়েছিলাম। কারণ এমনটাই ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন।
গতকাল গাছে খুব সুন্দর সাদা ফুল ফুটেছিলো। ছাদের গাছের সব ফুল তোলার সুযোগ হয়নি গতকাল, কিন্তু আমি ঐ সাদা ফুলের একটা ছবি তুলে নিয়েছিলাম। যাইহোক কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ি এসেছিল এবং আমরাও রওনা করেছিলাম এইমসের উদ্দেশ্য। বেশ সকালের দিক ছিলো, তাই মানুষজনের খুব বেশি ভিড় তখনো রাস্তায় দেখা যায়নি। তাই গাড়ি বেশ দ্রুতই চলছিল।
যে রাস্তা দিয়ে আমাদের যেতে হয়, মাঝখানের অনেকটা জায়গায় দুপাশে সুন্দর মাঠ দেখা যায়। তবে বরাবর গাড়ির উল্টো দিকে বসার কারণে, তেমন ভাবে ছবি তুলতে পারিনি। তবে গতকাল দেখতে বেশ ভালো লাগছিলো, আর সুযোগ পেয়েছিলাম তাই এই ছবিগুলো তুলেছিলাম, যাতে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি।
রাস্তাটা যদিও জাতীয় সড়ক, তথাপি দুই পাশে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে এমন ফাঁকা মাঠ এখনও পর্যন্ত লক্ষ্যিত হয়। যদিও জানি না ভবিষ্যতে এরকম ফাঁকা জায়গার দেখা মিলবে কিনা। যাইহোক সমস্ত রাস্তা পেরিয়ে আমরা গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে কিছু ফর্মালিটি ছিল সেগুলো পূরণ করার পর শ্বশুর মশাকে ভর্তি করে দেওয়া হলো।
টেস্টটা যদিও আজ হয়েছে, তবে আগামীকাল থেকেই সকলকে ভর্তি রাখা হয়েছে। এর আগে যতবার ভর্তি করা হয়েছিল তিনি আইপিডি-৫ এ ভর্তি ছিলেন। এবার প্রথম তাকে আইপিডি-১ এ ভর্তি করা হয়েছে এবং সেখানে রোগী দেখতে যাওয়ার নিয়মাবলী আরো অনেক বেশি কড়া ছিলো। কারণ এখানে সেই সকল পেশেন্টদের রাখা হয় যাদের শারীরিক অবস্থা অন্যান্যদের তুলনায় একটু বেশিই খারাপ।
যাইহোক শুভ যেহেতু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়েছিলো, তাই শ্বশুরমশাইয়ের বেডের পাশে আমি বসেছিলাম। ওখানে আরো দুজন ব্যক্তি ভর্তি হয়েছিলেন, যাদের ও শ্বশুরমশাই মতন কোলোনোস্কোপি টেস্ট হওয়ার কথা ছিল। সেখানে বসে বসে উল্টো দিকে একজনকে দেখছিলাম। আর মনটাও বেশ খারাপ লাগছিলো।
যে রুমটাতে আমরা বসেছিলাম, সেখানে এসি এতোটা ঠান্ডা ছিল যে আমার গায়ের কাঁটা দিচ্ছিলো। তৎসত্ত্বেও উল্টো দিকের বেডে শুয়ে থাকা মানুষটির শরীরের মধ্যে অস্বস্তি হচ্ছিলো, গরম লাগছিল, তাই ওনার স্ত্রী ওনাকে পাখার সাহায্যে হাওয়া দিচ্ছিলেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন।
হসপিটালের এই সকল দৃশ্যগুলো আমার মনকে আরো বেশি খারাপ করে তোলে, এই কারণেই আমি হসপিটালে যেতে ভয় পেতাম। কিন্তু এগুলো আমাদের জীবনের এমন সত্যি যে, ভয় পেলেও কোনো না কোনোভাবে ঠিক আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়।
অসহায়ের মতন ওনাদের দিকে তাকিয়েছিলাম আর ভাবছিলাম, জীবন সম্পর্কে ঈশ্বরের কাছে না জানি কত অভিযোগ করি, অথচ সুস্থ একটি জীবন দানের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলে যাই।
লোকটার কি সমস্যা ছিল সেটা সম্পর্কে জানা হয়নি, বলতে পারেন সামনে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারিনি। তবে ওনাদের দুজনকে দেখে মনটা বেশ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভেবে। সত্যিই এমন একটা দিন হয়তো আমাদের জীবনেও আসবে।
আমরাও ওনার মত করে কষ্ট পাবো কিংবা হয়তো তার থেকেও বেশি পাবো, কি হবে সত্যিই জানিনা শুধু এটুকু জানি যে, এমন একটা দিন আমাদের জীবনে আসবে, কারণ আর যাইহোক বয়সটা তো বেঁধে রাখতে পারব না কোনোদিন।
যাইহোক এর পরবর্তীতে কি হলো সেগুলো আমি আপনাদের সাথে পরের পোস্টে শেয়ার করবো। না হলে এই পোস্টটা অনেকটাই বড় হয়ে যাবে। আজকের মত এখানেই শেষ করি। ভালো থাকবেন সকলে।
Los examenes medicos tienden a ser mas frecuentes cuando cumplimos cierta edad, la mayoria de estos examenes requieren que el paciente siga unas reglas estrictas, las flores que nos mostraste son muy bonitas.
Congratulations
This post has been curated by
Team #5
@damithudaya
যতদিন থেকে আপনার সাথে পরিচয় হয়েছে ততদিন থেকে আসলে প্রতিনিয়ত আপনি হসপিটালে নিজের প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটিয়েছেন আপনার এই সময়টা কখন শেষ হবে আমি জানিনা তবে কখনো নিজের দিদির জামাইয়ের জন্য কখনো শ্বশুরের জন্য আপনার সময়টা আপনি ঠিকই বের করে নিয়েছেন আবারো নিজের শশুরকে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে সমস্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ভালো রাখুক।