"বাঙালির পছন্দের- মটন কষার রেসিপি"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা বেশ ভালো কেটেছে।
শীর্ষক পড়ে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন, আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মটন কষার রেসিপি। বেশিরভাগ বাঙালির কাছে এটা একেবারে আবেগ, তবে সেই বাঙ্গালীদের মধ্যে আমি নিজে একেবারেই পড়ি না। তবে শুভর ভীষণ পছন্দের একটি পদ হলো এই মটন কষা। তাই নিজে না খেলেও ওর জন্য রান্না করতেই হয়।
আজকেও একজন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করেছিলো দুপুরে আমাদের বাড়িতে খাওয়ার জন্য। সেই কারণে মটন নিয়ে এসেছিলো। সেটাই রান্না করেছিলাম ওদের জন্য। তাই সেই সময় প্রতিটি ধাপের ছবি তুলেছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।
|
---|
চলুন তাহলে প্রথমে আপনাদেরকে বলি আমি এই রান্নাটি করতে কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছিলাম,-
নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১. | মটন | ১ কেজি ২০০ গ্ৰাম |
২. | টকদই | ২০০ গ্ৰাম |
৩. | পেঁয়াজ | ৩ টে (মাঝারি সাইজের) |
৪. | আদা বাটা | ২ চা চামচ |
৫. | রসুন বাটা | ২ চা চামচ |
৬. | কাঁচা লঙ্কা বাটা | ৩ চা চামচ |
৭. | সরষের তেল | ৪ চা চামচ |
৮. | হলুদ গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
৯. | জিরে গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
১০. | ধনে গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
১১. | কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
১২. | গরম মশলার গুঁড়ো | ১চা চামচ |
১৩. | লবন | স্বাদ অনুসার |
১৪. | ঘি | ১ চা চামচ |
১৫. | আলু | ৩-৪ টি |
১৬. | টমেটো | ১টি |
|
---|
সবার প্রথমে মাংসগুলোকে ভালো করে ধুয়ে, জল ঝড়িয়ে, পরিমাণ মতো লবণ, হলুদ এবং টকদই দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ মেখে রাখতে হবে। আমিও প্রথমে মাংসগুলোকে এই সকল উপকরণ দিয়ে ভালো করে মেখে রেখে, বাকি সমস্ত জিনিসগুলো তৈরি করে নিয়েছিলাম।
এরপর আদা, রসুনের খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে, তার সাথে পরিমাণ মতো কাঁচা লঙ্কা দিয়ে একসাথে মিক্সিতে পেস্ট করে নিয়েছিলাম। কাঁচা লঙ্কার মধ্যে যে লাল লঙ্কা গুলো থাকে, আমি রান্নার জন্য সেটাই ব্যবহার করেছিলাম যাতে রংটা সুন্দর হয়।
এরপর একটা বাটিতে পরিমাণ মতো জিরেগুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো ও কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, সামান্য জল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে আলাদা জায়গায় রেখে দিয়েছিলাম।
এরপর পরিমাণমতো পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে, পেঁয়াজের সাথে টমেটোটাও কুচিয়ে রেখেছিলাম। আমাদের বাড়িতে চিকেনের মধ্যে আলু ব্যবহার করা হোক বা না হোক,মটন রান্না করলে আলু দিতেই হবে। কারণ মটনের আলু শুভর ভীষণ প্রিয়, সাথে ওর যে বন্ধুটির নিমন্ত্রণ ছিলো সেও আলু খেতে বেশ পছন্দ করে।
তাই ওদের দুজনের জন্য একটু বেশি করে আলু দেবো ভেবে, আলুগুলোর খোসা ছাড়িয়ে মাঝখান থেকে দু টুকরো করে কেটে, ভালো করে ধুয়ে নিলাম।
এই উপকরণগুলো যোগাড় করা হয়ে গেলেই আমি রান্নার জন্য গ্যাস জ্বালিয়ে কড়াই বসিয়ে দিয়েছিলাম। প্রথমে কড়াইতে পরিমাণ মতো সরষের তেল দিয়ে, আমি আলুগুলোকে দিয়ে দিলাম। এরপর অল্প একটু লবন ও হলুদ দিয়ে লাল লাল করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।
তারপর ওই তেলের মধ্যেই গোটা গরম মশলা এবং একটা তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে, পেঁয়াজ ও টমেটো কুচি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভেজে নিয়েছিলাম। পেঁয়াজের রং পরিবর্তন হলে তার মধ্যে আগে থেকে তৈরি করে রাখা আদা রসুন এবং লঙ্কার পেস্ট দিয়ে আরও বেশ কিছুক্ষণ কষিয়ে নিলাম।
এরপর আমি বাটিতে সব গুঁড়ো মসলা দিয়ে যে মিশ্রণটা তৈরি করেছিলাম, সেটাও দিয়ে দিলাম। মসলাটাকে খুব ভালো করে কষতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা থেকে তেল ছেড়ে না যায়। আসলে খাসির মাংসের মধ্যে অনেক চর্বি থাকে, সেই কারণে আমি শুরুতে তেল অনেকটাই কম ব্যবহার করে থাকি।
যাইহোক এরপর মসলা অনেকক্ষণ কষা হয়ে গেলে আমি আগে থেকে ম্যারিনেট করে রাখা মাংস গুলো দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিয়ে রাখলাম। এইভাবে আমি প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট পর্যন্ত কড়াই এর মধ্যে ভালো করে মাংস কষিয়ে নিই, যাতে করে মাংসটা বেশ কিছুটা সেদ্ধ হয়ে যায়।
এরপর মাংসগুলোকে প্রেসার কুকার এর মধ্যে তুলে রাখলাম। কড়াইতে জল দিয়ে কড়াইতে থাকা মশলা গুলোর সাথে মিশিয়ে, জলটা হালকা গরম হলে প্রেশার কুকারে দিয়ে, ৪ টা হুইসেল দিয়ে একটু অপেক্ষা করলাম। প্রেসারের ভাব সরে গেলে আগে থেকে ভেজে রাখা আলু দিয়ে, আরও একটা হুইসেল দিলাম।
তারপর গ্যাস বন্ধ করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর, প্রেসার কুকারের ঢাকনা খুলে তার মধ্যে পরিমাণ মতো গরম মসলা ও ঘি দিয়ে, একটু নাড়িয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আলু দিয়ে তৈরি বাঙালির প্রিয় খাসির মাংসের ঝোল।
শুভ খাসির মাংস ভাত দিয়ে খেতেই বেশি পছন্দ করে, এই কারণে আমি ভাতই রান্না করেছিলাম। তবে আপনারা চাইলে এটা ফ্রাইড রাইস বা পোলাও দিয়েও খেতে পারেন। তার সাথেও বোধহয় ভালোই লাগবে।
আমি যদিও খাইনি, তবে যাদের জন্য রান্না করেছিলাম তারা তৃপ্তি করে খেয়েছে এখানেই আমার রান্না করা স্বার্থক। ওদের কথায় রান্নাটা বেশ ভালোই হয়েছিলো। যদিও আপনাদেরকে খাওয়াতে পারবো না, তবে এই রকম ভাবে যদি একবার বাড়িতে তৈরি করেন, আশাকরি আপনাদেরও ভালো লাগবে। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
@ninapenda Thank you so much for your support 🙏 .