"ঘরে ফেরা"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আজ সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার।
এই মুহূর্তে আমি ননদের বাড়িতে আছি। দুদিন আগের পোস্টেও জানিয়েছিলাম ননদের বাড়ি আসার কথা। সেদিন কেন এসেছিলাম আজকের পোস্টে সেই কথাই আপনদের সাথে শেয়ার করবো।
আসলে গত পরশু আমার ননদের বড় ছেলে বাড়িতে ফিরেছে। আইটিআই কমপ্লিট করার পরে, কাজের সূত্রে ও গত তিন মাস আগে ছত্রিশগড়ে চলে গিয়েছিলো। সেখানকার একটা কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে।
শুরুতে বাড়ির বাইরে থাকবে এই বিষয়টি নিয়ে ভীষণ আনন্দিত ছিলো। আসলে ওর এই বয়সে আমরা প্রত্যেকেই বোধহয় নতুন কিছু করার, নতুন জায়গায় থাকার, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বেশ উৎসুক থাকি। বাবা মায়ের শাসনের মধ্যে থাকতে থাকতে আমরা বোধহয় এটা ভাবতে বসি,- কবে এই শাসন থেকে আমরা মুক্ত হবো।
আমার ননদের ছেলেও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলো না। ওর ও মনে হতো বোধহয় বাড়ীর বাইরে থাকলে, নিজের মতো কাজ করলে, সবথেকে বেশি আনন্দে থাকা যায়। এমন ভাবনা ছেলেবেলায় আমাদেরও ছিলো।
যখন বাবা-মায়ের শাসনের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও শাসন করতেন, তখন মনে হতো কবে এই ছাত্র জীবন শেষ হবে। তবে আমার বিশ্বাস আমার মতন বর্তমানে প্রত্যেকেই আপনারা সেই ছাত্র জীবনকেই সবথেকে বেশি মিস করেন। মনে হয় আরো একবার যদি ঐ জীবন ফিরে পেতাম তাহলে বোধহয় খুব ভালো হতো।
![]() |
---|
চাকরি জীবনের ক্ষেত্রেও আমার ননদের ছেলে ভীষণ ভাবে এক্সাইটেড ছিলো। প্রথম কয়েকদিন সেখানে বেশ ভালোই কাটছিলো।তবে ধীরে ধীরে বাড়ির জন্য ওর মন খারাপ হওয়া শুরু হয়েছিলো। তখন মনে হচ্ছিলো বোধহয় বাবা-মায়ের শাসন অনেক ভালো, তাদের থেকে দূরে থাকার চেয়ে।
যাইহোক তবুও কাজের ক্ষেত্রে কখনো কখনো মন খারাপ হলেও, সেটা মেনে নিয়ে প্রায় তিন মাস ওখানে ও ছিলো। তারপর ১৫ দিনের ছুটিতে গতপরশু বাড়িতে এসেছে। শ্বশুর-শাশুড়ি মা সেদিন সকালেই চলে এসেছিলেন। আর আমি ও শুভ এসেছিলাম সন্ধ্যা বেলায়।
তবে বাড়িতে আসার জন্য সে কতটা উৎসুক ছিলো আর নিজের জায়গায় ফিরে এসে কতটা আনন্দিত ছিলো, সেটা মাঝে মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাসে দিয়েছিলো। যার স্ক্রিনশট আমি রেখেছিলাম পরবর্তীতে ওকে খ্যাঁপাবো বলে। কারণ বাড়ির থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য একটা সময় ভীষণ ব্যাকুল ছিলো। আবার সেই একই ব্যাকুলতা কাজ করেছে কখন বাড়িতে ফিরবে সেই কারণে। যাইহোক সেই স্ক্রিনশট গুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
যাইহোক সেদিন মুলত ওকে দেখার জন্যই গিয়েছিলাম। আসলে আমার বিয়ের পর থেকে ওর সাথে আমার বেশ ভালো বন্ডিং। অনেকটা ছোটো থেকেই যেহেতু ওকে দেখেছি, তাই ওর প্রতি একটা অন্যরকম মায়া আছে। গত পরশু সন্ধ্যাবেলায় গিয়ে ওকে দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কি ভীষণ রোগা হয়ে গিয়েছে ছেলেটা।
আসলে প্রথমবার বাড়ি থেকে এতো দূরে গেছে, সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া হয় না ওখানে। কারণ ওখানকার রান্নার সাথে বাড়ির রান্নার বিস্তর ফারাক। তার ওপরে সময় মতো অফিসে যাওয়া, রুমে ফিরে নিজের সমস্ত কাজ নিজে করা, যেগুলো বাড়িতে সবটাই মা করতো। সবকিছু মিলিয়েই বেশ রোগা হয়ে গেছে।
তবে এমন একটা সময় প্রত্যেক ছেলের জীবনেই আসে, যখন নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার জন্য পরিশ্রম করাটাই একমাত্র পথ। তাই ওর এই পথ চলাতে ওকে উৎসাহ জোগালাম। সত্যি বলতে এরপর ধীরে ধীরে ওর কাঁধে আরও অনেক দায়িত্ব আসবে। একটা সময় নিজের সংসার হবে।
তবে মাঝের কিছু বছর নিজের মতো করে আনন্দ করতে পারবে। তবে এই সব কিছুর জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটা কিন্তু অর্থ। আর অর্থের জন্য সততার সাথে কাজ করাটা খুবই প্রয়োজন। যদিও বয়সের অনেক আগে থেকেই ও চাকরিতে ঢুকলো, তবে সেটা কিন্তু ওর জন্য ভালোই হলো।
![]() |
---|
হয়তো বাড়ির থেকে দূরে থাকতে ওর একটু কষ্ট হয়। সময়ের সাথে সাথে সবটা অ্যাডজাস্ট হয়ে যায় এ কথা সত্যি। তবে শুরুর দিকে যে কোনো কাজই আমাদের একটু কঠিন মনে হয়। আবার একটা সময় সেই কাজেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ি আমরা।
আসলে ও যেহেতু আমাদের সকলের আদরের, তাই হয়তো ওর দূরে থাকা আমাদেরকে কখনো কখনো কষ্ট দেয়। তবে ওর ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর হওয়ার জন্য এই কষ্টটুকু মেনে নেওয়া এবং ওকে পথ চলতে উৎসাহ দেওয়াটা আমাদের সকলেরই কর্তব্য।
তবে অনেকদিন বাদে ওকে দেখার পরে একটু মন খারাপও হয়েছে, এ কথা অস্বীকার করবো না। যাইহোক বহুদিন বাদে ওর সঙ্গে দেখা হলো, একসাথে সবাই মিলে অনেকক্ষণ গল্প করে, তারপর ডিনার করে আমি অন্য শুভ বাড়িতে ফিরেছিলাম সেদিন। আজ আবার কিছুক্ষণ আগেই ননদের বাড়িতে এলাম, কারণ আজ আমার ননদের ছোট ছেলের জন্মদিন।
ওর জন্মদিন উপলক্ষ্যেই খুব কাছের কিছু মানুষের সাথে ছোট্ট একটু ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে আমার ননদ। সারাটা দিন এখানে কাটিয়ে, রাতে আবার আমি এবং শুভ ফিরে যাবো। শ্বশুর-শাশুড়ি মা বোধহয় আজকের রাতটা থাকবেন।
যাইহোক জন্মদিন কিভাবে সেলিব্রেট করলাম, খাবারের মেনুতে কি কি ছিলো, সকলের সাথে কাটানো কিছু আনন্দের মুহূর্ত, সেই সবকিছু অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যাইহোক আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করি। সকলে খুব ভালো থাকুন এইটুকুই প্রার্থনা।
TEAM 8
Congratulations! Your post has been upvoted through @steemcurator08. Good post here should be..Thank you so much for your support @dasudi. 🙏