"**Buddhist Temple Peace Pagoda** - ভ্রমণের অভিজ্ঞতা"

in Incredible Indiayesterday
IMG_20250816_204409.jpg

Hello,

Everyone,

দার্জিলিং ভ্রমণ সিরিজের যে পোস্টগুলো আমি শেয়ার করছিলাম, তাতে সর্বশেষ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, দার্জিলিং এর মল রোডে কাটানো এক সুন্দর সকালের গল্প। আর সেই পোস্টের একেবারে শেষে জানিয়েছিলাম পরবর্তী পোস্টে আপনাদের কে নিয়ে যাবো "Buddhist Temple Peace Pagoda" এ। চলুন তাহলে শুরু করি।

IMG_20250816_204218.jpg

হোটেল থেকে সবকিছু গুছিয়ে গাড়িতে করে আমরা রওনা দিয়েছিলাম এই বুদ্ধ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। রাস্তায় সেদিনও প্রচুর জ্যাম ছিলো এবং গাড়ির যে পার্কিং সেটা অনেকটাই নিচে ছিল। মোটকথা এই বুদ্ধ মন্দিরে যাওয়ার জন্য পার্কিং থেকে আপনাকে পায়ে হেঁটেই এই মন্দির পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।

IMG_20250816_204353.jpg

খানিকটা কষ্ট হলেও আমি কথা দিচ্ছি যখন আপনারা গিয়ে সেই মন্দিরের প্রথম দর্শন করবেন, এক অনাবিল শান্তিতে ভরে যাবে আপনার মন। তখন শারীরিক ক্লান্তিও ক্ষণিকের জন্য ভুলে যেতে বাধ্য হবেন। যদিও সেই বুদ্ধ মন্দিরে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে আরও অনেকগুলো সিঁড়ি পার করতে হবে। তবে মূল মন্দিরে পৌঁছানোর জন্য ওইটুকু কষ্ট আপনি করে নেবেন, তাহলে গিয়ে সেই অপূর্ব মূর্তি গুলো দেখতে পারবেন।

IMG_20250816_204433.jpg

যাইহোক শুরুতে চোখে পড়েছিল জাপানিস টেম্পল। তবে সেখানে ঢোকার জন্য জুতো রেখে তবে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। তাই ভাবলাম আগে দূরের বুদ্ধ মন্দিরটাই দেখে আসি। ফেরার পথে না হয় এই মন্দিরটায় প্রবেশ করবো। সেই রকম ভেবেই আমরা প্রথমে বুদ্ধ মন্দির দেখার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। বেশ খানিকটা হেঁটে এবং অনেকগুলো সিঁড়ি পার করে, যখন উপরে উঠলাম বুদ্ধদেবের একটা মূর্তি দেখেই মনটা অনাবিল শান্তিতে ভরে উঠলো।

সেই দিন প্রকৃতি এতো সুন্দর ছিলো যে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। না প্রচন্ড রোদ্দুর না মেঘলা আকাশ, এক শান্ত স্নিগ্ধ হাওয়া বইছিল চারিদিকে। তার উপরে এমন সুন্দর একটা মন্দিরে গিয়ে যখন বেশ কিছুটা সময় কাটালাম, সত্যিই খুব ভালো লাগলো।

IMG_20250816_204448.jpg

বুদ্ধ মন্দিরে কাঠের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনগুলি একেবারে মন কেড়ে নিয়েছিলো। অবশ্য সমস্তটাতেই ঘিরে ছিলো বৌদ্ধদেবের জীবনী। কাঠের তৈরি মূর্তি ও ধাতু নির্মিত মূর্তির কাঠামোর মাধ্যমে তার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়কে তুলে ধরা হয়েছে সেই মন্দিরে, যেটা আপনি সম্পূর্ণ ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন।

IMG_20250816_204536.jpg
IMG_20250816_204556.jpg

সত্যি কথা বলতে সাদা মন্দিরের মধ্যে সোনালী রঙের এই মূর্তিগুলো যেন আরও বেশি সুন্দর করে তুলেছিলো জায়গাটা। যদিও জানিনা এই মূর্তিগুলো আদেও কি রং দিয়ে তৈরি, তবে বিশ্বাস করুন দেখে এতো ভালো লাগছিল যে সেটা আমি শব্দে আপনাদের সাথে বর্ণনা করতে পারবো না।

IMG_20250816_204615.jpg
IMG_20250816_204513.jpg

প্রত্যেকটা মূর্তি সুন্দর সাদা রংয়ের লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা আছে এবং সেখানে প্রত্যেকটা জায়গায় লেখা আছে যাতে কেউ ওই রেলিং ধরে ভেতরের ঢোকার বা হাত দেওয়ার চেষ্টা না করে। আর সেই কথাটা সকলেই সুন্দরভাবে মেনে সম্পূর্ণ জায়গাটা পরিদর্শন করছেন দেখে আরও ভালো লাগলো।

IMG_20250816_204632.jpg

আমরাও সমস্তটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম এবং ওইখানে দাঁড়িয়ে পাশের প্রকৃতিও উপভোগ করলাম। অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো চারপাশটা দেখতে। নীল আকাশের মাঝে সাদা মেঘের ভেসে চলা এক অদ্ভুত সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি করেছিলো।

IMG_20250816_204807.jpg

সেখানকার আরও একটি মূল আকর্ষণ ছিল ফুল। চারিপাশে এতো সুন্দর ফুল গাছ ছিল যে, সেখানেও চোখ আটকে যাচ্ছিল বারংবার। আপনাদের সকলকে এই হাজারি গোলাপ ফুলের কথা আমি আগেরও একটা পোস্টে বলেছি। এখানে এসেও দেখলাম সেই ফুলগুলো ভরে রয়েছে।

IMG_20250816_204751.jpg
IMG_20250816_204736.jpg

আরও এক ধরনের ফুল চোখে পড়ল যেগুলো থোকায় থোকায় ফুটেছিলো। এই ফুলগুলো শুধু এখানে নয়, পাহাড়ি রাস্তার অনেক জায়গাতে চোখে পড়েছে, যেগুলো বিভিন্ন রঙের দেখেছি। তবে ফুলগুলোর নাম কি সত্যিই জানিনা। আশা করছি ফুলের ছবিগুলো দেখলে আপনাদেরও ভালো লাগবে। যদি আপনাদের মধ্যে কারোর এই ফুলের নাম জানা থাকে বা আপনারা এর আগে দেখে থাকেন, তাহলে অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।

IMG_20250816_204703.jpg
IMG_20250816_204647.jpg

যাইহোক বুদ্ধ মন্দিরে বেশ কিছুটা সময় অতিক্রম করার পর, আমরা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এসে তারপর জাপানিস টেম্পলে ঢুকেছিলাম। তবে সেই মুহূর্তে ভিতরে সকলে প্রার্থনা করছিলো বলে, খুব বেশি ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। চুপিচুপি দুটো ছবি তুলেছিলাম এবং কিছুক্ষণ তাদের প্রার্থনাটা দাঁড়িয়ে উপভোগ করার পর, ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে এলাম আমরা।

IMG_20250816_204718.jpg

বাইরে একটা স্মৃতিসৌধ মতন তৈরি করা ছিলো, যদিও সেখানে সম্পূর্ণ জাপানি ভাষায় লেখা ছিলো বলে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আর সৌধটার পাশে কোথাও অন্য কোনো ভাষাতে আর কিছুই লেখা ছিল না, তাই এটা আদেও কি আমি সঠিক ভাবে জানি না। তবে দেখতে খানিকটা স্মৃতি সৌধের মতোই।

যাইহোক সেখানে আমরা যতটা টাইম কাটিয়েছিলাম, ব্যক্তিগতভাবে আমি সেটা খুবই উপভোগ করেছি। বিশেষ করে সেখানকার পরিবেশ, সেখানকার নিস্তব্ধতা, স্থাপত্য, স্নিগ্ধতা, সবকিছু মিলেমিশে যেন এক অন্য অনুভূতির জন্ম দিয়েছিল মনের মধ্যে। ছবির মাধ্যমে আমি সবটাই তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। তবে কথায় আছে সমস্ত কিছু ছবির মাধ্যমে বোঝা সম্ভব নয়, কিছু জিনিস জায়গায় উপস্থিত থেকে অনুভব করতে হয়।

IMG_20250816_204945.jpg

হয়তো এর পূর্বে আমিও ছবি দেখলে সেটা অনুভব করতে পারতাম না, যেটা সেখানে উপস্থিত থেকে করতে পেরেছিলাম। তাই আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়বেন, যদি কখনো সম্ভব হয় অবশ্যই একবার পরিবার, পরিজন, বন্ধুদের সাথে দার্জিলিং এর এই বুদ্ধ মন্দির অবশ্যই ভ্রমণ করবেন। আমি কথা দিলাম আপনার মনে এই স্মৃতি আজীবন কাল অক্ষয় হয়ে থাকবে।

যাইহোক দার্জিলিং ভ্রমণ সিরিজের আরও একটা পর্ব আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের আমার এই দার্জিলিং ঘোরার অভিজ্ঞতার গল্প গুলো পড়তে কেমন লাগছে, অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...

TEAM 6

Congratulations! This post has been voted through steemcurator08. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.


1753883118875.png


Curated by : @uzma4882

 2 hours ago 

Thank you so much for your support @uzma4882. 🙏