"অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেনে কাটানো কিছু মুহুর্ত, যা আজীবন থেকে যাবে স্মৃতির পাতায়"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা খুব ভালো কেটেছে। গতকাল থেকে আবহাওয়া অনেকখানি পরিবর্তন হয়েছে। একটানা বৃষ্টিতে মোটামুটি পরিবেশ ঠান্ডা বলা চলে, কারণ কয়েকদিন আগে যে তীব্র গরমের দাপট ছিলো, তা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন সকলে।
যাইহোক মাঝখানে অন্যান্য বিষয়বস্তু সম্পর্কিত পোস্ট শেয়ার করার জন্য, দার্জিলিং ঘোরার পর্বে বেশ কিছুটা গ্যাপ পরে গেলো। আসলে একটানা কোনো কিছু লিখতে বা পড়তে ভালো লাগে না। তাই মাঝে মধ্যে একটু অন্য বিষয় নিয়ে লিখতেও ভালো লাগে।
![]() |
---|
আর আশাকরি আপনাদেরও বিষয়বস্তুর বদল হলে পোস্ট পড়ার প্রতি আগ্রহ থাকে। যাইহোক উপরোক্ত কথাগুলো শুনে আশাকরি আন্দাজ করতে পেরেছেন আজ দার্জিলিং ঘোরারই একটি পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের পর্বে আপনাদের সাথে তুলে ধরবো "অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেন" এর কিছু সুন্দর মুহূর্তের কথা এবং ছবি।
![]() |
---|
এর পূর্বে আমি আপনাদের সাথে "রক গার্ডেন এ ঘোরার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। আজ সেখান থেকে ফেরার পথে যে চা বাগানে আমরা কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম, তার নামই ছিল "অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেন।"
আমাদের ড্রাইভার দাদার কাছে শুনলাম বেশ কয়েক মাস আগে পর্যন্ত এখানে ভিতরে ঢোকা নিষেধ ছিলো। তবে কয়েক মাস আগে এখানকার একটা গেট খুলে দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের জন্য। কারণ একটা পাশ থেকে এখন আর চা পাতা তোলা হয় না। ফলতো চাইলে পর্যটকেরা সেখানে গিয়ে নিজেদের মতো করে ঘুরতে পারেন, ছবি তুলতে পারেন এবং ইচ্ছে হলে কয়েকটা চা পাতাও সংগ্রহ করতে পারেন।
সত্যি কথা বলতে রক গার্ডেন থেকে আমরা যখন গাড়িতে উঠে রওনা করলাম, তখন আকাশটা মোটামুটি মেঘে ভরে এসেছে। তবে যেমনটা আগের পোস্টে বলেছিলাম, এখানকার রাস্তা এতোটা খারাপ যে, ভালোভাবে গাড়ির ভিতরে বসে ছবি তোলাটাও বেশ চ্যালেঞ্জের হয়ে যাচ্ছিলো। কারণ গাড়ির সব সময় নড়ছিল।
![]() |
---|
![]() |
---|
কিছুদূর এগোনোর পরে গাড়ি দাঁড়িয়ে পরলো। সামনে চোখ যেতেই দেখতে পেলাম লম্বা গাড়ির লাইন অর্থাৎ জ্যাম হয়ে গেছে। এখানকার রাস্তা এমনই যে আপনি চাইলে ওভারটেক করতে পারবেন না, যতক্ষণের সামনের গাড়িগুলো না এগোবে আপনাকে বাধ্য হয়ে দাঁড়াতেই হবে। কারণ ওই রাস্তারই অপর পাশ দিয়ে বহু গাড়ির রক গার্ডেন এর উদ্দেশ্যে চলেছে।
![]() |
---|
![]() |
---|
দার্জিলিং এ গাড়িতে চড়াকালীন বেশিরভাগ সময়েই পাশের দিকে নজর ছিলো। বলতে পারেন এমন একটা ভাবনা মনে কাজ করত যেন, কোনো সৌন্দর্য্যই যেন অদেখা থেকে না যায়। যেন সবটুকু সৌন্দর্যই দেখে নিতে হবে ওই কয়েকদিনের মধ্যে। ক্যামেরাবন্দি হোক বা না হোক, স্মৃতিতে অবশ্যই বন্দি করতে হবে প্রত্যেকটি মুহূর্ত। জানিনা এমন সুযোগ আবার কবে হবে।
যাইহোক আমাদের গাড়িও ধীরে ধীরে এগোতে থাকলো এবং অরেঞ্জ ভ্যালিতে ঢোকার যে প্রবেশপথ সেখানে যাওয়ার পর আমাদের ড্রাইভার দাদা জিজ্ঞাসা করলো আমরা কেউ নিচে নামতে চাই কিনা। তবে আমরা আসলে নিচে নেমে আর সময় নষ্ট করতে চাইনি। সামনে দাঁড়িয়েই কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। সেইসময় আমাদের সকলেরই মোটামুটি খিদে পেয়ে গিয়েছিলো এবং পরবর্তী ডেস্টিনেশন অর্থাৎ বাতাসিয়া লুপ পৌঁছানোর আগ্রহও ছিলো অনেক।
![]() |
---|
![]() |
---|
তাই চলতি পথে গাড়ির মধ্যে থেকেই আমরা অরেঞ্জ ভ্যালির সৌন্দর্য্য উপভোগ করলাম, মেঘেদের আনাগোনাতে আকাশের রূপ পরিবর্তন হতে দেখলাম, তার সাথে সূর্যের লুকোচুরি খেলাও মিস করিনি। সবকিছু মিলিয়ে খুবই সাদামাটা একটা জায়গাও কি অসাধারণ সৌন্দর্য্যতা বহন করে তা বোধহয় একমাত্র পাহাড়ে গেলেই অনুভব করা যায়।
![]() |
---|
যা আমরা দুচোখ ভরে দেখছিলাম, তা হয়তো ওখানকার মানুষদের কাছে প্রতিদিনকার দৃশ্য, তাই ওদের কাছে এই সৌন্দর্যগুলো আলাদা করে মূল্য পায় না। তাই বোধহয় আমাদের মতো করে ওরা এই সকল জায়গা বা দৃশ্যগুলোকে উপলব্ধি করতে পারে না।
যাইহোক এরপর ধীরে ধীরে গাড়িগুলো এগোতে লাগলো। একেবারে শেষ মুহূর্তে একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়লো, যেখানে বাংলাতে লেখা হয়েছে যাতে যত্রতত্র ময়লা ফেলা না হয়। বলতে পারেন একটু খারাপই লাগলো দেখে।
![]() |
---|
আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদের চারপাশকে যদি পরিষ্কার রাখি, তাহলে হয়তো এই জিনিসগুলো নোটিশ বোর্ডে জানানোর প্রয়োজন হয় না। তবে কিছু মানুষের অজ্ঞতা বলুন কিংবা অভ্যাস, যে তারা পরিষ্কার জায়গাও নোংরা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠে।
তবে খারাপ লাগে যখনই নোটিশগুলো লেখা থাকার পরেও একই কাজ মানুষ করে চলে। কারন আমাদের আগের গাড়িতে থেকেই বেশ কতগুলো চিপসের প্যাকেট, চকলেটের প্যাকেট, রাস্তার উপরে ফেলতে দেখেছি। আমরাও যে গাড়িতে বসে কিছু খাইনি এমনটা নয়, তবে একটা প্যাকেটের মধ্যে বাকি সমস্ত প্যাকেট বা অন্যান্য ময়লা জমা করতাম। তারপর আমাদের হোটেল বা হোমস্টে যেখানে যেতাম, সেখানকার ময়লা ফেলার পাত্রেই আমরা সেগুলো ফেলতাম।
![]() |
---|
![]() |
---|
যাইহোক অরেঞ্জ ভ্যালি ছেড়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম আমাদের পরবর্তী ডেস্টিনেশন বাতাশিয়া লুপের কাছাকাছি। তবে ড্রাইভার দাদাকে বলেছিলাম তার আগে একটা ছোটখাটো কোনো রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়াতে। কারণ লাঞ্চের সময় পেরিয়ে গেলেও আমাদের প্রত্যেকেরই যথেষ্ট খিদে পেয়েছিলো, তাই হালকা কিছু খেয়ে তারপর বাতাসিয়ালুপপের সৌন্দর্য্য উপভোগ করার ইচ্ছে ছিলো সকলের।
"বাতাসিয়া লুপ" মানে দার্জিলিংয়ের আর একটা বিখ্যাত জায়গা। সেখানে মুহূর্তগুলো আরো সুন্দর, যেগুলো আমি আপনাদের সাথে দার্জিলিং ঘোরার পরবর্তী পর্বে শেয়ার করবো। অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেন সম্পর্কে পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো এবং এখানকার তোলা ছবিগুলো আপনারা কতখানি উপভোগ করলেন, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
Thank you so much for your support. @lirvic🙏
@sampabiswas
তুমি যেভাবে পোস্টটি লিখেছো তা আমার খুব ভালো লেগেছে। দ্বিতীয়ত, পোস্টটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর হওয়া উচিত, এটা আমার খুব ভালো লেগেছে।
তুমি চা বাগানের কথা বলেছ, আমার মন খুশি হয়েছিল, আমি সত্যিই সেগুলো দেখতে চাই, কিন্তু সেগুলো আমাদের দেশ পাকিস্তানে নেই। তোমার জন্য ভালো যে চা বাগানের একটি গেট খোলা হয়েছে। চলন্ত গাড়িতে ছবি তোলা যাই হোক না কেন কঠিন এবং যখন এটি একটি কঠিন রাস্তায় থাকে, তখন এটি আরও বেশি কঠিন।
এত কঠিন রাস্তায় ওভারটেক করাও সম্ভব নয় কারণ রাস্তাটি খুবই সরু যা খুবই বিপজ্জনক। আপনার পোস্ট করা বাগানের ছবিগুলোতে আমার হৃদয় হারিয়ে গেছে। আমি এই ছবিগুলো আমার ভেতরে অনুভব করছি, কী সুন্দর পরিবেশ। এই বক্তব্যটি সত্য প্রকাশ করেছে যে যারা সেখানে বাস করে তারা বাইরে থেকে আসা লোকদের মতো এলাকার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে না।
এটা সত্য যে, যদি প্রতিটি মানুষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি যত্নবান হত, তাহলে সাইনবোর্ড লাগানো হত না, কিন্তু কেউই প্রতিটি ব্যক্তির চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে পারে না, তাই কিছু লোককে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত।
যখনই কেউ কোন সুন্দর জায়গায় যায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই তার ক্ষুধা লাগে কারণ সেই সময় তার মন খুশি থাকে। তোমার পোস্টটি খুবই আকর্ষণীয় ছিল।