"দূর্গা পূজার চতুর্থীর দিন প্রিয় মানুষগুলোর সাথে কাটালাম"

in Incredible India2 days ago
IMG_20250926_133118.jpg

Hello,

Everyone,

আজ মহা ষষ্ঠী। তাই শুরুতেই সকলকে মহা ষষ্ঠীর শুভেচ্ছা জানাই। হিসেব মতো আজ থেকেই পুজো শুরু, তাই আপনাদের প্রত্যেকের পুজো খুব ভালো কাটুক, আনন্দে কাটুক, এই প্রার্থনা রইলো।

ভেবেছিলাম এবার পুজোটা আমারও বেশ ভালো কাটবে। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে না যে, যতটা আশা করেছিলাম ততটাও ভালো কাটবে। তবে একথা ঠিক যে, মনে মনে এটা ঠিক করেছি যাই হয়ে যাক না কেন, মন খারাপকে খুব বেশি প্রশ্রয় দেবো না।

কারণ রাগ করে, অভিমান করে, যদি এই দিনগুলো নষ্ট করি তাহলে শুধুমাত্র তা নষ্টই হয়। এই দিনগুলো আর ফিরে আসে না। তাই সব ঠিক হয়ে যাবে এই অপেক্ষায় বসে থাকবো না, নিজেই নিজেকে কথা দিয়েছি।

IMG_20250928_194501.jpg

যদি হিসেব করি তাহলে পুজো শুরুর আগের দিনগুলো আমার অনেক বেশি আনন্দে কেটেছে। তাই আজ আপনাদের সাথে চতুর্থীর দিনের গল্প শেয়ার করবো। তিতলি তাতনের জন্য আগে ড্রেস কিনেছিলাম, এ কথা আপনাদের সঙ্গে পূর্বের একটা পোস্টে শেয়ার করেছিলাম।

তবে জামাগুলো ওদেরকে দিয়ে আসা হয়নি। তাই চতুর্থীর দিন ঠিক করেছিলাম জামাগুলো ওদেরকে দিয়ে আসবো। মাঝে ননদের বড় ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সময় নষ্ট হয়েছে, তাই ভাবলাম আর দেরি করা ঠিক হবে না।

তবে দিদি বাড়িতে যাওয়ার আগে আমার বান্ধবীর সাথে দেখা করতে হয়েছে একটি বিশেষ দরকারে। বলতে পারেন আমার প্রয়োজনে আমি বরাবর ওকে ডেকেছি এবং ও আমার পাশে থেকেছে। তবে চতুর্থীর দিন ও নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমাকে ডেকেছিলো। তাই আমিও দিদি বাড়ি যাওয়ার আগে ওর সঙ্গে দেখা করেছিলাম।

IMG_20250926_140136.jpg
IMG_20250926_140049.jpg
IMG_20250926_135930.jpg

কি কারনে ডেকেছিলো, সে গল্প আমাদের ব্যক্তিগতই থাক। তবে ওর সঙ্গে দেখা হলে প্রতিটা মুহূর্তই আমি উপভোগ করি, সেটা পুরনো কথা মনে করে হোক কিংবা নতুন কোনো বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে হোক।

কিছু ব্যক্তিগত আলোচনা শেষ করার পর আমি ওকে এক প্রকার জোড় করেই মিও আমোরে নিয়ে গেলাম। কারণ ও বাড়ি থেকে কিছু খেয়ে আসেনি, আর আমিও অনেকটা সকালে খেয়েছিলাম। তাই ভাবলাম দুজনে মিলে অন্ততপক্ষে হালকা কিছু খেয়ে নিই।

IMG_20250928_205259.jpg
IMG_20250926_164340.jpg
IMG_20250926_164449.jpg

তাই কেক কিনে এনে আমরা স্টেশনে বসেই কথা বলতে বলতে কেক খেয়ে নিয়েছিলাম। এরপরও আমাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে আমি সোজা দিদি বাড়িতে পৌঁছে গেলাম।

IMG_20250926_231625.jpg

সেখানে গিয়ে দেখি তার তাতান বাবুর ঠান্ডা লেগেছে এবং এতটাই কাশি হয়েছে যে, ওকে রীতিমতো নিমুলাইজার দিতে হচ্ছে। জ্বর তেমনভাবে আসেনি, কিন্তু প্রচণ্ড কাশি আর সেই সাথে গলা ব্যথা রয়েছে। তবে আমি যাওয়াতে সে ভীষণ খুশি। আর আরও বেশি খুশি হয়েছে নিজের নতুন জামা দেখে। নীল রং তার ভীষণ প্রিয়, তাই নীল রঙের যে গেঞ্জিটা নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটা তার সবথেকে বেশি পছন্দ হয়েছে।

যাইহোক দিদি বাড়িতে গিয়েই প্রথমে হাতমুখ ধুয়ে, ফ্রেশ হয়ে, এক কাপ চা খেলাম। বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলাম বাবা, জামাইবাবু ও দিদির সাথে। সেই মুহূর্তে তিতলিকে পড়াতে ওর টিচার বাড়িতে এসেছিলেন, তাই তিতলির সঙ্গে কিছুক্ষণ বাদে দেখা হলো।

IMG_20250926_230910.jpg
IMG_20250926_230945.jpg
IMG_20250926_231524.jpg

ও আমাকে দেখে বলল মিমি তোমাকে কিন্তু মেহেন্দি পড়তেই হবে। এই এক সমস্যা হয়েছে, নিজের বাবার হাতে, আমার বাবা অর্থাৎ ওর দাদুর হাতে, ভাইয়ের হাতে, এমনকি নিজের হাতের কোথাও বাকি নেই মেহেন্দি করতে। এবার আমাকে দেখাতে আমাকেও মেহেদী পড়াবে।

দিদিকে মেহেন্দি পড়াতে পারে না কারণ দিদি ওকে বলেছে, দিদির হসপিটালে মেহেন্দি করে গেলে দিদির ম্যাম বকা দেবে। সেই কারণে দিদি খানিকটা বেঁচে গেছে। তবে আমি আর বাঁচতে পারলাম না। মেহেন্দি কোণ নিয়ে এসে বসে পড়ল আমার হাতে মেহেন্দি করতে। তবে আমি বলেছি আমি শুধুমাত্র একহাতেই।

তবে যাই বলুন না কেন, এতোদিন নিজে নিজে মেহেদী পড়তাম ঠিকই, তবে কখনো কখনো আলসেমি লাগতো। তাই ভাবলাম পুজোর আগে যা করে করুক, তবে দেখুন একেবারে খারাপ পড়ায়নি কিন্তু মেহেন্দি, বেশ ভালোই পড়িয়েছে।

যাইহোক কিছুক্ষণ বাদে তাতানও আমাদের দলে সামিল হলো। দুষ্টুমি শুরু করল সেও। তিতলির নাচের ক্লাসের প্রোগ্রামের সময় খোঁপা বানানোর জন্য নকল চুল কিনে আনা হয়েছিলো। তাতানবাবু সেটা কোথা থেকে পেয়েছে জানিনা, কিন্তু সেটা নিয়ে খেলা শুরু করলো।

IMG_20250928_205045.jpg

নিজের মাথার উপরে খোঁপাটাকে রেখে আমাকে বললো, - "মিমি আমার একটা ছবি তোলো তো, দেখি আমাকে কেমন দেখতে লাগছে।" তাই অগ্যতা তার একটা ছবি তুলতেই হলো। পরে নিজের ছবি দেখে নিজেই হেসে লুটোপুটি যাচ্ছিলো।

যাইহোক তারপর আমরা সকলে মিলে সেদিন রাতের খাবার শেষ করে, আমার কাজ সেরে, শুয়ে পড়েছিলাম। পরদিন সকালে অর্থাৎ গতকাল সকালে ট্রেন ধরে আমি আবার বাড়িতে ফিরেছি। আসলে আজকাল ঠাকুর দেখতে যাওয়ার এতো ভিড় যে, দিদি বাড়ি থেকে সন্ধ্যার পরে বাড়ি আসার কথা ভাবতেও ভয় লাগছিলো।

কারণ সেই সময় বহু মানুষ ঠাকুর দেখে বাড়িতে ফেরে, ঠিক উল্টো দিকের ট্রেনেও ততটাই ভিড়, কারণ অনেক মানুষ বিকেলের দিকে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে যায়। মানুষের ভিড় দেখে সত্যিই মনে হচ্ছিলো যে, পুজো শুরু হয়ে গেছে। কারণ এই তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী থেকেই প্যান্ডেল দেখার ভিড় শুরু হয়ে যায়।

যাইহোক সেদিন হয়তো কোনো প্ল্যান ছিল না কিন্তু তবুও রাখির সাথে দেখা করে বেশ ভালো সময় কাটালাম। আবার পরে দিদির বাড়িতে গিয়েও তিতলি তাতানের সাথে ভালো সময় পার হলো।

ঠাকুর দেখতে যাওয়ার তেমন কোনো প্ল্যান এখনও হয়নি, তবে বান্ধবীদের সাথে কথা হয়েছে যদি ভালো লাগে তাহলে একবার বেরোবো ভাবছি। আবার আবহাওয়া দপ্তরের কথাটাও মাথায় রয়ে গেছে, বাইরে বেরিয়ে যদি কোনো রকম সমস্যা হয়, সেই কারণেও একটু পিছিয়ে যাচ্ছি।

আর সত্যি কথা বলতে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার শখ আমার কোনোদিনই ছিলো না। তবে সময় বয়ে যাচ্ছে, জীবনের যেদিন ফুরিয়ে যাচ্ছে সেদিন আর ফিরবে না, এই ভাবনাটাও মাঝেমধ্যে ভিতর থেকে উৎসাহ যোগায়, যা কখনো করিনি তা করার বয়স বোধহয় এখনই।

এর পরবর্তীতে চাইলেও আর এসব সম্ভব হবে না। যাইহোক কি হবে সত্যিই জানিনা। তবে যদি ঠাকুর দেখতে যাই, তবে আপনাদের সাথেও যে সেই মুহূর্ত শেয়ার করবো, এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন।

যাইহোক প্রত্যেকের পুজো ভীষণ ভালো কাটুক, খুব আনন্দে কাটুক, ঈশ্বর সকলকে সুস্থতা দান করুক, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...

Congratulations! Your post has been supported by our team

InShot_20250801_084743252.jpg

Curated by @radjasalman