নববর্ষের সকালবেলা।০৩-০৫-২০২৫

আমার সকল স্টিমিট বন্ধুদের, আপনাদের সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। গত মাসে পহেলা এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছিল। এবারের বাংলা নববর্ষ আমি খুবই আনন্দ সহকারে কাটিয়েছি। তবে এবারের পহেলা বৈশাখে আমি নিজেকে খুব সাদামাটাভাবে সাজিয়েছিলাম। আমার পহেলা বৈশাখের কাটানো স্মৃতিগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম, তাই আর কথা না বাড়িয়ে আমি সরাসরি আমার পোস্টে চলে যাচ্ছি।

বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ)

পহেলা বৈশাখ বাংলা জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব এবং বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন নির্দেশ করে। এই দিনটি প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল একটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয়। পহেলা বৈশাখের প্রধান tradition ইতিহাস মোগল সম্রাট আকবরের শাসনকালে শুরু হয়, যখন কৃষকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহে সহায়তার জন্য বাংলা ক্যালেন্ডার প্রবর্তিত হয়। দেশটির বিভিন্ন স্থানে রঙ-বেরঙের মঙ্গল শোভাযাত্রা (শোভাযাত্রা) অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে রাজধানী ঢাকা রয়েছে, যা ইউনেস্কোর দ্বারা বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে হস্তশিল্প, মিঠাই, লোকসঙ্গীত এবং পুতুলের খেলার প্রদর্শনী হয়। পহেলা বৈশাখের উৎসবে পান্তা ভাত , ইলিশ মাছ, শুকনো চিংড়ি, এবং বিভিন্ন ধরনের ভর্তা (ম্যাশড সবজি) বিশেষ স্থান অধিকার করে। ব্যবসায়ীরা তাদের নতুন হিসাবের বই খুলে পুরনো ঋণ শ্রেণীবদ্ধ করে এবং নতুন হিসাব শুরু করে। এই দিনে সবাই লাল এবং সাদা পোশাকে সজ্জিত হয় উৎসবের আনন্দে যোগ দেওয়ার জন্য। মেয়েরা লাল-সাদা শাড়ি পরে এবং মাথায় ফুল দিয়ে সাজে, অন্যদিকে ছেলেরা পাঞ্জাবি এবং লুংগি পরে। লোকসংগীত, বাউল গান, এবং গাঁয়ের সঙ্গীত, পাশাপাশি নৃত্য প্রদর্শনগুলি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। বিশেষ অনুষ্ঠান সারাদিন টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়।

আমার পহেলা বৈশাখের মুহূর্তগুলি

আমি সকালে উঠে নাস্তা করে স্কুলে যাওয়ার জন্য সাজগোজ করি। যখন স্কুলে পৌঁছাই, তখন দেখি ছাত্ররাও সুন্দরভাবে পরিধান করে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে প্রস্তুত। তারপর, আমি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাই শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য এবং আমরা সকলেই প্রধান শিক্ষিকার আগমনের অপেক্ষায় ছিলাম। প্রধান শিক্ষিকার আসতে কিছুটা সময় লাগবে জানতে পেরে, আমি ছাত্রদের সাথে কিছু ছবি তুলতে থাকি। একজন ছাত্র আমার কয়েকটি ছবি তুলেছে, যা দেখে আমরা সবাই হাসি,হাসির কারণ হল যে আমি তার শিক্ষক হলেও, আমি তাকে আমার ছবি তোলার জন্য বলেছিলাম।

আমি দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলছিলাম এবং তাদের সঙ্গে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় আলোচনা করছিলাম। এর মধ্যে, অনেক ছাত্র অকর্মা হতে শুরু করেছিল, এবং আমি তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। ছাত্ররা মাঠে ফুটবল খেলছিল, এবং এরপর আমাদের প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে পৌঁছালেন। তিনি এসে, আমরা সবাই শ্রেণীকক্ষে গেলাম এবং বসে পড়লাম। এরপর তিনি আমাদের একটি ভাষণ দিলেন এবং মাঠ থেকে কিছু জবা ফুল নিয়ে এলেন। ম্যাডাম আমাদের সঙ্গে ছবিও তুললেন, এবং আমি তার থেকে একটি জবা ফুল নিই।

এরপর, সব ছাত্রছাত্রী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলো, যেখানে কিছু মেয়ে জাতীয় সংগীত এবং পহেলা বৈশাখের গান নেচেছিল। আমরা সবাই একসঙ্গে পহেলা বৈশাখের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করলাম। পহেলা বৈশাখ বাংলা সংস্কৃতির গভীর ঐতিহ্য এবং ঐক্যের প্রতীক, যা ধর্ম এবং জাতিগত পরিচয়কে অতিক্রম করে। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, বরং বাংলা জীবনের আবেগ এবং প্রথার একটি সংযোগ। তাই, দিনটি বাঙালিদের জন্য একটি আনন্দময় এবং স্মরণীয় উপলক্ষ হিসেবে উদযাপন করা হয়।

বিশিষ্ট কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আছে:

এসো এসো, এসো, হে বৈশাখ
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুড়ে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক
যাক পুরাতন স্মৃতি,যাক ভুলে যাওয়া গীতি
অশ্রু বাষ্প সুদুরে মিলাক।
মুছে যাক গ্লানি,ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে সূচি হোক ধরা

---

পারিবারিক কিছু সমস্যার জন্য মনমেজাজ ভালো নেই। প্রতিনিয়ত নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছি, নিজের মনের বিরুদ্ধে। কেউ সবার ভালোোর জন্য নিজেকে বিসর্জন দিচ্ছি। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে ভালো রাখুক। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আজকে এখানে শেষ করছি, দেখা হবে আবারও কোন নতুন একটি পোস্টে। আল্লাহ হাফেজ।