Better Life With Steem | The Diary game ,September, 7 , 2025।
ফোনের রিংটোন শুনে ঘুম ভেঙে গেলো।ফোন রিসিভ করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে চারটার মতো বাজে। খুব বেশি হলে ঘন্টা দেড়েক ঘুমিয়েছি রাতে। ভাইয়ের ছেলে বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছে এটা বলার জন্য কল দিয়েছে । নিচে দারোয়ানকে কল দিলাম গেট খুলে দেয়ার জন্য।
ও এসেছে টাকার জন্য। টাকা আগেই রেডি রেখেছিলাম। ওর বাবা মানে আমার কাজিন মারা গেছে রাত আড়াইটার সময়। তার পেছনে প্রচুর টাকা খরচ হয়ে গেছে। এই মুহর্তে এই সমস্যার হাত থেকে বাঁচার জন্যই এসেছে।
আমি হাসপাতাল থেকে একটার দিকে বাসায় এসেছি । তখনও কাজিনকে দেখেছি মোটামোটি ভালো। আমি বাসায় ঢোকার আগেই শোনলাম যে স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছে। অক্সিজেন দিতে হচ্ছে ১৫ লিটার।
ডক্টর বলেছেন আইসিইউ তে ঢোকানোর জন্য। আমি ও আমার ভাই দুজনেই ডাক্তারের কথা শুনতে বলে দিলাম। কিন্তু এরই মাঝে ভাই চলে গেলো। হসপিটালে তখন আবারো যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু শরীর আর নিতে পারতেছিলো না। সারাদিন ঝড় গেছে উপর দিয়ে।
ভাইয়ের ছেলে চলে যাবার পরে আর ঘুমাতে পারি নাই। কলিং বেলের শব্দে আমার ছোট্ট বিড়াল ছানার ঘুম ভেঙে গেছে। তার খাবার খাওয়ার কথা মনে পরে গেছে। নতুন সদস্য ও আমার পরিবারের। কিভাবে এসেছে সেটা আরেক দিন বলবো।
দ্রুত রান্না ঘরে ঢুকে ওর জন্য দুধ বানালাম। পানি আগেই ফুটিয়ে রেখেছিলাম। ১ চামচ দুধের সাথে সাথে ৫ চামচ পানি মিলিয়ে ওর দুধ বানিয়ে রুমে ঢোকার আগেই দেখি আরেক বিড়াল ছানার ঘুমও ভেঙে গেছে।
তাকে আগে খাবার দিয়ে রুমে গিয়ে দেখি পিচ্চিটা মনের সুখে চিৎকার করতেছে। ওকে দুধ খাওয়ানো আরেক সমস্যা হলো ফিডার দেখলে খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়। চার পা বিশেষ করে সামনের দুই পা দিয়ে আঁচড় কাটতে থাকে। আমার হাত আর নেই ওর যন্ত্রনায় ,পুরো হাত ক্ষতবিক্ষত।
এত বেশি পা দিয়ে খামচাখামচি করতে থাকে যে অনেক সময় ফিডারের মুখ খুলেও যায়। এসব করতে করতে আর ঘুমাতে পারি নাই।
ছয়টার দিকে হাবি উঠে জিজ্ঞেস করলো গ্রামে কখন যাবো। সত্যি বলতে এই প্রশ্ন আমার নিজের মাথায়ও ঘুরতে ছিল। আমি কিভাবে কি করবো কিছুই বুঝতেছিলাম না। এই দুই বিড়ালের বাচ্চাকে রেখে কিভাবে যাবো এটা ভাবলেই আমার মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যাচ্ছিলো বলা যায়।
পরে হাবির সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলাম যে ৮ টার পরপরই বের হয়ে যাবো। সেও যাবে আমার সাথে। জানাজায় অংশ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাসায় চলে আসবো।
বড় ছেলেও বাসায় থাকবে না যার কারণে ছোট ছেলের উপর অনেক বেশি চাপ পরে যাবে। কারণ অমিই দুটোকে একসাথে সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাই। আমার সাথে আমার ছোট ভাইও যাবে।
বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় সাড়ে ৮টার মতো বেজে গেলো। জানাজার সময় ছিল ১০ টার সময়। আমি বাসায় ঢোকার কয়েক মিনিটের মাঝেই কাজিনকে নিয়ে সবাই জানাজার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলো। এরপর দ্রুত বের হবো বললেও বের হতে পারি নাই। দুপুরের দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হলাম।
Camera | iPhone 14 |
---|---|
Photographer | @sayeedasultana |
Location | Dhaka,Bangladesh |