প্রাপ্তি! Attainment!
![]() |
---|
আমার আগের লেখায় অনেকেই ইতিপূর্বে একাধিকবার উল্লেখিত কথাটি পড়ে থাকবেন,
প্রতিটি দিন নিজের মতো করে কিছু শিক্ষা আমাদের দিয়ে যায়।
খুব ভালো এবং খুব মন্দ অভিজ্ঞতা এই দিনগুলো থেকে আমাদের প্রাপ্তি স্বরূপ আমরা প্রতিদিন পেয়ে থাকি।
মাঝারি কোনো কিছুর মূল্যায়ন কোনো ক্ষেত্রেই হয়না, কাজেই প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।
যেমন গতকাল, মানে ২৮ শে মার্চ দিনের শেষের প্রাপ্তি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে হাজির হয়েছি।
একটি দিন শেষ হতে হতে প্রতিদিন বেশ কিছু শিক্ষা দিয়ে যায়, মাঝারি শিক্ষায় আমাদের রুচি নেই! তাই খুব মধুর এবং খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা ছাড়া আমরা কিছু মনে রাখতে নারাজ।
সকালটা গতানুগতিক ছিল বটে, তবে দুদিন ধরে মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আর যখন নিজের মনের কথা শোনার কেউ থাকে না, তখন নিজের মন ভালো করবার রসদ নিজেকেই জুগিয়ে নিতে হয়!
তাই ঠিক করলাম চৈত্র মাসের সেল থেকে কিছু কেনাকাটা করতে বের হবো।
প্রায় দিন যাচ্ছি, যাবো ভাবতে ভাবতে যাওয়াই হচ্ছে না।
ঘড়িতে তখন সাড়ে পাঁচটা বাজে, তৈরি হয়ে প্রথমে গিয়েছিলাম স্টার মল কিন্তু সেভাবে কিছু পছন্দ হয়নি তাই সময় অপচয় না করে বাড়ির কাছাকছি খাদিম এ গেলাম এবং এক জোড়া সবসময় পড়ার জুতো কিনে পৌঁছলাম বিছানার চাদর কিনতে আমার চির পরিচিত দোকানে।
(কেনাকাটা করা দ্রব্যের ছবি সহ দাম আরেকদিন আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো)
আজকে প্রাপ্তির তালিকায় এই নতুন জিনিসগুলোর চাইতেও বেশকিছু অভিজ্ঞতা প্রাপ্তি ভাগ করে নিতে এসেছি।
চাদরের দোকান থেকে পছন্দসই দুটো চাদর কিনে ভাবলাম বড় রাস্তা ধরে না ফিরে ভিতরের গলি ধরে ফেরা যাক, তাতে করে বড় গাড়িগুলো এড়িয়ে বাড়ি পৌঁছতে পারবো।
গলি ধরে বেশ খানিক পথ পেরোবার পরে, একটি বাঁকে সবে পা রেখেছি, সমস্ত জিনিষ হাতে নিয়ে এত বাজে ভাবে রাস্তায় পড়ে গেলাম যে, ডান পায়ের নখ ভাঙলো পাশাপাশি বাড়ি ফিরে দেখলাম ডান হাঁটুর সাদা মাংস দেখা যাচ্ছে।
শরীরের অবস্থা আপনারা খানিক আঁচ করতে পারবেন হয়তো, কিন্তু এর মাঝেও কথা দেওয়া ছিল বলে রাতে অ্যাপ্লিকেশন লিখলাম ওই শরীর নিয়ে!
রাতে ওই রক্ত ভেজা পা নিয়ে বেশি করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলাম, কারণ যে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাতে ওষুধ ছাড়া ঘুমাতে পারবো না বুঝে গিয়েছিলাম।
কেউ নেই যাকে দিয়ে ওষুধ আনাতে পারি! প্রায় সাড়ে আটটা বেজে গিয়েছিল কাজেই হোম ডেলিভারী সার্ভিস পাবার আশা ছিল না।
আজকে সকাল থেকে বুঝলাম ডান দিকের পায়ের পাশাপশি বা পায়ের ankle সহ গোটা শরীরেই ব্যথা!
আজকে কমিউনিটির পোস্ট লিখতে লিখতে ভাবলাম গতকালের নতুন জিনিষ গুলোর প্রাপ্তির কথা মনে রাখবো, নাকি বিপদ এড়াতে গলি ধরেও বিপদ কপালে থাকলে এড়ানো যায় না সেই শিক্ষা?
আজকে বেশকিছু ওষুধ কিনেছি হোম ডেলিভারী সার্ভিস এর মাধ্যমে, কারণ নিজের শারীরিক শক্তি তলানিতে।
তবে, এসবের পরেও ঘর মুছতে, পুজো দিতে এবং কাজের জায়গায় কাজটা করে গেছি।
কি ভেবে শক্তি পাই জানেন? যদি যুদ্ধক্ষেত্রে গুলি খেয়ে সৈনিক লড়াই চালিয়ে যেতে পারে, আমি কেনো পারবো না?
উভয়েই তো মানুষ, তাই না? প্রায় চব্বিশ ঘণ্টার কাছাকাছি শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করে বুঝলাম আমার মানসিক ক্ষতের যন্ত্রণার কাছে এটা একেবারেই সামান্য।
![]() |
---|
জীবনের পথে একা চলতে গিয়ে এমন অনেক প্রাপ্তির সঙ্গে তালিকাভুক্ত হয়ে থাকবে গতকালের প্রাপ্তি।
কোনো অবস্থাতেই নিজের কাজকে অবজ্ঞা করিনি তাই হয়তো অনেকেই এই যন্ত্রণাকে সামান্য ভাবতে পারেন, তবে ছবি দেখলে হয়তো খানিক আন্দাজ করতে পারবেন আঘাত নেহাত কম ছিল না!
গতকাল, অচেনা দুটো পুরুষ একজন মহিলা আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে একজন খুবই জোরাজুরি করছিলেন বাড়ি পৌঁছে দেবার জন্য, আমি অচেনা মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞ কিন্তু গন্তব্য যখন নিজের তখন একলাই পথ পাড়ি দিতে পৌঁছতে হবে।
কারোর হাত ধরার সাহস অথবা ভরসা আজকাল বিশেষ পাই না। এই ভালো জানেন, ভরসা ভাঙার বেদনা এই শারীরিক যন্ত্রণার চাইতে বহুগুণ বেশি।


Team Steem Peacocks 🦚
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator07.বাস্তব অভিপ্রায় দিদি, তবে এটাকে আমরা শিক্ষা হিসেবে সকলে গ্রহণ করতে পারি না। আমার নিজের কথাই বলি কোনো কিছু যদি একবার নেতিবাচক ভাবি তাহলে সেইটা যেন ইতিবাচক এটা আমার বিশ্বাসই হয় না।
এই বিষয়ে আমার একদমই জানা ছিল না দিদি। সম্ভবত, এটা আমাদের এখানকার বৈশাখী মেলার মতো যেখানে বিচিত্র জিনিসের সমারোহ এবং সেই সাথে সাশ্রয়ী মূল্য।
আবার আপনার সম্পূর্ণ লেখা পড়ে উপলব্ধি করলাম যে ঈশ্বর ঈশ্বর নির্ধারিত কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো কোনো ভাবেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না।
অন্যদিকে যার কেউ নেই তাঁর সাথে ঈশ্বর সবসময়ই থাকেন। কারণ আপনার বিপদে এগিয়ে আসা মানুষগুলো নিঃসন্দেহে ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই এসেছিল।
তবে দিদি, এই খারাপ পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। পাশাপাশি, অনুরোধ করবো দিদি, সম্ভব হলে একবার ডাক্তার দেখাবেন।
প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন দ্রুত আপনাকে সুস্থ্য করে দেন।
আপনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা সত্যি আমাদের জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা। একা একা থাকেন বলে ঔষধ নিয়ে আসার মতো মানুষ বা আপনার দেখাশোনা করার মত মানুষ নাই এটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। তবে আমার যেটা মনে হয় একটি ভালো ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত যেহেতু পায়ে আঘাত লেগেছে এবং পা কেটে যাওয়ার ছবিটা দেখে সত্যি খারাপ লাগছে আপনি ভালো একটি চিকিৎসা নেবেন এটাই আশা রাখি এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনি খুবই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
আপনি একেবারেই ঠিক বলেছেন আমরা অনেক বড় আঘাত কিংবা অনেক বড় বিপদ না হলে, সেগুলোকে মনে রাখতে কখনোই পছন্দ করি না। তবে আপনার সাথে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা পড়ার পর এবং আপনার ছবি দেখার পর। সত্যি কথা বলতে খুব খারাপ লাগলো। আমি একবার তাকিয়ে আর তাকাতে পারলাম না। কারণ এই ধরনের রক্তমাখা কোন জিনিস আমি দেখতে পারি না।
অচেনা মানুষ আপনাকে সাহায্য করেছে আবার আপনাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা ও করেছে। তবে আপনি সেটাতে নারাজ হয়েছেন। আসলে অন্যের হাত ধরে অনেকটা পথ হাঁটার পরে, যদি সেই মানুষটা হাত ছেড়ে দেয় ভরসা ভেঙ্গে দেয়। তাহলে বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না। তাই আমার মনে হয় একা থাকাটাই ভালো। একা পথ চলার মধ্যে কিছুটা হলেও শান্তি আছে। জীবনে যতটুকু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। তবে তার মধ্যে কষ্ট বেশি ছিল, ভরসা বিশ্বাস ভেঙে দেয়ার মানুষ অনেক বেশি ছিল। এখনো আছে তবে এখন একা থাকতে ভালো লাগে। আর মনে হয় চুপ থাকি, যে যা বলুক কিছুই যায় আসে না একা চলতে শিখে গেছি।