ভয়াবহ দুর্ঘটনা! Terrible plane crash in Ahmedabad-Gujarat (India)!

in Incredible Indialast month
1000060134.jpg

ইতিহাসে একটি ভয়াবহ দিন হিসেবে নথিভুক্ত থাকবে ১২ই জুন তারিখটি অনেক মানুষ তথা পরিবারের ক্ষেত্রে!
বিশেষ করে সেই মানুষটি যার নাম রামেশ বিশ্বাস কুমার একমাত্র যাত্রী যিনি এই রকমের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বেঁচে গিয়ে নব জন্ম দিবস হিসেবে মনে রাখবেন।

এই দুর্ঘটনা যেমন লক্ষ দুর্ঘটনার নজিরবিহীন একটি ঘটনা তেমনি এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় যে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে বোয়িং প্লেনে থাকা জ্বালানির কারণে, সেখানে জীবিত থাকাও একটি নজিরবিহীন ঘটনা!

ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে যেখানে থেকে বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য উদ্ধার করা হবে কি কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেলো!

টাটা কোম্পানি প্রতিটি নিহত পরিবারকে ১ কোটি টাকা দেবার কথা ঘোষণা করেছেন, তবে এই অনুদান কোনো ভাবেই যারা অসময়ে পৃথিবী ত্যাগ করেছেন তাদের ক্ষতস্থানের পরিপূরক নয়।

1000060126.jpg

1000060123.jpg

২৪২ জনের মধ্যে থেকে একজনের বেঁচে যাওয়া এটাও প্রমাণ করে, প্রতিটি মানুষের মৃত্যুর সময় নির্ধারিত।

প্লেনটি যে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে এর গায়ে আছড়ে পড়েছে সেখানে এখনও পর্যন্ত তেরো জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে, যিনি এই ডাক্তারদের জন্য রান্না করতেন সেই রাঁধুনি সহ, ওই বিল্ডিং এর সামনে বসা চায়ের দোকানী!

১০০০ লিটার জ্বালানি কতখানি ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম এটি সকলেই অনুমান করতে পারেন!
প্রথমে প্লেনটি দিল্লি থেকে আহমেদাবাদ পৌঁছয়, এরপর তার গন্তব্য ছিল ইউকে!
কাজেই এই নয় ঘণ্টার উড়ানের জন্য ভর্তি ছিল প্লেনের ফুয়েল ট্যাঙ্ক!

মুশকিল হলো, সহমর্মিতার পরিবর্তে অনেকের উৎসাহ এর মধ্যে থেকেও যদি সমালোচনার রসদ সরবরাহের প্রয়াস করতে ব্যস্ত।

তাদের এটা জানার প্রয়োজন যিনি পাইলট ছিলেন তাঁর উড়ানের অভিজ্ঞতা কতখানি ছিল যে প্লেন ওড়ার দু মিনিট এর মধ্যে "মে ডে" কল তিনি করেন কিন্তু সময় পান নি নিজেকে তথা তার সহকর্মী এবং যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে!

1000060129.jpg

বর্তমানে সকলের নজর ফরেনসিক রিপোর্ট এর দিকে তথা ব্লাক বক্স থেকে উদ্ধার ডেটার দিকে।
তবেই এটা বোঝা সম্ভব কি কারণে দুপুর ১ টা বেজে ৩০ মিনিটে ওড়া প্লেন ১ টা বেজে ৩৮ মিনিটে ক্র্যাশ করে!

এই দুর্ঘটনা নিজে সকলের সমালোচনার চাইতে সহমর্মিতা ব্যক্ত করা উচিত। কয়েকশো কিলোমিটার উড়োজাহাজ চালাবার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ছিলেন প্লেনে উপস্থিত পাইলট যুগল।

বিষয়টি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে কারণ আমার বাবা ছিলেন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স কোম্পানির ইনজিনিয়ারিং পদে।

কাজেই, তিনি আমাদের প্রায়শই সঙ্গে নিয়ে যেতেন এয়ারপোর্ট এর একেবারেই অভ্যন্তরে যেখানে অনেকের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

কিভাবে একটি প্লেন কোনো একটি স্থানে পৌঁছনোর পরে, টেকনিশিয়ান দের কাজ থাকে সেই প্লেনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা সেটাও সামনে থেকে দেখেছি।

পাইলট, কো - পাইলট সহ প্লেনের ক্রু মেম্বার দের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ান থাকতো আগে, এয়ার হোস্টেস ছাড়াও।

প্রায়শই, বাবার ফ্লাইট ডিউটি থাকতো এবং তিনি আমাদের কাছে গল্প করতেন, তাদের কি ধরনের দায়িত্ব পালন করতে হতো।

কাজেই, সমালোচনা করবার আগে ভাবতে হবে,এই দুর্ঘটনায় কিন্তু সাধারণ নাগরিক সহ সেই মানুষদের কেউ জীবিত নেই যারা বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন।

আমি সত্যি স্তম্ভিত! আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৪০০ কোটি কিন্তু মানসিক ক্ষতি তার চাইতে অনেক অধিক।

আজকের লেখায় বিষয়টি সম্পর্কে লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার দুটি কারণে একটি মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে!
আরেকটি কারণ হলো, যারা সম্পদ, অর্থ, ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করেন, তাদের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, কে বেশি শক্তিশালী।

তবে, এক্ অনন্য নজির হিসেবে রয়ে গেছেন জীবিত একমাত্র প্যাসেঞ্জার! যিনি এটাও প্রমাণ করেছেন, মৃত্যু নির্ধারণ করে, কখন কিভাবে কার জীবনে সে এসে উপস্থিত হবে।
লক্ষ উড়ানের মধ্যে যেমন একটি নজিরবিহীন এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, তেমনি কোটির মধ্যে একজন এই ধরনের দুর্ঘটনায় জীবিত থাকেন।

এই ক্ষতির কোনো ক্ষতিপূরণ সত্যি সম্ভব নয়, তবে জীবনের অনেক কিছুর মধ্যে একটি কঠোর সত্যি হলো মৃত্যু।

তাই পরিশেষে বলবো, সকল মৃত মানুষদের আত্মার শান্তি কামনা করি।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...
 last month 

এয়ার ইন্ডিয়ার এই দুর্ঘটনাটা আমাকে বেশ খানিকটা নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। কারণ ওই দিনই আমার ভাই এয়ার ইন্ডিয়ার একটা প্লেনে করেই শ্রীলংকা থেকে দেশে ফিরে। আমি ওকে আনতে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম সেদিন। বাসায় ফিরে টিভি ও করার সাথে সাথে এই দুর্ঘটনার নিউজটা আমার চোখে পরে।
আমি এতো বড়ো দুঘটনার সংবাদ পেয়ে খানিকটা সম্ভিত হয়ে যায় সেই সাথে এটাও মনে হয় যে এই ধরণের একসিডেন্টতো আমার ভাইয়ের সাথেও হতে পারতো।
যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং সেই সাথে শোকার্ত পরিবারগুলোর প্রতিওসমবেদনা রইলো।
আসলেই মানুষের মৃত্যু যে কখন কিভাবে আসবে সেটা কেউ জানে না। আমরা যতই উন্নত হয় না কেন এখনো সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছের কাছে অনেক বেশি অসহায় ,
ভালো থাকবেন সবসময়।