জেনারেল রাইটিং : স্বেচ্ছায় রক্তদান।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
আজ দুপুরে অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায় দেখি একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ীতে লাগানো ব্যানারে লেখা ভ্রাম্যমাণ স্বেছায় রক্তদান কর্মসূচি। আয়োজনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এর সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। সে বিষয়ে না হয় আর একদিন বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে। আমার আজকের আগ্রহ কোয়ান্টামের স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে। আপনারা জানেন, রক্ত দেওয়া মহৎ কাজ। আর এই রক্তদান কর্মসূচি কে জনপ্রিয় করতে অনেক সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম সন্ধানী, বাঁধনসহ কোয়ান্টামের মত কিছু সংগঠন। অসুস্থ রোগীর জীবন বাঁচাতে এক ব্যাগ রক্ত কত প্রয়োজনীয় ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। আজকে আমি চেষ্টা করবো রক্তদানের বিস্তারিত তুলে ধরতে।
আজ রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ রক্তদান কর্মসূচির গাড়ী দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নষ্টালজিক হয়ে গিয়েছিলাম। ছাত্র জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে অনেক কাজ করেছি বাঁধনের সাথে যুক্ত থেকে। সেই দিন গুলোর কথা বারবার মনে পড়ছিল। আপনারা জানেন, রক্ত মানবদেহের সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান। কোনো মানুষই রক্ত ছাড়া বাঁচতে পারে না। কিন্তু নানা দুর্ঘটনা, অস্ত্রোপচার, প্রসবকালীন জটিলতা কিংবা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে অনেক সময় মানুষের রক্তের প্রয়োজন হয়। এই মুহূর্তে একজন দাতা যদি স্বেচ্ছায় রক্ত দেন, তবে সেই রক্ত অন্য কারও জীবন বাঁচাতে পারে। এর চেয়ে ভালো ও মহৎ কার আর কি হতে পারে? এর চেয়ে মহৎ কাজের দৃষ্টান্ত আর নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশে প্রতিদিন কত শত রোগীর রক্তের৷ প্রয়োজন হয় তার হিসেব নেই। একজন অপারেশন রোগী বা এক জন থ্যালাসেমিয়া রোগীর জীবন নির্ভর করে সময়মতো রক্ত পাওয়ার উপর। সময় মত রক্ত না পেয়ে আমাদের দেশে কত মানুষ মারা যায় ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। একজন সুস্থ সবল মানুষের বছরে দুই তিন বার রক্ত দানে বাধা নেই। যদি প্রতিটি সুস্থ ও সবল মানুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন, তাহলে কোনো রোগী রক্তের অভাবে মারা যাবে না। আর হ্যাঁ, রক্তদান শুধু অন্যের জীবনই বাঁচায় না, দাতার শরীরেরও উপকার করে। রক্তদানের মাধ্যমে দাতার শরীর নতুন রক্তকণিকা তৈরি করে, শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং সবচেয়ে বড় পাওয়া মানসিক তৃপ্তি। যা রক্ত দাতা মাত্রই জানেন। অনেক রক্ত ভসি বোন তৈরি হয়ে যায়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে,নিয়মিত রক্তদাতারা অনেক বেশি সুস্থ থাকেন। তবে রক্তদাতার বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে এবং ওজন অন্তত ৫০ কেজি। দাতা যেন কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত না হন, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।নিয়মিত রক্তদানের আগে চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
পরিশেষে একথা বলতে হয়,স্বেচ্ছায় রক্তদান একটি সামাজিক দায়িত্ব। এটি কোনো লিঙ্গ, ধর্ম, জাতি বা শ্রেণির সভেদাভেদ নেই।সবার রক্ত এক লাল। প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের উচিত নিয়মিত রক্তদান করা এবং অন্যকেও উৎসাহিত করা। আসুন, এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে একজন প্রাণের জীবন বাঁচাই।


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.