ডাক্তারের রমরমা ব্যবসা আর রোগীদের ভোগান্তি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমার পক্ষ হতে সকলকে আমার হৃদয়ের গভীর থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা। আজকে আমি একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করব, যা কেবল আমার না ববরং আমাদের সমাজের অসংখ্য মানুষের প্রতিদিনের বাস্তবতা।
আজ দুপুরে আমার মা'কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। মা কয়েক দিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন, ও পাশাপাশি অনেক সমস্যা ও রয়েছ। এখন আবার মাঝে মাঝে বুক ধড়ফড় করে, শরীরে দুর্বলতা, হেঁটে হাঁপিয়ে ওঠ, হাটু ব্যাথা, কোমরে ব্যাথা এসব সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। চিন্তায় পড়ে গেলাম, দ্রুত একজন ভালো ডাক্তার দেখানো দরকার।
দুপুর ১২ বের হলাম, ১.৩০ এর আগেই ক্লিনিকে পৌঁছে গেলাম, ভেবেছিলাম আগেভাগে গেলে হয়তো তাড়াতাড়ি সিরিয়াল পাবো। কিন্তু গিয়ে দেখি, আগে থেকেই লাইন লেগে আছে। অনেকে অনেক আগে এসে বসে আছে শুধুমাত্র একবার “ডাক্তার সাহেব” কে দেখার আশায়। বুকের ভিতর একটা চাপা কষ্ট হতে লাগলো। আমরা কী এমন এক সমাজে বাস করছি, যেখানে চিকিৎসা পাওয়া নিজেই যেন একটা যুদ্ধ?
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও কোনো খবর নেই। সিরিয়াল এগোয় না, ডাক্তার আসেন বেলা ২টার পরে, অথচ রোগীদের সকাল থেকেই বসিয়ে রাখা হয়। একেকটা রোগী ঢুকছে, ৪-৫ মিনিটেই বের হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন জাগে এত কম সময়ে কীভাবে একজন রোগীর আসল সমস্যাটা বোঝেন ডাক্তাররা? আরেকটু খেয়াল করলে বোঝা যায়, এই চিকিৎসাব্যবস্থা এখন অনেকটাই বাণিজ্যিক হয়ে গেছে। বিভিন্ন ল্যাব টেস্ট, একের পর এক ওষুধ, আবার নতুন করে চেকআপ। যেন একটা চক্র। যেখান থেকে রোগী বের হতে পারে না। ডাক্তার সাহেবের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির আনাগোনা, উপহার, প্রমোশন সবই চোখে পড়ে। অথচ পাশে বসা এক বৃদ্ধা মহিলা দীর্ঘক্ষণ বসে থেকেও তার অসুস্থ ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে পারছেন না।
আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই, একজন ডাক্তার। যিনি এক সময় শপথ নেন মানুষের সেবা করার। তিনি কীভাবে সময়ের চেয়ে টাকার পেছনে ছোটেন? রোগী যেন একেকটা নাম্বার মাত্র, মানুষ না। রোগীর চোখে জল, বুকের কষ্ট, পরিবারের উৎকণ্ঠা কিছুই যেন আর গুরুত্ব পায় না। অবশেষে বিকেল ৪ টায় যখন আমার মায়ের সিরিয়াল এল, তখন মা অনেকটা ক্লান্ত। তার শরীরটা একেবারেই ভালো ছিল না। কিন্তু ডাক্তার সাহেবের কাছে আমাদের থাকার সময় মাত্র ৩ মিনিট। প্রেসক্রিপশনে একটা টেস্ট লিখে দিলেন, আর বললেন টেস্ট করিয়ে ননিয়ে আসেন। প্রশ্ন করলেই বিরক্তির ছাপ। কষ্ট লেগে গেল। টেস্ট করিয়ে বসে আছি তো আছিই, এখন রাত ৮ টা বাজে কিন্তু ডাক্টারের আর দেখা নেই। এখন বসে বসে ভাবছি চলে যাবো না কি আরো অপেক্ষা করবো....!
আমি কোনো ডাক্তারকে অপমান করতে চাই না। এখনও অনেক ভালো মনের চিকিৎসক আছেন। কিন্তু দুঃখজনক সত্যি হলো,আজকাল এই পেশা অনেকের কাছে ব্যবসা হয়ে গেছে। আর তার খেসারত দিচ্ছে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ। আমার শুধু একটাই চাওয়া চিকিৎসা যেন সবার জন্য সহজলভ্য ও মানবিক হয়। একজন রোগী যেন তার সমস্যাটা অন্তত মন খুলে বলতে পারে। একজন মা যেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে না থাকে শুধুমাত্র একটুকরো প্রেসক্রিপশনের আশায়। আপনারাও নিশ্চয়ই এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। নিচে কমেন্টে লিখে জানাবেন, কেমন ছিল আপনাদের অভিজ্ঞতা। একসাথে কথা বললেই পরিবর্তন সম্ভব। আজ আর বেশি কিছু লিখছি না। এতো সময় ধরে ডাক্টারের অপেক্ষা করা হলে ভালো মানুষেও অসুস্থ হয়ে যাবে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ডাক্তারের রমরমা ব্যবসা আর রোগীদের ভোগান্তি
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ......