পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

মানব জীবনে সৌভাগ্য একটি আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। সবাই চায় জীবনে সফলতা, সমৃদ্ধি ও সুখ-শান্তি অর্জন করতে। কিন্তু কেবল সৌভাগ্যের আশা করলেই তা অর্জিত হয় না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রগতির পেছনে একটি মূল চালিকাশক্তি কাজ করেতা হলো পরিশ্রম। বাংলা প্রবাদে বলা হয়,পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি,অর্থাৎ সৌভাগ্য বা সাফল্য আসে তখনই, যখন মানুষ নিরলস পরিশ্রম করে।

মানুষের জীবনে কিছুই অযাচিতভাবে আসে না। প্রকৃতি কাউকে বিনা পরিশ্রমে কিছু দেয় না। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, যারা বিশ্বে নাম কুড়িয়েছেন, যাদের সফলতা আজও উদাহরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়—তাঁরা প্রত্যেকেই কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেদের স্থান তৈরি করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন হাজার বার ব্যর্থ হয়েও বিদ্যুতের বাতি আবিষ্কারে সফল হন। তিনি বলেছিলেন, জিনিয়াস হলো এক শতাংশ প্রেরণা এবং নিরানব্বই শতাংশ পরিশ্রম।তাঁর এই উক্তিই প্রমাণ করে যে, সাফল্যর মূল ভিত্তি হলো পরিশ্রম।

পরিশ্রম মানুষের মনের জোর বাড়ায়, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে এবং জীবনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে—পড়াশোনা, কর্মজীবন, ব্যবসা বা শিল্প—যেখানে পরিশ্রম নেই, সেখানে উন্নতি বা সফলতার আশা বৃথা। ছাত্র যদি নিয়মিত অধ্যয়ন না করে, তাহলে ভালো ফলাফল আশা করা যায় না। কৃষক যদি জমিতে ঘাম না ঝরান, তাহলে ফসল ফলবে না। শিল্পী যদি অনুশীলন না করেন, তাহলে তাঁর শিল্পকর্ম নিখুঁত হবে না।

পরিশ্রম এমন এক বিনিয়োগ, যার সুদ জীবনভর মানুষ পায়। সমাজে যাঁরা ধনী,প্রতিষ্ঠিত বা সম্মানিত,তারা কেউই হঠাৎ করে এমন হননি। তাঁদের প্রতিটি সাফল্যের পেছনে রয়েছে অগণিত রাত জেগে কাজ করার ইতিহাস, অনুপ্রেরণা হারিয়েও টিকে থাকার সংগ্রাম এবং বারবার ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা।

তবে অনেকেই ভাগ্যকে বড় করে দেখে, মনে করে পরিশ্রম না করেও যদি ভাগ্য সহায় হয়, তাহলে সফল হওয়া সম্ভব। বাস্তবতা হলো, ভাগ্য তখনই সহায় হয়, যখন মানুষ নিজেকে তার উপযুক্ত করে তোলে। ভাগ্য কোনো অলৌকিক শক্তি নয়,এটি সৃষ্টি হয় মানুষের চিন্তা, চর্চা ও প্রচেষ্টার দ্বারা। অনেকে হয়তো সুযোগ পায়, কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে কেবল পরিশ্রমী মানুষরাই।

বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে যারা পরিশ্রম করতে ভয় পায় বা অলসতা বেছে নেয়, তারা পিছিয়ে পড়ে। অন্যদিকে, যে ব্যক্তি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে, নিজেকে গড়ে তোলে, সে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই পারে। সময়ের সদ্ব্যবহার ও অধ্যবসায় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।

সুতরাং, “পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি” কথাটি শুধু প্রবাদ নয়, বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার সারমর্ম। সফলতা কেবল তাঁদের হাতেই ধরা দেয়, যারা ধৈর্য, নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে চায়। তাই আমাদের উচিত, ভাগ্যের আশায় বসে না থেকে নিজের কর্ম ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের সৌভাগ্য নিজেই গড়ে তোলা।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।