পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে করণীয়

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

পড়াশোনা মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি কেবলমাত্র পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য নয়, বরং জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা অনুভব করে। প্রযুক্তির ব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আসক্তি, মানসিক চাপ, এবং অসংগঠিত জীবনযাপনের কারণে এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হলেও, কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করলে এটি সম্ভব।

পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে হলে নিয়মিত রুটিন মেনে চলা জরুরি। দিনের কোন সময়ে কোন বিষয় পড়তে হবে তা আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখলে মনোযোগ বেশি থাকে। এতে সময় নষ্ট হয় না এবং পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা তৈরি হয়।

শান্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশ পড়াশোনার জন্য উপযোগী। যদি চারপাশে শব্দ থাকে বা ঘর অগোছালো থাকে, তবে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। একটি আলাদা পড়ার ঘর বা কোণ তৈরি করে সেখানে পড়লে মনোযোগ বাড়ে।

পড়ার সময় মোবাইল ফোন, ট্যাব বা কম্পিউটার ব্যবহার না করাই ভালো, যদি তা একান্ত জরুরি না হয়। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি মনোযোগ নষ্ট করে। ফোনকে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ মোডে রাখা বা দূরে রেখে পড়লে মনোযোগে উন্নতি হয়।

একটানা অনেকক্ষণ পড়াশোনা করলে মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই প্রতিটি ৪৫-৫০ মিনিট পড়ার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নেয়া উচিত। এই সময়ে চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেয়া বা হালকা হাঁটাচলা করা যেতে পারে, যা মনকে সতেজ রাখে।

পড়াশোনার উদ্দেশ্য যদি স্পষ্ট না হয়, তবে সহজেই মনোযোগ হারিয়ে যায়। কোন পরীক্ষা, কোন গ্রেড, বা কোন লক্ষ্য অর্জন করতে চাই তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখলে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।

যখন আমরা বুঝে বুঝে পড়ি, তখন পড়া অনেক বেশি উপভোগ্য হয়। মুখস্থ না করে বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করলে মনোযোগ বেশি থাকে। নোট তৈরি করা, মাইন্ড ম্যাপিং বা নিজে নিজে পড়া ব্যাখ্যা করা মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে মনোযোগ ধরে রাখা যায় না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো, সুষম খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে। সুস্থ শরীর মনকে চঞ্চলতা থেকে দূরে রাখে এবং পড়াশোনায় মন বসে।

নিজের প্রতি আস্থা রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি পারব না, আমার মনোযোগ নেই ।এই ধরনের নেতিবাচক ভাবনা মনোযোগ নষ্ট করে। বরং আমি চেষ্টা করব,আমি ধীরে ধীরে উন্নতি করব এমন ভাবনায় মন প্রফুল্ল থাকে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ আসে।

মনোযোগ ধরে রাখা একটি অভ্যাস, যা সময়ের সাথে গড়ে ওঠে। প্রযুক্তির যুগে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। যদি আমরা সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করি, আত্মবিশ্বাস রাখি এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করি, তবে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়। একজন মনোযোগী শিক্ষার্থী শুধু ভালো ফলাফলই করে না, বরং সে জীবনেও সফল হয়।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।