মানসিক চাপ কমানোর উপায়

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

বর্তমান যুগে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। পড়াশোনা, চাকরি, পারিবারিক দায়িত্ব কিংবা সামাজিক প্রতিযোগিতা সব ক্ষেত্রেই মানুষকে মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে হয়। অতিরিক্ত স্ট্রেস শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না, বরং শারীরিক রোগও ডেকে আনে। তাই স্ট্রেস কমানোর কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি।

স্ট্রেস কমানোর অন্যতম সহজ উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম। শরীরচর্চা শরীরকে সক্রিয় রাখে এবং মস্তিষ্কে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা মনকে প্রশান্ত করে। প্রতিদিন অল্প সময় হলেও হাঁটা, দৌড়ানো কিংবা যোগব্যায়াম করলে মন ভালো থাকে। এর পাশাপাশি সুস্থ জীবনের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণও জরুরি। অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন অতিরিক্ত তেল, ঝাল, চা-কফি বা জাঙ্ক ফুড স্ট্রেস বাড়ায়, আবার ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও পর্যাপ্ত পানি শরীরকে সুস্থ রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

স্ট্রেস কমানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের অভাব মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং মেজাজ খিটখিটে করে তোলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। নিয়মিত ঘুম হলে মন শান্ত থাকে, শরীর সতেজ হয় এবং কাজ করার আগ্রহ বাড়ে।

কাজের চাপে অনেক সময় মানুষ অযথা মানসিক চাপগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে সময় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে ধাপে ধাপে শেষ করলে চাপ কম অনুভূত হয়। একইভাবে গভীর শ্বাস নেওয়া এবং মেডিটেশন মনকে শান্ত করে। প্রতিদিন কিছু সময় নিরিবিলি পরিবেশে চোখ বন্ধ করে ধ্যান করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং দুশ্চিন্তা কমে যায়।

মানুষের চিন্তাধারাও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে। সবসময় নেতিবাচক দিক নিয়ে ভাবলে চাপ আরও বাড়ে। তাই জীবনের ছোট ছোট সাফল্যে আনন্দ খুঁজে নেওয়া, নিজের সীমাবদ্ধতার বদলে ইতিবাচক দিকগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়া এবং আশাবাদী মানসিকতা তৈরি করা প্রয়োজন। একইভাবে অবসর সময়ে বিনোদনও স্ট্রেস কমানোর কার্যকর মাধ্যম। গান শোনা, বই পড়া, আঁকাআঁকি করা বা প্রিয় শখের কাজে সময় কাটানো মনকে সতেজ রাখে। পরিবার-পরিজন বা বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটানোও মন ভালো রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়।

এছাড়া প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারও স্ট্রেস বাড়ায়। মোবাইল ফোন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত সময় কাটালে মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারে সংযমী হতে হবে এবং বাস্তব জীবনে পরিবার ও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রকৃতির মাঝে হাঁটাহাঁটি করা, খোলা বাতাসে সময় কাটানো মনকে হালকা করে।

সবশেষে বলা যায়, স্ট্রেস পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব নয়, তবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, সময় ব্যবস্থাপনা, মেডিটেশন, ইতিবাচক চিন্তা, বিনোদন ও প্রযুক্তি ব্যবহারে সংযমের মাধ্যমে মানসিক চাপ অনেকটাই কমানো যায়। শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া জরুরি। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিনের জীবনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা, যাতে আমরা সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারি।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।