কৃত্রিম সোনা।।০৪ আগস্ট ২০২৫
হ্যালো বন্ধুরা,
সোনা কৃত্রিমভাবে তৈরি করার বিষয়টি আসলে পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি জটিল প্রক্রিয়া, যাকে বলা হয় ট্রান্সমিউটেশন (transmutation)। সোনা হলো এক ধরনের মৌল (Element) যার নিউক্লিয়াসে ৭৯টি প্রোটন থাকে।কোনো মৌলকে সোনায় রূপান্তর করতে হলে তার নিউক্লিয়াসের গঠন পরিবর্তন করে প্রোটনের সংখ্যা ৭৯ করতে হবে।কিন্তু সাধারণ রাসায়নিক বিক্রিয়া ইলেকট্রনের স্তর বা কক্ষপথে ঘটে, নিউক্লিয়াসে নয়; তাই রাসায়নিক উপায়ে সোনা বানানো সম্ভব নয়।
এর জন্য লাগে পারমাণবিক বিক্রিয়া (Nuclear Reaction)।২০ শতকের মাঝামাঝি থেকে বিজ্ঞানীরা পার্টিকল অ্যাক্সিলারেটর বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর ব্যবহার করে পারদ (Mercury) বা বিসমাথ (Bismuth) এর নিউক্লিয়াসে উচ্চ শক্তির নিউট্রন বা প্রোটন bombard করে দেখেছেন, কিছু নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীল বিন্যাস বদলে গিয়ে সোনা তৈরি হয়।তবে এই সোনার পরিমাণ খুবই সামান্য—মাত্র কয়েক ন্যানোগ্রাম বা মাইক্রোগ্রাম স্তরে যা সংগ্রহ করাও কঠিন।
বিস্তারিতভাবে বললে যখন কোনো হালকা মৌলের নিউক্লিয়াসে নিউট্রন প্রবেশ করানো হয়,তখন নিউক্লিয়াসটি অস্থিতিশীল হয়ে যায় এবং কিছু সময় পর বিটা ক্ষয় (beta decay) করে অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয়।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি চূড়ান্ত ফলাফলে নিউক্লিয়াসে ৭৯টি প্রোটন থাকে তবে সেই মৌলটি সোনা হবে।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,পারদ (Hg-196)-এর আইসোটোপে নিউট্রন bombard করলে Hg-197 তৈরি হয় যা বিটা ক্ষয়ের মাধ্যমে সোনায় (Au-197) রূপান্তরিত হতে পারে।কিন্তু এই প্রক্রিয়ার জন্য যে পরিমাণ শক্তি এবং যন্ত্রপাতি লাগে তার খরচ কয়েক মিলিয়ন ডলার—অথচ উৎপাদিত সোনার দাম হয় মাত্র কয়েক ডলার!এই কারণেই শিল্প বা ব্যবসায়িকভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না।
মজার বিষয় হলো, মহাবিশ্বে সোনার স্বাভাবিক উৎপত্তি হয় তারা বিস্ফোরণ (সুপারনোভা) এবং নিউট্রন স্টার মার্জার-এর সময়।সেই ভয়ংকর মহাজাগতিক ঘটনায় প্রচণ্ড চাপ ও তাপের কারণে নিউক্লিয়াসের ভেতর নিউক্লিয়ন (প্রোটন ও নিউট্রন) পুনর্বিন্যস্ত হয় এবং সোনা, প্লাটিনাম ইত্যাদি ভারী মৌল তৈরি হয়।পৃথিবীতে আমরা যে সোনা পাই তা কোটি কোটি বছর আগে এই ধরনের নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হয়েছে এবং গ্রহ গঠনের সময় শিলার ভেতরে জমে গেছে।
তাহলে সারসংক্ষেপে বলা যায়,বৈজ্ঞানিকভাবে সোনা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সম্ভব, কিন্তু প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, জটিল এবং ফলাফল অতি সামান্য।তাই বাস্তবে কৃত্রিমভাবে সোনা উৎপাদন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বা শিল্পে কার্যকর নয়।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
কৃত্রিমভাবে সোনা তৈরির কথা পূর্বে জানা থাকলেও, ল্যাবরেটরিতে সোনা তৈরির এসব ধাপ সম্পর্কে আমার ইতিপূর্বে কোনো বিস্তর ধারনা নেই।মারকারি থেকে গোল্ড তৈরির এ ব্যাপারটিকে এত সুন্দরভাবে বুঝিয়ে ব্যাখ্যা করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।