অন্তরালের ছায়া, পর্ব ৬ : ছায়া যার মুখ খুলে দেয়

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

পর্ব ৬ : ছায়া যার মুখ খুলে দেয়


1000107184.jpg

পুলিশের দৃষ্টিতে আরিয়ানের মৃত্যু ছিল শুধুই আরেকটা দুর্ঘটনা । তারা কিছু ফরমাল জিজ্ঞাসাবাদ করে আরিয়ানের মৃত্যু ফাইলে “Accidental Death” লিখে কেস ক্লোজ করে দেয় ।
কিন্তু সামিন জানে, চোখ যে বলে সব — মিথ্যে বলে না ।

সে আরিয়ানের বাড়ির আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ রিভিউ করতে করতে এক পর্যায়ে পাশের একটি বিল্ডিংয়ের ক্যামেরায় কিছু খুঁজে পায় । সেখানে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায় একজন রহস্যময় ব্যক্তি — মুখে চাদর, চলাফেরায় অদ্ভুত সতর্কতা ।

“ছায়ার মতোই…” — সামিন আপন মনে বলে ।

তবে একটা দিন…
একটা ঝড়বৃষ্টির দিন…

হঠাৎ প্রবল বাতাসে সেই মুখোশ সরে যায়… মাত্র তিন সেকেন্ড — কিন্তু এই তিন সেকেন্ডই যথেষ্ট সামিনের চোখ এবং স্ক্রিনশটের জন্য ।

অন্যদিকে রনি আর আবিদ তাদের তদন্তে জানতে পারে, অনন্যর একজন স্বামী আছে — নাম রিয়াদ ।

ম্যানেজার বলেছিল —
“ওরা দুজন ছিলো একে অপরের পাগল । কিন্তু অনন্যার মৃত্যুর পর রিয়াদ একেবারে উধাও হয়ে যায় ।”

তারা রিয়াদের ছবি সংগ্রহ করে গোয়েন্দা ইউনিটে পাঠায় ।

ছবি পাওয়ার পর গোয়েন্দা দল স্তব্ধ...

সিসিটিভি ফুটেজে যে ছায়ামূর্তিকে দেখা যাচ্ছিল, সে আর কেউ না — রিয়াদ!

সময় নষ্ট না করে গোয়েন্দা দল রওনা দেয় রিয়াদের বাড়ির দিকে ।
তাদের সন্দেহ — রিয়াদ হয়তো এখন অর্ণবের পেছনে লেগেছে!

রিয়াদের বাসায় পৌঁছে তারা দেখতে পায় দেওয়ালে টানানো ছায়াময় কিছু ছবি —
নিশি, অর্ণব, আরিয়ান…

একে একে তিনজনের গতিবিধির রেকর্ড, ফটো, টাইমলাইন, এমনকি কখন কে কোথায় যায় তার বিস্তারিত — যেন একেকটা টার্গেট ।

মুন্না চিৎকার করে বলে,
— “এই লোকটা স্পষ্টভাবে সিরিয়াল রিভেঞ্জ প্ল্যান করতেছে!”

বখতিয়ার তখনই অর্ণবকে ফোন করে ।
... কিন্তু ফোন বন্ধ ।

গোয়েন্দা ইউনিটের হৃদস্পন্দন যেন একসাথে বন্ধ হয়ে যায়।

বখতিয়ার ফিসফিস করে বলে —
— “রিয়াদ এবার ছায়া থেকে বেরিয়ে সামনে আসছে... এবং আমাদের সময় ফুরিয়ে আসছে ।”


চলবে…


পর্ব ৭-র টিজার

“যখন ছায়া একবার আঁধারে ডাকে, তখন আলোয় ফেরা কি আর সম্ভব?”
পরবর্তী পর্ব : শেষ খেলা, শেষ ছায়া…


অন্তরালের ছায়া, পর্ব ৫ : দূর্ঘটনা, না ছায়ার প্রতিশোধ?


লেখক পরিচিতি


আমি বখতিয়ার রশিদ — গল্প বলার ফাঁকে সময় খুঁজি, আর সময়ের ফাঁকেই খুঁজে পাই গল্প । ক্রাইম থ্রিলার হোক বা অদ্ভুত, আমি সবসময় খুঁজি মানুষ আর মনের রহস্য । ছায়া, অন্ধকার আর মানবিক টানাপোড়েনে গাঁথা আমার চরিত্ররা কখনো নায়ক নয়, কখনো খলনায়কও নয়—তারা শুধু মানুষ । আমি বিশ্বাস করি, গল্প হোক বা সিনেমা অথবা সিরিজ—প্রতিটি লাইন, প্রতিটি সংলাপ একটা জীবন্ত স্পর্শ ছুঁয়ে দিক পাঠকের হৃদয়ে । কেননা
—“ছায়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকে গল্প… আর সেই গল্প খোঁজে বখতিয়ার।”