হাসপাতালে নিজের ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা..!
"হ্যালো বন্ধুরা"
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি আশাকরি আমার আজকের পোস্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে!
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন।
ভগবান আমাকে যেমন বিভিন্ন রকম সমস্যা দেন আবার তিনিই আমাকে সবসময় সবকিছু থেকে মুক্ত করেন।আর এটা সম্ভব শুধুমাত্র তাঁর প্রতি আমার অগাধ আস্হা ও ভরসার ফল!🙏
দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে আমি অসুস্থ!ডাক্তার চিকিৎসা এগুলো নিয়েই আমার জীবন চলছে।তারমধ্যে মা অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর সাথে দুই মাসের বেশি সময় হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়েছিলো!ঢাকা CMHA হসপিটালের সবকিছুই আমার মুখস্থ হয়ে গেছে কোথায় কি আছে সবকিছুই মোটামুটি জানা।দীর্ঘ সময়ে কখনোই হাসপাতালে থাকা বা রাত কাটানো লাগেনি।সারাদিন হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে দিনশেষে তেজগাঁও থানায় আমার বড় কাকার বাসায় থাকতাম।ওটাই আমাদের সবসময়ই নির্ভরযোগ্য স্থান ছিলো।
মেজো বৌদির অপারেশন ওর সাথে সারাদিন CMHA
থাকা সবমিলিয়ে ও জায়গা টা নিজের বাড়ির মতো হয়ে গেছিলো এরকম একটা অবস্থা।তাই হাসপাতাল ডাক্তার এগুলো আমার কাছে কিছুই মনে হয় না।তবে এবার নিজের অপারেশন এর কথা শুনে একটু ভয়ই পেয়েছিলাম!শুধুমাত্র মনের জোরে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে নিয়ে সবকিছুই একা নিজেই করেছি।গত দুই তারিখ আমাকে ডাকা হয়েছিলো সেদিন একা আসতে সাহস পাইনি তাই বৃত্ত কে ডেকে এনেছিলাম ও আমার সাথে ছিলো।কিন্তু সেদিন এই এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ টি চালু ছিলো না তাই আমাকে ভর্তি করানো হয়নি।ডাক্তার আমার নাম ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর লিখে রাখলেন এবং বললেন আপনাকে যেদিন কল করবো সেদিন আসবেন।
গতকাল যখন বৃত্ত কে ডাক্তার কল করে আমাকে ভর্তির জন্য ডেকেছিলো তখন বৃত্ত আমাকে কল করে জানালো।তখন থেকে খুবই ভয় লাগছিলো কিন্তু কিছু করার নেই আমাকে আসতেই হবে।রাতেই সবকিছু প্রস্তুতি নিলাম।টেনশনে রাতে একটু ঘুমাতে পারিনি।সকাল সকাল বড় মেয়েকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য আসলাম।প্রথমে ডাক্তার দেখাইলাম, তারপর ফর্মালিটি শেষ করে ৬ তলায় এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে আসলাম!সেখানে আবারও ডাক্তার দেখলন,বিভিন্ন ঔষধ পত্র লিখে দিলেন।আমাকে বেড দেখিয়ে দিলেন এবং নতুন বিছানাপত্র দিয়ে পরিপাটি করে বিছানা ঠিক করে দিয়ে বললো আপনি রেস্ট করেন।তার কিছুক্ষণ পরে একসাথে পাঁচজন ডাক্তার আসলেন এবং এক এক করে সবাই আমার সমস্যা দেখলেন আর বললেন চিন্তা করবেন না আমরা রাতে আবারও বোর্ড করে সিদ্ধান্ত নিবো অপারেশন টা কে করবে!শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে এই এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে সার্জারী এটাই প্রথম হবে এবং আমিই হলাম সেই প্রথম রোগী।আমার পরে ১৪-১৫ বছরের একজন আসলো ও ১৩ বছর পর্যন্ত মেয়েবাচ্চা ছিলো হঠাৎ করেই ছেলে হয়ে গেছে। এখন একটা সার্জারী করলে ও পরিপূর্ণ ছেলে হয়ে উঠবে।
নতুন বিভাগ তাই সবকিছুই মোটামুটি ভালো।থাকার সুব্যবস্থা রুম টা বেশ বড়সড় এবং পরিস্কার আমার বেডের পাশে বড় জানালা,সাথে অনেক বড় বারান্দা। বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করা যাবে।সবমিলিয়ে ভালো আছি।রাত টুকু যদি পার করতে পারি তাহলে আরও কয়দিন থাকা লাগলেও কিছু মনে হবে না।আশাকরি ভগবানের অশেষ কৃপায় সবকিছুই ভালোভাবেই হবে এটা আমার বিশ্বাস।সবাই যে যার জায়গা থেকে আমার খোঁজখবর নিচ্ছে সবার আশীর্বাদ এবং ভগবান সহায় থাকলে সবকিছুই সহজ হয়।
অনেকেই আসতে চাইছে,কিন্তু আমিই না করেছি।এই মুহূর্তে এখানে কারো থাকাটা দরকার মনে করছি না তাই আমিই না করেছি।আমি আমার সকল কিছু কে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিতে পারি এবং সবরকম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো ভগবান আমাকে এক অন্য রকমের শক্তি দিয়ছেন!আর তাই কোনোকিছুতে আমি আর এখন ভয় পাই না।আর আমার সন্তানেরাও ঠিক আমার মতোই হচ্ছে ওরাও সবদিক থেকে নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করছে যাতে কখনো কোনোকিছুতে ঠেকে না যায়।আমার মেয়ে সকল ঔষধ পত্র কিনে আনলো।এখন আরও দুইটা ঔষধ লাগবে সেগুলো এখানে পাওয়া যাচ্ছে না,বগুড়ার নামকরা দোকান সবুজ মেডিকেল ওখানে কল করা হলো ওদের কাছেও নেই!ওরা বললো জান্নাত ফার্মেসীতে পাওয়া যাবে মেয়ে সেখানে চলে গেলো ঔষধ আনার জন্য।আমার মেয়ে একটা ছেলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়.....আর এটা আমার জীবনে ভগবান দেওয়া আশীর্বাদ স্বরূপ শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি।🙏
আপনারা সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন যাতে খুব দ্রুত সুস্থতা লাভ করি।🙏☺️
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.