বড় মাসির শ্রাদ্ধ । shy-fox 10%
❤️আমার বাংলা ব্লগ বাসী❤️
সবাইকে আমার নমস্কার আদাব আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?কয়েকদিন ধরেই শরীর টা অনেক খারাপ যাচ্ছিলো তাই কমিউনিটিতে একদম এক্টিভ থাকতে পারিনি,আজ একটু সুস্থবোধ করছি তাই আবারও কাজে ফেরার চেষ্টায় পোস্ট লিখতে বসেছি।বেশ কয়েকদিন হলো শুধু ঘোরাঘুরির উপরে আছি বেশি জার্নি করা আমার শরীরের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায় কিন্তু কিছু করার নেই তারপরও মাঝে মাঝে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঘুরতে যেতে হয়।কয়েকদিন আগে আমি আমার বড় মাসির মৃত্যু নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম আজ মাসির শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান ছিলো সেখানে গিয়েছিলাম।
শ্রাদ্ধ হিন্দুশাস্ত্রানুযায়ী পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে এবং তাদের আশীর্বাদ কামনায় দান-ধ্যান ও অতিথিভোজন অনুষ্ঠান। সাধারণত মৃত ব্যক্তির সন্তান কিংবা আত্মীয়-স্বজনরা এ অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।শ্রাদ্ধ তিন প্রকার : আদ্যশ্রাদ্ধ, আভ্যুদয়িক বা বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ ও সপিন্ডীকরণ। আদ্যশ্রাদ্ধ অশৌচান্তে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে করণীয়। বর্ণভেদে ব্যক্তির মৃত্যুদিবসের ১১, ১৫ অথবা ৩০ দিন পরে এটি অনুষ্ঠিত হয়। মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন এ-কদিন ফলমূল, নিরামিষ এবং লবণ ছাড়া আতপ চালের ভাত খায়। শ্রাদ্ধের আগের দিন মৃত ব্যক্তির পুত্ররা মাথার চুল ফেলে দেয় এবং শাস্ত্রীয় নিয়ম-কানুনসমূহ পালন করে। শ্রাদ্ধের দিন সামর্থ্য অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া-প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ায়।
আজ অনেক বছর পর আমরা মাসির বাড়িতে গিয়েছিলাম কিন্তু সেই যাওয়াটা ছিলো খুবই কষ্টের। মাসি আমাদের ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন তাই আমরা সবাই মিলে মাসির শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলাম আর হয়তো কখনো এভাবে মাসির বাড়িতে যাওয়া হবেনা তার কারন যে মানুষটার জন্য যাওয়া সেই মানুষ টাই আর নেই তাই হয়তো আমাদের আর কখনো যাওয়া হবেনা।
সকাল সকাল আমি বড় বউদি,মেজো বউদি ও বাচ্চারা সহ একটা অটোরিকশা ভাড়া করে রওনা হয়ে গেলাম,আর আমার বড়দা মোটরসাইকেলে একসাথে সবাই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়লাম ঘন্টা দেড়েক পর আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছালাম।তখন বেলা দশটার মতো বাজে ততক্ষণে শ্রাদ্ধের জন্য সবকিছুই প্রস্তুত করা হয়ে গেছে।আমার যাওয়ার পর মাসির ছেলেরা শ্রাদ্ধ করতে বসে পড়লো।আমরাও প্রণাম করে সবাই বসে পড়লাম।
একদিকে ছেলেরা শ্রাদ্ধ করছে অন্য দিকে গীতাপাঠ হচ্ছে সেই সাথে কীর্তন চলছে এভাবেই দেখতে দেখতে কয়েক ঘন্টা সময় পর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষ হলো। সব ছেলেরা মাসির ছবি মাথায় নিয়ে এবং অন্য সবাই মিলে নাম কীর্তন করে সাতপাক প্রদক্ষিণ করে মাসির ছবিটা নিয়ে মাসির রুমের মধ্যে যায় সেখানে ছবিটা রেখে তারপর উঠোনে অনেক সময় ধরে কীর্তন করে।
শ্রাদ্ধ চলাকালীন সময়ে রান্নাবান্না করে নিমন্ত্রিত সবাইকে খাওয়ানোর জন্য।তখন প্রায় বিকেলে ৪ টার মতো বেজে গেছে তাই আমরা দেরি না করে সবাই খেতে বমে গেলাম তার কারন আমাদের কে আবার ফিরতে হবে। খাবারের শুরুতে দই,চিড়া মিষ্টি দেওয়া হলো এটা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের প্রধান খাবার দই চিড়া খাওয়ার পর ভাত,ডাল,সবজি,তরকারি সব একে একে দেওয়া হলো সেগুলো আমরা খেলাম রান্না এতই ভালো হয়েছিলো সবাই খুব তৃপ্তিসহকারে খেয়েছিলাম।
খাওয়ার পর্ব শেষ করে সব দাদা বউদিদের সাথে দেখা কথাবার্তা বললাম তারপর আশেপাশে সব পরিচিত বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে দেখা করে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। কিছুদূর আসতেই অটোরিকশার চাকা নষ্ট হয়ে গেলো তাই আমাদের কে আবারও নেমে অপেক্ষা করতে হলো নতুন চাকা লাগানো পর্যন্ত। অটোরিকশার চাকা ঠিক হওয়ার পর আবারও উঠে বসলাম তারপর একপর্যায়ে আমরা বাড়িতে এসে পৌঁছালাম।
স্বর্গীয় আত্মার শান্তি কামানা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সেই সাথে সবার কাছে বড় মাসির স্বর্গীয় আত্মার শান্তি কামনার জন্য অনুরোধ করছি, সৃষ্টিকর্তা যেনো বড় মাসিকে স্বর্গবাসী করেন।
ধন্যবাদ।
OR
শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান সম্পর্কে এতটা বেশি ধারণা আমার কখনোই ছিল না আপনার আজকের এই পোস্ট এর মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ টা জানতে পারলাম এ অনুষ্ঠানে গীতা পাঠ করা হয় এছাড়া আরো অনেক বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন। যেহেতু আমাদের নিকটস্থ বন্ধুদের ধর্ম এটা তাই এ বিষয়ে জেনে রাখা আমাদের প্রয়োজন আছে। যা আপনার পোষ্টের মধ্য দিয়ে জানার সুযোগ হল।
সকল ধর্মের বিষয় গুলো জেনে রাখা ভালো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
প্রিয়জন এর বিয়োগ সব সময়ই দুঃখের। আপনার মাসির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।ভগবান উনাকে স্বর্গবাসী করুন।আর উনার শোক সন্তপ্ত পরিবার কে ধৈর্য ধরার ক্ষমতা দিক ঈশ্বর এই কামনা করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই তোমাকে।
দিদি নমস্কার
প্রথমেই পরমশ্বের ভগবানের কাছে নিকট প্রার্থনা করি যে আপনার মাসির আত্মার শান্তি কামনা করি ৷ এবং তিনি যেন সর্গবাসি লাভ করে ৷ মৃত্যু একদিন সবার নিকট হাজির হবে ৷ সেদিন সবাইকে এ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে ৷
যা হোক আমাদের হিন্দু হিন্দুশাস্ত্রানুযায়ী যেসব করা উচিত ৷ তা প্রতিটি ই উপস্থাপনা করেছেন ৷
তবে দিদি এই শ্রাদ্ধ কতদিন পর করলো সেটা যদি বলতেন ৷ আসলে আমাদের বুঝেনি যে কেউ ১১মতে আবার কেউ ১৩ মতে ৷
বর্ণভেদে ব্যক্তির মৃত্যুদিবসের ৩, ১১, ১৫ অথবা ৩০ দিন পরে এটি অনুষ্ঠিত হয়। একমাত্র বৈদিকরা শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ৩ দিনে সম্পন্ন করে থাকে।আগে আমাদের কেউ মারা গেলে ৩০ দিন পরে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করা হতো কিন্তু এখন ১৫ দিন পর করে তার কারন হলো সবাই বিভিন্ন কাজের জন্য বাইরে থাকে তাই ৩০ দিন সকল নিয়মকানুন মেনে চলা কঠিন হয়ে যায় সেজন্যই ১৫ দিনে করা। ধন্যবাদ ভাই।
ও আচ্ছা যারা বৈদিক তারা তো তিন দিনে করে ৷ কিন্তু আমরা ১৩ দিনে করে থাকি ৷ যা হোক শুনে ভালো লাগলো ৷
কিছুদিন আগেই আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম আপনার বড় মাসী মারা গিয়েছেন। বড় মাসীর শ্রাদ্ধে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে আমার কাছে একটা জিনিস ভীষণ খারাপ লাগে তার মৃত্যুতে পরিবারের মানুষগুলো ভেঙে পড়েছে ও যার বাড়িতে গিয়েছেন, যে আপনার এতটা আপন ছিল আজ সে নেই। মাঝে মাঝে অনেক কিছুই মেনে নিতে কষ্ট হয়। যাইহোক বেশ কিছুদিন থেকে ব্যস্ততার মধ্যে আছেন বুঝতেই পারছি আপু। আশা করছি ধীরে ধীরে ব্যস্ততা কেটে যাবে।
জ্বি আপু আপন মানুষ টি নেই অথচ আমরা সবাই তার বাড়িতে ভাবতে গেলেই খুব কষ্ট লাগছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
দিদি আপনার মাসি মারা গেছে জেনে অনেক খারাপ লাগলো ৷ আসলে আপনার আগের পোস্টটি পড়া হয়নি আমার ৷ যাই হোক , আপনার বড় মাসির শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ৷ আপনার মাসির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ৷ তিনি যেনো স্বর্গবাসী হন ৷ ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ৷
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। দোয়া করবেন।
যাদের জন্য একটা পিছুটান থাকে তারা যদি না থাকে পরপারে চলে যায় তাহলে সেখানে আসা যাওয়াটা একটু অনিয়ম হয়ে যায়।তবে শেষ পর্যায়ে বড় মাসির শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন সবাই মিলে গীতা পাঠ করাই অংশ নিয়েছেন এবং সাধ্যমতো পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়ানোর কথা শুনে বেশ ভালো লেগেছে।
ঠিক বলেছেন আপু পিছুটান যদি না থাকে সেখানের যাওয়ার ইচ্ছেটাই আর থাকেনা। ধন্যবাদ আপু।