শেষ মানে শুরু!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আজ একজন ব্যর্থ ব্যক্তির কথা বলবো। কেউ কেউ কখনোই আলো ছড়াতে পারে না। তারা তাদের প্রতিভা একটু আড়ালে দেখাতেই হয়তো পছন্দ করে। মানুষের নজর যখন তাদের উপর পড়ে যায় তখনই তারা পিছিয়ে যেতে শুরু করে। আজ বলব তেমনই এক গল্প। বলছি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার অ্যান্টনির কথা। ব্রাজিলের আর পাঁচটা ছেলের মতোই তারও ইচ্ছা ছিল ফুটবলার হওয়ার। সে এমন একটা জায়গা থেকে উঠে এসেছে যেখানে কীনা ছেলেরা বড় হওয়ার পরেই হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। তবে অ্যান্টনির ফুটবল কে বেছে নিয়েছিল। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সাও পাওলো তে অসাধারণ পারফরম্যান্স করতে থাকেন। ইয়াং ট্যালেন্ট হিসেবে অনেকের নজরে পড়ে যান। ২০২০-২১ মৌসুমে পাড়ি জমান নেদারল্যান্ডের ক্লাব আয়াক্সে।
আয়াক্সে থাকার সময় বেশ দারুণ খেলতে থাকেন। মূলত তার স্ট্রং পয়েন্ট ছিল ড্রিবলিং এবং কার্ল শর্ট। রাইট উইং এ বেশ খেলতেন। পরবর্তীতে এরিক টেন হ্যাগ যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডর কোচ হয়ে আসেন তখন তিনি তার পুরাতন শিষ্য অ্যান্টনি কে নিয়ে আসেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। ৯৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে অ্যান্টনি কে কিনে নেয় ম্যান ইউনাইটেড। তবে ইউনাইটেডে আসার পরেই তার পারফরম্যান্স খারাপ হতে থাকে। ঠিকমতো গোল অ্যাসিস্ট পাচ্ছিলেন না। একসময় গিয়ে একাদশে আর জায়গা পেতেন না। বেশ কয়েকবার এমন হয়েছে তাকে স্কোয়ার্ডে রাখা হয় নাই। এখানেই হয়তো তার গল্পটা শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যেন পুরো গল্পটাই পাল্টে দিল। স্কোয়ার্ডে তখন আর অ্যান্টনির জায়গা হয় না।
২০২৪-২৫ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে অ্যান্টনি কে লোনে পাঠানো হয় স্প্যানিস ক্লাব রিয়াল বেটিসে। রিয়াল বেটিস খুব একটা ভালো দল ছিল না। তবে সেখানে গিয়ে নিয়মিত পারফরম্যান্স করতে থাকেন অ্যান্টনি। প্রতি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে দলকে জেতাতে থাকেন। ফলাফল রেলিগেশন জোন থেকে নিজের দলকে নিয়ে আসেন লা লীগার টপ টেনে। পাশাপাশি উয়েফা কনফারেন্স লীগের ফাইনালে নিয়ে যায় রিয়াল বেটিসকে। যদিও ফাইনালে তাদের হারতে হয়। সবমিলিয়ে বেটিসের হয়ে ২৬ ম্যাচে ৯ গোল ৫ অ্যাসিস্ট। অ্যান্টনি ততদিনে বেটিস ফ্যানদের নয়নের মনি হয়ে গিয়েছে। বেটিস ফ্যানরা অ্যান্টনি কে পুরোপুরিভাবে তাদের দলে চাই। কিন্তু তাদের অতো টাকা নেই। অন্যদিকে অ্যান্টনি নিজেও পুরোপুরিভাবে রিয়াল বেটিসে যেতে ইচ্ছুক।
পরবর্তীতে ২০২৫-২৬ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়াল বেটিসের মধ্যে সমঝোতা হয়। অল্প ট্রান্সফার ফি তে পুরোপুরি ভাবে রিয়াল বেটিসে পাড়ি জমায় অ্যান্টনি। শুধু তাই না রিয়াল বেটিসে যাওয়ার জন্য অ্যান্টনি তার বেতন পযর্ন্ত কমিয়েছে। রিয়াল বেটিসে যাওয়ার পরে অ্যান্টনির একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশ পায়। সেখানে সে কান্না করতে করতে বলে একসময় ভেবেছিল ফুটবল টা ছেড়ে দেবে। জীবনে টাকার চেয়ে সুখ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেটা সে রিয়াল বেটিসে গিয়ে বুঝতে পেরেছে। গত রাতের কথা রিয়াল বেটিস তখন ২-০ গোলে পিছিয়ে। হার মোটামুটি নিশ্চিত। তখনই অ্যান্টনি ৬৬ এবং ৯৪ মিনিটে দুইটা অসাধারণ গোল করে এবং দলকে হারের হাত থেকে বাঁচায়। অ্যান্টনি ইতিমধ্যেই বেটিস সমর্থকদের চোখের মনি হয়ে উঠেছেন। হয়তো সে বেটিসের সর্বকালের সেরা হয়েই ক্যারিয়ার শেষ করবেন। শেষ বলে হয়তো কিছু নেই। শেষ মানে নতুন কিছুর শুরু। ঠিক যেমন অ্যান্টনির সঙ্গে হয়েছে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।