অপচয় ( শেষ পর্ব )!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
এইতো এই বছরের মার্চ মাসে ঈদে বাড়িতে গেলাম। আমি এবং লিখন একদিন সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া গেলাম। আলিফও আসলো দেখা হলো কথা হলো আড্ডা হলো। ঐদিন আলিফ তার স্বপ্নের কথা বলল ঐ ও কীভাবে নেতা হবে। ওর এখন ক্ষমতা কত এই সেই আরও কত কিছু। ততদিনে আমি একেবারে সোজাসাপ্টা কথা বলার অভ্যাস করে ফেলেছি। তক্ষণাৎ আলিফের সামনে বলেছিলাম এগুলোর কোন দাম নেই। তোদের নেতারা তোদেরকে স্বপ্ন দেখিয়ে শুধুমাত্র ব্যবহার করছে এতোটুকুই। আলিফ আমার কথা হেসে উড়িয়ে দেয় এবং বলে দেখে নিস। একদিন আমি এই কুমারখালীর নেতা হবো।
তখন আমি বুঝে গেলাম ওর সেই সভাপতি বড় ভাই ওর মগজটা বেশ ভালোমতো ধোলাই করেছে। এখন
ও আর কিছুতেই ভালো মন্দ এসব বুঝবে না। কী আর করার আমি বোঝানোর চিন্তা পুরোপুরি বাদ দিলাম। ঐদিনের পরে আর আলিফের সাথে আমার কথা হয়নি দেখাও হয়নি। তবে লিখনের সাথে আলিফের যোগাযোগ ছিল। এভাবেই চলছিল দিনগুলো। কয়েকদিন আগে হঠাৎ লিখন আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে তুই ফেসবুকে কেন নেই। আমি তোকে অনেক বার নক দিয়েছি। যদিও ও অন্য কারণে নক দিয়েছিল । কথায় কথায় লিখন বলল আলিফ তো জেলে!! কথাটা শুনে আমি প্রথমে মনে করেছিলাম ও মজা করছে। সেজন্য আমি ওকে আবার জিজ্ঞেস করলাম কী বলছিস ঠিক করে বল।
লিখন এবার বেশ দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলে আলিফ জেলে। জিজ্ঞেস করলাম কীভাবে কী হয়েছে কেন হয়েছে ভেঙে বল। পরবর্তীতে লিখন বলল আলিফ ইদানিং তার সেই সভাপতি ভাইয়ের কথায় চাঁদাবাজি করতো। অর্থাৎ বিভিন্ন দোকান থেকে ব্যবসা প্রতিষ্টান থেকে চাঁদা তুলতো। যেটা এখন পুরো বাংলাদেশে চলছে আর কী। যথারীতি আলিফের সেই সভাপতি ভাই সহ বেশ কয়েকজনের নামে মহানগর থানায় মামলা হয়।
আলিফের সেই সভাপতি ভাই কোনরকমভাবে টাকা দিয়ে বেঁচে গেলেও আলিফ আর বাঁচতে পারেনি। পুলিশ ওকে গ্রেপ্তার করে। ওর পরিবারের এমন কেউ নেই যে এখন ওকে পুলিশের থেকে ছাড়িয়ে আনবে। আর আলিফের সেই সভাপতি ভাই নিজেই এখন বিপদে। আপনি বাঁচলে বাঁপের নাম অবস্থা। সুতরাং আলিফের পরিণতি এখন এটাই। প্রথমে শুনে বেশ খারাপ লেগেছিল। কিন্তু কিছু করার ক্ষমতা তো আমার ও নেই। তক্ষণাৎ মনে হলো যা হয়েছে ভালো হয়েছে। এটা হয়তো অল্পের উপর দিয়েই যাবে। আশাকরি আলিফ এখান থেকে শিখবে। নিজের ভুল বুঝতে পারবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। আর যদি এরপরেও ও না ফিরে আসে তাহলে আর কখনোই কিছু হবে না।
আমি শুধুমাত্র হতবাক হয়ে ভাবছি ক্লাস সিক্সের সেই আলিফের কথা। যেখানে ও ছিল ক্লাসের সবচাইতে মেধাবী স্টুডেন্ট। ঠিকমতো পরিচর্যা পেলে কত ভালো জায়গাই না ও যেতে পারতো। কিন্তু পারিপাশ্বিক অবস্থা সমাজ ব্যবস্থা ওকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। আর যাইহোক ওর এমন পরিণতি তো হওয়ার কথা ছিল না। প্রতিভার কী করুণ অপচয়। মানুষের এমন অপচয় দেখতেও কষ্ট হয় আফসোস হয়।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।