তবুও মনে পড়ে( তৃতীয় পর্ব )!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
অরিএ বাসায় ফিরে কলিং বেল দিতেই দরজা খুলে দেয় নিপা। কিন্তু দুজনের মধ্যে কোন কথা হয় না। অরিএ কোন কথা না বলে পাশের রুমে চলে যায়। না নিজের রুমে না। অরিএের আচরণ টা এমন মনে হয় যেন নিপা কোন অপরিচিত মানুষ। তখন রাত প্রায় সাড়ে এগারো টা। অরিএ তখনও অদিতির ফোনের অপেক্ষায়। ও জানে অদিতি ফোন করবেই। সেই আশায় ও বসে রয়েছে। অবশেষে ওর অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়। অদিতির কল আসে। ফোন রিসিভ করে শান্ত কন্ঠে অরিএ বলল
কী বাচ্চাকে ঘুমিয়ে তারপর ফোন দিলে। তোমার স্বামী কিছু বলবে না এতো রাতে অন্য একজন ছেলের সাথে কথা বলছ?
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে অদিতি বলে তোমার বউ যদি কিছু না বলে থাকতে পারে আমার স্বামীও বলবে না। চিন্তা নেই আমার কথা বলতে সমস্যা নেই। বলো এতবছর পরে হঠাৎ আবার আমার কথা মনে পড়লো?
অরিএ বলল জানি তোমাকে ফোন দেওয়া উচিত না। ঐসময় তো তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম পরিবারের বিরুদ্ধে যেতে পারিনি।
ঐসময় শুধু তুমি না আমার জীবনে তখন যে ঝামেলা টা চলছিল ঐরকম টা কোন পরিবারই মেনে নিতো না। কোন ছেলের পক্ষেও মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না সেটা। কিন্তু আমার ভাগ্য ছিল তুমি মেনে নিয়েছিলে। কিন্তু ভাগ্য আমাদের একসাথে হতে দেয়নি।
হ্যা জানি। ঐসময় আমি আমার পরিবারের কথা শুনেই সবচাইতে বড় ভুলটা করেছি অদিতি। অরিএের এমন কথায় কিছুটা অবাক হলেও সেটা প্রকাশ না করে অদিতি জিজ্ঞেস করে কী হয়েছে? তোমাদের মধ্যে কী ঝামেলা হয়েছে বা অন্য কিছু?
দেখ আমি সবকিছু তো এখন তোমাকে খুলে বলতে পারব না। তবে তুমি চাইলে আমরা একদিন দেখা করতে পারি। যদি তোমার কোন সমস্যা না থাকে।
অরিএের কথাটা শুনে কিছুটা হেসে উঠে অদিতি। এরপর বলে তুমি দেখা করতে চাও ভালো কিন্তু এরমধ্যে বার বার আমার সমস্যার কথা আসছে কেন?? আমার কোন সমস্যা নেই। এখন আমি পুরোপুরি নিজের ইচ্ছা খুশিমতো চলি।
ও জিজ্ঞেস করা হয়নি তুমি এখন কোথায় থাক? তোমার শ্বশুরবাড়িতে নাকী এবং সেটা কোথায়??
আমি ঢাকাতে সেটেল করেছি তিন বছর। অদিতির কথাটা শুনে স্বাভাবিকভাবে অরিএ মনে করে হয়তো স্বামীর সাথেই ও থাকে। ঢাকাতে আছ ঠিক আছে তাহলে চলো একদিন দেখা করি সম্ভব হবে?
হ্যা সম্ভব হবে না কেন। ঠিক আছে কবে দেখা করতে চাও বলো??
কোথায় দেখা করলে তোমার সুবিধা হয় সেটা বলো। আমার কোন সুবিধা অসুবিধা নেই তুমি ঠিক করো আমি চলে যাব।
ঠিক আছে তাহলে শুক্রবার বিকেলে টিএসসিতে দেখা করি?
ঠিক আছে আমি চলে যাব।
নিজের পড়ার ঘরে বসেই এতোক্ষণ কথা বলছিল অরিএ। নিপা এসে প্রবেশ করে ঘরে। ততক্ষণে যদিও ওদের কথা বলা শেষ হয়েছে। নিপা একেবারে সংক্ষেপে বলে খেয়ে নাও। বলে চলে যায়।
অরিএ বলে উঠে তুমি খেয়ে নাও। আমি পরে খেয়ে নেব। অরিএের এমন কথা শুনে নিপা ইদানিং অভ্যস্ত। সেজন্য খুব একটা কিছু না বলেই চলে যায় নিপা। ওদের মধ্যে এমনটা চলছে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই। অরিএ কোনদিনই নিপাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। ওরা যেন শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার জন্যই একসঙ্গে রয়েছে। এইরকম নিয়ম রক্ষা এই পৃথিবীতে এই সমাজে অনেকেই করে যাচ্ছে। যারা শুধুমাত্র পরিবার সমাজের কথা ভেবে একসঙ্গে রয়েছে । কিন্তু তাদের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই বললেই চলে। কোটি বছর অপেক্ষার পর একটা মাএ মানব জীবন পাওয়া। সেটাও যদি অন্যের কথার উপর নির্ভর করে কাটিয়ে দিতে হয় নিজের ইচ্ছাকে গোপনেই রাখতে হয়। তাহলে আর মানুষ হয়ে কেন খাঁচার পাখি হয়েই তো জন্মানো ভালো ছিল।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.