আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগ10 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। নিজ নিজ অবস্থানে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের সাথে সাথে কাংখিত অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। যদিও এটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ আজকাল সততার সাথে নিজের কাংখিত অবস্থান ধরে রাখাটা অসম্ভব একটা বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমরা চাইলেও যেমন সব কথা প্রকাশ করতে পারি না, ঠিক তেমনি আমরা চাইলেও সব সময় সব সত্য উপস্থাপন করতে পারি না। অথচ আমাদের শিক্ষা ছিলো, সদা সত্য কথা বলিবো, সৎ সঙ্গ ত্যাগ করিবো না কখনো। আদতে আমরা বাস্তব জীবনে প্রবেশ করে এর কোনটাই করতে পারি নাই।

করার চেষ্টা যে করি নাই সেটা কিন্তু না, বরং পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি আমাকে সে চেষ্টা করার সুযোগ দেয় নাই। একটু পরিস্কার করে বলছি বিষয়টি, দেখুন আপনি একটা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন, যথাসধ্য সততার সাথে দায়িত্বগুলো পালন করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তবুও আপনাকে মাঝে মাঝে হোচঁট খেতে হয়, কারণ প্রতিষ্ঠানের উপরের লেভেলে যারা আছেন তারা সততার সাথে অনেক কিছু করতে চান না। অসৎ টাইপের অনেক কাজ তারা আপনাকেও করতে বলে এবং মাঝে মাঝে সেটা করতেও বাধ্য করে। কিন্ত আপনি জেনে শুনেও সেটা অস্বীকার করতে পারেন না, সেটা করবেন না, এটাও বলতে পারেন না।

i-beg-your-pardon-3164894_1280.jpg

কারণ আপনার চাকুরী হারানোর ভয় আছে, উপরের লেভেলের মানুষদের অসন্তুষ্ট হওয়ার ভয় আছে, এখানে কিন্তু জেনেবুঝে আমরা সত্যকে গোপন করছি, জেনে বুঝেই আমরা সততাকে বিসর্জন দিচ্ছি আর অসৎ কাজটিকে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করছি। এমন অসংখ্য পরিস্থিতির মাঝে আমাদের থাকতে হয়, এমন অসংখ্য কাজও আমাদের করতে হয় সেগুলোত আমাদের মানসিকতার সাথে সংযুক্ত থাকে না, অনিচ্ছা সত্বেও আমরা সেগুলোকে করতে বাধ্য হই। বাস্তবতা সত্যি অনেক বেশী কঠিন, না চাইলেও যেমন অনেক কিছু শুনতে হয় ঠিক তেমনি না চাইলেও অনেক কিছু করতে হয়।

আবার আরো একটা বিষয় আছে এখানে, ধরুন আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে টানা ৫ বছর যাবত কাজ করছেন, প্রতিনিয়ত আপনি আপনার বসের মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা করছেন, নানা অসঙ্গতি থাকা সত্বেও আপনি সেগুলোকে মেনে নিয়ে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু একটা সময় শেষে আপনি যখন হতাশ হয়ে কিছু কিছু অসঙ্গতির প্রতিবাদ করতে যাবেন, তখন আপনার প্রতি একটা নতুন ট্যাগ সংযুক্ত হয়ে যাবে। আর সেটা হলো আপনি অকৃতজ্ঞ, সরাসরি বলবে এতোদিন যাবত তাকে এতো এতো সুবিধা দিলাম আজ যে সেটার প্রতিদান দিলো অকৃতজ্ঞ হয়ে। অথচ পুরো বিষয়টিই মিথ্যা, আপনি কাজ করেছেন, তার মন জুগিয়ে চলেছেন, তার জন্যই এতোদিন আপনা চাকুরী কিংবা সুবিধা বহাল ছিলো।

যেই আজ আপনি সেখান হতে একটু সরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ঠিক তখনই আপনাকে মানসিকভাবে অপদস্ত করার নতুন এক ব্যবস্থা করা হলো, আপনি অকৃতজ্ঞ। এটা আমাদের সমাজে খুব বেশী পরিমাণে হচ্ছে। প্রায় ১৯ বছর হয়ে গেলো আমার চাকুরীর বয়স, অনেক কিছুর স্বাক্ষী হওয়ার সুযোগ পেয়েছি আমি, অনেক ক্ষেত্রে নিজেও অনেক অপমান হজম করেছি। কারণ ঐ যে, হজম করতে না পারলেই সেখানে আমি অকৃতজ্ঞ, আমি খারাপ, আমার জাত খারাপ, আমার ধর্ম খারাপ। একটু মিলিয়ে দেখিয়েন আমি অবাস্তব কিছু বলেছি নাকি এমনটাই আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত হচ্ছে। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতায়।

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Hello @hafizullah!

What a powerfully honest and relatable post! Your reflection on the compromises we often face in our professional lives truly resonated with me. It's a difficult balance to maintain integrity when faced with pressure from above, and your articulation of that struggle is both poignant and insightful.

I especially appreciate your point about being labeled "ungrateful" when finally standing up for what's right after years of dedication. It's a harsh reality that many can relate to. Thank you for sharing your experiences and prompting us to reflect on our own.

I'm sure many others have faced similar situations. What are your thoughts on navigating these ethical dilemmas in the workplace? Let's discuss!