জীবনের গল্প || শৈশবের বৃষ্টি
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। বৃষ্টির শীতল অনুভূতির সাথে মুহুর্তগুলোও দারুণ চঞ্চল হয়ে উঠছে। যদিও গতকাল বাড়িতে ফেরার সময় বৃষ্টিতে ভিজে ফিরতে হয়েছিলো। গতকালের সকালের প্রকৃতিটা বেশ সুন্দর ও রোদ্রময় ছিলো। কিন্তু দুপুর পর হতে আকাশ কিছুটা মেঘলা হতে শুরু করে এবং অফিস ছুটির সময় যখন হয় তখন বেশ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যেহেতু সাথে ছাতা ছিলো তাই বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার অপেক্ষা না করে বের হয়ে গিয়েছিলাম ছাতা নিয়ে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশী হওয়ার কারণে কিছুটা ভিজে গিয়েছিলাশ।
এটা সত্য যে, এই সময়ের বৃষ্টির সাথে বেশ বাতাসের উপস্থিতি থাকে, যার কারণে সাধারণ ছাতায় মাথা শুকনা রাখা গেলেও শরীরকে রক্ষা করা যায় না, অর্ধেক ভিজা অর্ধেক শুকনা অনেকটাই এমন অবস্থা হয়ে যায়। কিন্তু তবুও অপেক্ষা না করেই বের হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ বৃষ্টি থামার সাথে সাথে হয়তো সবাই অফিস হতে বের হয়ে আসবে এবং তখন বাসে উঠাটা বেশ কষ্টকর ও প্রতিযোগিতাময় হয়ে উঠবে, সেই চিন্তায় দ্রুত বের হয়ে গিয়েছিলাম। তখনও অবশ্য সবাই অফিসে ছিলো। মাঝে মাঝে ভিন্ন চিন্তায় আমাদের বিপরীতমুখী অবস্থান নিতে হয়। আসল বিষয়টা হলো তাৎক্ষণিক ক্ষতিকর অনেক কিছুই পরবর্তীতে আমাদের জন্য ভালো কিছুর কারণ হয়ে থাকে।
এখন অবশ্য অনেকটাই ইতস্ততবোধ করি বৃষ্টির মাঝে যাওয়া কিংবা হাঁটার ক্ষেত্রে। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো আমাদের শৈশবটা কেমন ছিলো? বৃষ্টি দেখলেই ছুটে যেতাম ভেজার জন্য, সাথে কি আছে কিংবা কে আছে সেটা নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করার সুযোগ নিতাম না। এমন অনেক সময় হয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে বাই গাছের গোড়ায় রেখেই স্কুল ড্রেস পড়ে মাঠে দৌর দিয়েই ছুটে গিয়েছিলাম ফুটবল খেলার জন্য। তখন স্কুল কিংবা স্কুল ড্রেস অথবা বই ভিজে যাবে সেটা নিয়ে কোন চিন্তা ছিলো। কারণ তখন সময়টাই ছিলো এমন চঞ্চল এবং আগ্রহ নিয়ে কিছু করার।
ফুটবল খেলতাম যতটা সময় বৃষ্টিপাত চলতো, তারপর স্কুল স্কুলের জায়গায় থাকতো আর পড়াশুনা সেদিনের মতো বন্ধ থাকতো। কারণ তখন স্কুল না বরং বৃষ্টি উপভোগ করার বিষয়টির প্রাধান্য ছিলো বেশী। শৈশবের সময়টাই ছিলো এমন, যা মনে আসতো তাই তাৎক্ষণিকভাবে করে ফেলতাম, সেটা নিয়ে আগে পরে কিছু ভাবতাম না। কিন্তু জীবনের সেই সময়টা যখন পার হয়ে যায়, তখন আর সেই সময়টা থাকে না। কারণ শৈশবে ভয় বলে কিছু থাকে না হৃদয়ে, বরং চঞ্চলতার বিষয়টি দারুণভাবে পুরো হৃদয়জুড়ে থাকে। বৃষ্টির সেই আহবান এখনো কানে আসে কিন্তু বৃষ্টির মাঝে ছুটে যাওয়ার সেই সাহস আর ফিরে আসে না।
বাসস্ট্যান্ডে আসার সাথে সাথে বাস পেয়ে গেলাম এবং ছাতা বন্ধ করে দ্রুতই বাসে উঠে গেলাম। সীটে বসে বসে ভাবতে লাগলাম শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো, বৃষ্টি দেখলেই হৃদয়টা কতটা সাহসী হয়ে যেতো, বৃষ্টির ফুলবল খেলা কতটা আনন্দময় ছিলো, সময়ের সাথে সাথে আজ সব কিছুই অতীত হয়ে গেছে। বৃষ্টি এখনো হয়, সেই অনুভূতি এখন আর তৈরী হয় না। কারণ অনুভূতির মাঝেও বয়সের একটা ভার চলে আসছে যার কারণে শৈশবের সেই সাহসটা আর ফিরে আসতে চায় না।
Image Taken From Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||




>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.